ইলমে তাছাওউফ
প্রত্যেক উম্মতকে শরীয়ত এবং তাছাওউফ দেয়া হয়েছে
, ২৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৬ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২২ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) ইলমে তাছাউফ
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বলেছেন-
لِكُلٍّ جَعَلْنَا مِنكُمْ شِرْعَةً وَمِنْهَاجًا
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককেই শরীয়ত এবং ত্বরিকত অর্থাৎ তাছাওউফ দিয়েছি। (পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)
এ আয়াত শরীফে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রত্যেক উম্মতকে বা প্রত্যেক সম্প্রদায়কে বুঝিয়েছেন যে, হযরত আবুল বাশার আদম আলাইহিস সালাম উনার থেকে শুরু করে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পর্যন্ত বর্ণনা করা হয়েছে যে, প্রত্যেক নবী এবং রসূল উনাদের প্রত্যেক উম্মতকে আমি শরীয়ত এবং তাছাওউফ দিয়েছি। ইলমুত তাছাওউফ যেটা রয়েছে, ত্বরীকত অর্থাৎ ইলমুল মা’রিফাত যেটা মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত, মুহব্বত সেটা একইভাবে রয়েছে। আর যেটা শরীয়ত সেটা অবস্থাভেদে পরিবর্তন হয়েছে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানায় এসে একটা স্থিতিশীলতা এসেছে। অর্থাৎ একই অবস্থায় ক্বিয়ামত পর্যন্ত চলতেই থাকবে এই শরীয়ত। কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা শরীফ ও ক্বিয়াস শরীফ। কাজেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনিই সেটা বলেছেন, প্রত্যেকের জন্যই আমি দিয়েছি শরীয়ত এবং ত্বরীকত তথা তাছাওউফ। এটার ব্যাখ্যায় হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
مَنْ تَفَقَّهَ وَلَمْ يَتَصَوَّفْ فَقَدْ تفَسَّقَ. وَمَنْ تَصَوَّفَ وَلَمْ يَتَفَقَّهْ فَقَدْ تَزَنْدَقَ. وَمَنْ جَمَعَ بَيْنَهُمَا فَقَدْ تَحَقَّقَ.
হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ফিক্বাহ শিখলো তাছাওউফ শিখলো না, সে হচ্ছে ফাসিক। সে একটা গুনাহগার। আর যে ব্যক্তি বলে আমি তাছাওউফ করি মা’রিফাত করে থাকি শরীয়তকে গুরুত্ব দেয় না, সে একটা যিন্দিক কাফির। আর যে দুটাকে জমা করলো সে হচ্ছে মুহাক্কিক। সে হক্কানী রব্বানী আল্লাহওয়ালা।
এর ব্যাখ্যায় হযরত গাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাধারণত মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে লোক হচ্ছে চার প্রকার। মানুষ হচ্ছে সাধারণভাবে চার প্রকার। প্রথম প্রকার হচ্ছে যাদের যাহিরও নেই বাতিনও নেই, যাদের যাহিরও পরিশুদ্ধ নয়, বাতিনও পরিশুদ্ধ নয় এরা বরবাদ। তবে যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি এদের প্রতি রহমত বরকত নাযিল করেন হয়তো তারা নাজাত পেতে পারে। দ্বিতীয় প্রকার বলা হয়েছে, যাদের যাহির রয়েছে, বাতিন নেই, এরাও বরবাদ। যেহেতু তাদের বাতিন বা অন্তর বিশুদ্ধ নয়। এদেরকেও যদি মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমত করেন, বরকত নাযিল করেন, তাহলে তারা হয়তো নাজাত পেতে পারে। তৃতীয় প্রকার বলা হয়েছে, যাদের যাহির নেই বাতিন রয়েছে, এরাও নাকিছ, অপূর্ণ। আর চতুর্থ প্রকার বলা হয়েছে, যাদের যাহির রয়েছে, বাতিনও রয়েছে,উনারাই হক্কানী, উনারাই নায়িবে নবী ওয়ারাছাতুল আম্বিয়া। হযরত গাউছুল আ’যম সাইয়্যিদুল আউলিয়া বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মানুষকে চার প্রকারে ভাগ করেছেন। এরা হচ্ছে ঈমানদারদের মধ্যে। ঈমানদারদের মধ্যে চার প্রকার ভাগ করা হয়েছে। এরপরও প্রকার রয়েছে। যাহিরও নেই বাতিনও নেই কিন্তু তার ঈমানও না থাকে তাহলে অবশ্যই সে ধ্বংস বা হালাক। আর যার যাহির রয়েছে বাতিন নেই, সে ফাসিক। আশংকা রয়েছে তার। আর তৃতীয়ত বলা হয়েছে যার বাতিন রয়েছে, যাহির নেই। এখন যদি সে ঈমানদার হয়, তাহলে সে নাকিছ। সে পূর্ণতায় পৌঁছতে পারে কোশেশ করলে। আর যদি তার ঈমান না থেকে থাকে, তাছাওউফ দাবি করে থাকে সে যিন্দিক, সে কাফির, সে বরবাদ। আর যার যাহির বাতিন উভয়টাই রয়েছে, তার জন্য কামিয়াবী। এর ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যার যাহিরও নেই, বাতিনও নেই, যদি সে ঈমানদার না হয়, তাহলে তার এক হুকুম, আর যদি ঈমানদার হয়, তাহলে তার আরেক হুকুম।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র ছোহবত মুবারক গ্রহণের ফাযায়িল-ফযীলত, গুরুত্ব-তাৎপর্য ও আবশ্যকতা
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
যামানার মূল নায়িবে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত ব্যতীত খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক রাখার দাবি বাতুলতার নামান্তর
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাযকিয়াহ বা ইছলাহ অর্জন করা ব্যতীত কোনো বান্দার পক্ষে কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব নয়
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুর্শিদ বা শায়েখ হক্ব বা নাহক্ব তা যাচাই-বাছাই করার পর বাইয়াত হতে হবে
০৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত মুর্শিদ বা শায়েখ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়ার ক্ষেত্রে সন্তানের জন্য পিতা-মাতা উনাদের এবং স্ত্রীর জন্য স্বামীর বাধা গ্রহণযোগ্য নয়
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
তাসাউফ চর্চা ছাড়া দ্বীন ইসলাম কায়েম সম্ভব না (১)
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩১)
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পিতা-মাতা জীবিত থাকতেই মুর্শিদ বা শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত হওয়া উচিত
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)