সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: কোন সন্তানকে বেশী সম্পদ দেয়া কোন সন্তানকে কম সম্পদ দেয়া
, ২০ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
জাওয়াব: সন্তান অর্থাৎ ছেলে বা মেয়ে পিতা-মাতা উনাদের (স্থাবর-অস্থাবর) সম্পত্তিতে কে কতটুকু অংশ পাবে তা স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يُوصِيْكُمُ اللَّهُ فِيْ أَوْلَادِكُمْ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنْثَيَيْنِ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদেরকে আদেশ মুবারক করেন, তোমাদের সন্তানদের (ওয়ারিশি স্বত্ব পাওয়ার) ব্যাপারে যে, পুত্রের অংশ দুই কন্যার অংশের সমান হবে। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
কাজেই, পিতা কিংবা মাতা কারো জন্য কোন সন্তানকে অর্থাৎ ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক কাউকেই মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে নির্ধারিত অংশ থেকে সম্পদ কম দেয়া অথবা কোন সন্তানকে অর্থাৎ ছেলে হোক অথবা মেয়ে হোক কাউকেই বেশি দেয়া কখনোই জায়িয হবে না। তা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক উনার চরম খিলাফ বা বিরোধী হওয়ার কারণে হারাম ও কবীরাহ গুনাহ হবে এবং পরকালে কঠিন আযাবের সম্মুখিন হবে। (দলীলসমূহ: তাফসীরে আহকামুল কুরআন, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে দুররে মানছূর, রুহুল মায়ানী, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, শামী, আইনুল হিদায়া, দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার, এনায়া, কেফায়া, নেহায়া ইত্যাদি)
সুওয়াল: সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে কোন পিতা-মাতা যদি কোন সন্তানকে বেশি দেয়ার ওছীয়ত করে যায় সেক্ষেত্রে উক্ত ওছীয়ত কি পুর্ণ করা যাবে? জানতে বাসনা রাখি।
জাওয়াব: সাধারণত কেউ কাউকে ওসীয়ত করলে তা পূরণের ক্ষেত্রে কোন রকম শরঈ বাধা-নিষেধ না থাকলে, যাকে বা যাদেরকে ওসীয়ত করা হয়েছে তাদের জন্য ওসীয়তকারীর ওসীয়ত পূরণ করাটা ওয়াজিব। কিন্তু ওছীয়তকারীর ওছীয়ত যদি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার খিলাফ বা বিরোধী হয় তাহলে সে ওছীয়ত কখনোই পূরণ বা পালন করা যাবে না। সেটা পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী যে কারোরই ওছীয়ত হোক না কেন।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَوَصَّيْنَا الْإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حُسْنًا وَّإِنْ جَاهَدَاكَ لِتُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا
অর্থ: “আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সৎব্যবহার করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছি। কিন্তু যদি তারা তোমাকে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করার কোশেশ করে, যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তবে তাদের কথা মান্য করো না। ” (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ الْخَالِقِ
অর্থ: “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী বা হুকুম অমান্য করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা জায়িয নেই। ” (বুখারী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
প্রতিভাত হলো, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের বিপরীত কারো কোন আদেশ, ওছীয়ত মান্য করা, পালন বা পূরণ করা জায়িয নেই।
কাজেই, পিতা-মাতার কোন সন্তানকে সম্পদ বেশি দেয়ার ওছীয়ত করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সুস্পষ্ট বিরোধী। তাই উক্ত ওছীয়ত কখনোই পূর্ণ করা যাবে না। উক্ত অবৈধ ওছীয়ত পুরা করলে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকেই কবীরা গুনাহে গুনাহগার হবে। এবং পরকালেও কঠিন আযাবের সম্মুখিন হবে। (দলীলসমূহ: তাফসীরে আহকামুল কুরআন, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে দুররে মানছূর, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, শামী, আইনুল হিদায়া, বাহরুর রায়িক, দুররুল মুখতার, রদ্দুল মুহতার, এনায়া, কেফায়া, নেহায়া ইত্যাদি)
সুওয়াল: যদি পিতা-মাতা ছেলে-মেয়েদেরকে বাড়ী করার জন্য জমি দেয়; সামনের জমির দাম বেশি হওয়ার কারণে প্রত্যেকেই সেটা নিতে চায়। এখন বড় ছেলে সংসার দেখাশুনা করার কারণে বড় ছেলেই কি সামনের জমির হক্বদার হবে? নাকি অন্যান্যরাও হক্বদার হবে?
জাওয়াব: উক্ত সামনের জমির হক্বদার শুধু বড় ছেলে হবে তা নয়। বরং পিতা-মাতার যতজন সন্তান বা ওয়ারিছ রয়েছে প্রত্যেকেই উক্ত সামনের জমির সমান হক্বদার হবে।
উক্ত সামনের জমিতে সকলের বাড়ী করা সম্ভব নয় সেহেতু উক্ত সামনের জমি বড় ছেলেকে বাড়ী করার জন্য দেয়া যাবে এই শর্তে যে, উক্ত সামনের জমির যে দাম তা হিসাব করে অন্য জমির দামের সাথে মিলিয়ে যে পরিমাণ দাম বা টাকা বেশি হবে সে পরিমাণ টাকা অথবা টাকার অনুপাতে জমি অন্য ছেলে-মেয়ে ও ওয়ারিছদেরকে দিয়ে দিলে জায়িয হবে। (দলীলসমূহ: তাফসীরে আহকামুল কুরআন, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে দুররে মানছূর, বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, শামী, আইনুল হিদায়া, বাহরুর রায়িক, ফতহুল ক্বাদির, দুরুরল মুখতার, রদ্দুল মুহতার, বেনায়া, এনায়া, কেফায়া, নেহায়া ইত্যাদি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৫)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৪)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)