পাগড়ীর উপর অথবা শুধু টুপির উপর সাদা রুমাল পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক-২
, ১৬ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০১ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিইয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় সাদা রুমাল মুবারক পরিধান করতেন। কাজেই পুরুষের জন্য সাদা রুমাল পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক। সুতরাং সম্মানিত সুন্নতী রুমাল মুবারক উনার রং হবে সাদা।
পুরুষের জন্য লাল কাপড় পরিধান করা হারাম। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পুরুষের জন্য লাল কাপড় পরিধান করাটা পছন্দ মুবারক করতেন না। কাজেই পুরুষদের জন্য লাল রংয়ের রুমাল, পাগড়ী, জামা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান করা জায়িয নেই।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو رضى الله تعالى عنه قَالَ: مَرَّ رَجُلٌ وَعَلَيْهِ ثَوْبَانِ أَحْمَرَانِ فَسَلَّمَ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد
অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দু’টি লাল কাপড় পরিহিত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় উনাকে সালাম দেন। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ ব্যক্তির সালামের জাওয়াব মুবারক দেননি। (তিরমিযী শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ)
এরূপ আরো অনেক বর্ণনা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে। যার উপর ভিত্তি করে হানাফী মাযহাবের সকল ইমাম-মুজতাহিদ এবং হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ফতওয়া দিয়েছেন যে, “পুরুষের জন্য লাল কাপড় পরিধান করা জায়িয নেই। সম্পূর্ণ লাল হলে হারাম, অধিকাংশ লাল হলে মাকরূহ তাহ্রীমী। আর কম অংশ লাল হলে মাকরূহ তানযীহী। আর এটাই হচ্ছে হানাফী মাযহাবের মুখতার বা গ্রহণযোগ্য ফতওয়া। (মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, ফতহুল মুলহিম, নাইলুল আওতার, মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-১৫৩-১৬০তম সংখ্যা)
তবে শাফিয়ী বা অন্যান্য মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক পরিধান করা জায়িয রয়েছে। আর এটা স্মরণীয় যে, হানাফী মাযহাবের অনুসারীগণের জন্য শাফিয়ী বা অন্য কোন মাযহাবের (মাসয়ালার উপর) আমল করা জায়িয নেই। এ ব্যাপারে উম্মতের ইজমা বা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (তাফসীরে আহমদী-৩৪৬, র্দুরুল মুখতার-১/৬)
মহাসম্মানিত সুন্নতী রুমাল দিয়ে পাগড়ী বাঁধার আহকাম-
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রহমাতুল্লিল আলামীন, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, রুমাল দিয়ে পাগড়ীর মত বাঁধলে পাগড়ীর মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক আদায় হবে না। বরং তা হবে স্পষ্ট বিদয়াত। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত তাবে-তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম এবং কোন ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা কেউই রুমাল দ্বারা পাগড়ী বাঁধেননি। পরবর্তীতে কিছু লোক তাদের জিহালতী ও গোমরাহীর কারণে রুমাল দ্বারা পাগড়ীর মত করে বাঁধার প্রচলন করেছে। যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য এবং সুস্পষ্ট বিদয়াত। এ ক্ষেত্রে কারণ গুলো হচ্ছে;
১. দৈর্ঘ্যে তারতম্য: পাগড়ীর দৈর্ঘ্য হচ্ছে তিন হাত, সাত হাত এবং বার হাত। কিন্তু রুমাল দ্বারা পাগড়ী বাঁধলে এ দৈর্ঘ্যরে পরিমাপ থাকে না।
২. প্রস্থের তারতম্য: পাগড়ীর প্রস্থ হচ্ছে অর্ধ হাত, এক হাত, দেড় হাত, দুই হাত। আর রুমালে তা থাকে না।
৩. তাছাড়া উছূল রয়েছে-
وضع الشىء فى محله عدل ووضع الشىء فى غير محله ظلم
অর্থঃ “যে জিনিস যে জন্য তৈরী হয়েছে তা সে কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ইনছাফ বা আদব। আর তার বিপরীত ব্যবহার করা জুলুম বা অন্যায়।”
৪. রুমাল দ্বারা পাগড়ী বাঁধার কারণে রুমাল পরিধান করার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক তরক হয়।
৫. রুমাল দ্বারা পাগড়ী বাঁধার দ্বারা পাগড়ী পরিধানের মত দায়িমী ও গুরুত্বপূর্ণ মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার বিলুপ্তি ঘটে।
কাজেই যাদের দ্বারা এই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার বিলুপ্তি ঘটবে তারা সবাই বিদয়াতীদের কাতারে শামিল হবে। আর বিদয়াত জারী করার কারণে তারা কঠিন গুনাহে গুনাহগার হবে।
-মুহম্মদ হুসাইন নাফে
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী ফল “আঙ্গুর”
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বেমেছাল উপকারিতা সমৃদ্ধ মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার “কিছ্ছা”
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সকল ধরণের সুন্নতী খাবার
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কিয়ামত পর্যন্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন হবে না
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী “টুপি
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত মুহব্বত মুবারক হাছিল করতে হলে অবশ্যই মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করতে হবে
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী ফল ‘ডুমুর’
৩১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র নামায উনার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারকসমূহ
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘তালবীনা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে প্রবেশ করার-বের হওয়ার ও অবস্থান করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মেশ্ক মিশ্রিত সুন্নতী ইসমিদ সুরমা
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)