প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি নজর দিন- রেমিটেন্সের পরিমাণ হবে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্সেই দেশের বাজেট করা যাবে।
, ০৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম
কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রায় এক দশমাংশ বসবাস করে বিদেশে, নিরন্তর সংগ্রাম করে, বেঁচে থাকার সংগ্রাম, প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ। এরা প্রবাসী কর্মী। প্রতিবছর এই সাধারণ প্রবাসীরা তাদের অর্জনের সঞ্চয় পাঠায় দেশে, প্রায় ২১শ’ ২২ বিলিয়ন ইউএস ডলার, নিজেদের জন্য, দেশের জন্য। অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার সর্ববৃহৎ অবদান এই রেমিট্যান্স।
চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম মাস জুলাইয়ের ২৮ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৭৪ কোটি ৯২ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সে হিসাবে দৈনিক গড়ে দেশে এসেছে ছয় কোটি ২৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
সদ্য বিদায়ি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ১৬১ কোটি ছয় লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার।
প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স আমাদের দেশে মূল্যবান হলেও প্রবাসী শ্রমিকরা বরাবরই মূল্যহীন। এরা আমাদের কাছে শুধুই শ্রমিক হিসেবে গণ্য। প্রতিবছর লাখো কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে প্রবাসীরা। অথচ তাদের কোন মূল্য নেই আমাদের দেশে। কোন শ্রমিক বিদেশে মারা গেলে কোম্পানির খরচে দেশে পাঠানো হলেও স্টুডেন্ট বা ভিজিট ভিসায় গমনকারীদের চাঁদা তুলেই দেশে আনার ব্যবস্থা করতে হয়।
বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর বিষয়ে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালাল প্রথা পরিহার করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভাব্য নতুন বাজার খুঁজতে গবেষণার পাশাপাশি শ্রমিকদেরও দক্ষতা সৃষ্টিতে আধুনিক মানের পর্যাপ্ত ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া শ্রমিকদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য দূতাবাসগুলোতে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করা হলে, তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়েই ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ধনী আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব।
শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি বা স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা, প্রবাসীদের মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আভিবাসনের দুর্বলতাকে চিহ্নিত করে তার সমাধান করা এবং দূতাবাসগুলোতে অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ করে শ্রমিকদের তাৎক্ষণিক সমস্যার সমাধান করা গেলে শ্রমিকদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ দাঁড়াবে বছরে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তথা তিন লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। যা দেশের বর্তমান বাজেটের চেয়েও বেশি।
উল্লেখ্য, জনগণ আমাদের বড় শক্তি। তাদের সম্পদে পরিণত করতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে হবে। এজন্য এই খাতে বিশেষ গবেষণার প্রয়োজন। কোন দেশে কেমন দক্ষতার শ্রমিক লাগবে এবং তা কখন লাগবে? সেগুলো বুঝে কাজে লাগাতে হবে। যারা একেবারেই শ্রমিক, তাদের প্রাইমারি এডুকেশন অন্তত ভালো করে দিতে পারলেই বিশ্বের বাজারে আমাদের মান উজ্জ্বল হবে। শ্রমিকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে তাদের সব কাজে সহযোগিতা করতে পারলেই এ সেক্টরকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব। এ বিষয়টির গুরুত্ব দিতে হবে। শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কম টাকায় যাতে বেশি শ্রমিক পাঠানো যায় সেক্ষেত্রে বায়রার অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে মিডিয়ারও একটি বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
আমাদের মাটির নিচে তেল, গ্যাস ও কয়লা রয়েছে। এক সময় এগুলো শেষ হয়ে যেতে পারে। তবে আমাদের মানবসম্পদ শেষ হবে না। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স আসতেই থাকবে। পর্যায়ক্রমে তা আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ এগিয়েছে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য। ইন্ডিয়ান দূতাবাস তাদের শ্রমিকদের জন্য দাঁড়িয়ে যায়। ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানীরা অপরাধ করলেও তাদের দোষ ঢেকে বাংলাদেশিদের অপরাধ ফলাও করে প্রচার করে ইমেজ ক্ষুণœ করা হয়। আমাদের দূতাবাস সেভাবে কাজ করে না। সঙ্গতকারণেই আমাদের দূতাবাসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
কিন্তু আমাদের সরকার হƒদয়হীন। শ্রমিকদের সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয় তা অকল্পনীয়। তারা কঠোর শ্রম দিয়ে দেশকে চাকচিক্য করছে। আর যারা পাঠাচ্ছে তাদের আমরা আদম ব্যাপারি বলে অপমান করি।
আমাদের শ্রমিকরাই প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। তাদের কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরও উচিত তাদের প্রতি উত্তম ব্যবহার ও সব কাজে সহযোগিতা করা। এ সেক্টরে অনেক সমস্যা আছে থাকবে- তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করার জন্য মন্ত্রণালয় ও বায়রা মিলে যৌথভাবে কাজ করা দরকার।
বর্তমানে প্রবাসে বৈধ, অবৈধ, দক্ষ, অদক্ষ শিক্ষিত, অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত কি পরিমাণ লোক কাজ করছেন তার সঠিক হিসাব সরকারসহ কারও কাছে নেই। তবে ৯০ লাখ থেকে ২ কোটি পর্যন্ত হতে পারে। এ সমস্ত প্রবাসীদের মধ্যে যারা অদক্ষ ও কম শিক্ষিত তারাই সবচেয়ে বেশি রেসিটেন্স পাঠান। অথচ আমরা অদক্ষদের তেমন গুরুত্ব দেই না। তাদের গুরুত্ব দেয়া উচিত। সরকারের উচিত অদক্ষ, স্বল্পশিক্ষিত ও স্বল্পআয়ের শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এবং তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছুর পরিপূর্ণ পৃষ্ঠপোষকতা করা।
মূলত, সব সমস্যা সমাধানে চাই সদিচ্ছা ও সততা। এই সততা ও সদিচ্ছা আসে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অনন্তকালব্যাপী পালন করার ইলম, চেতনা ও জজবা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)