পাকিস্তানের লাহোরে ঐতিহাসিক বাদশাহী মসজিদ
, ১৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ০২ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৮ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) স্থাপত্য নিদর্শন
মসজিদের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর ১৬৭৩ খৃ: থেকে ১৯৮৬ খৃ: সময়কাল পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ ৩১৩ (তিনশত তের) বছর এটিই ছিল আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মসজিদ। উল্লেখিত সময়ের পর কিছু সম্প্রসারণ ও নতুন মসজিদ নির্মিত হয় এবং বাদশাহী মসজিদ আয়তনের দিক থেকে ক্রমানুসারে ৫ম স্থানে চলে আসে। পাকিস্তান ঐতিহাসিক তাজমহলের মিনারের চেয়েও চৌদ্দ ফিট বেশী উঁচু বাদশাহী মসজিদ। মসজিদের মিনার রয়েছে ৪ টি। আর আভ্যন্তরিন আঙ্গিনার বিচারে এখনও বাদশাহী মসজিদ বিশ্বের সর্ববৃহৎ আঙ্গিনা বিশিষ্ট মসজিদ। ১৬৭১ খৃ: মে মাসে শাসক আওরঙ্গজেব আলমঙ্গীর রহমতুল্লাহি আলাইহি এক বাদশাহী ফরমানের মাধ্যমে এই বিশাল মসজিদ নির্মাণ শুরু করেন এবং দুই বছরে এই মসজিদের নির্মাণ সমাপ্ত করেন। ১৬৭৩ খৃ: এর এপ্রিলে তা মুসল্লীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। মূল নামায ঘরের মুসাল্লা বা ফোর 'সাঙ্গে আলভী' নামক অতি মূল্যবান শ্বেত মার্বেল পাথর দ্বারা নির্মিত।
লাল রংয়ের সান্ডষ্টোন ও সাদা মার্বেলে পুরো মসজিদ নির্মাণ করা হয় মোঘল শাসক আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি বাদশাহী মসজিদ নির্মাণে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন। শুধুমাত্র এই মসজিদের নির্মাণ কাজ তত্ত্বাবধানের জন্য বাদশাহ আলমগীর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বৈমাত্রেয় ভাই মুযাফ্ফর হোসাইন ফিদায়ী খানকে ১৬৭১ খৃ: থেকে ১৬৭৫ খৃ: পর্যন্ত লাহোরের গভর্ণর করে পাঠান। যিনি মসজিদ নির্মাণের প্রতিটি পর্বে আওরঙ্গজেব রমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে অবহিত করতেন ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা নিতেন। অর্থাৎ শাসক আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার একান্ত নিজস্ব তত্ত্বাবধানে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে।
আর বাদশাহী মসজিদের নয়নাভিরাম কারুকার্য ও অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী দেখলেও এটা প্রতীয়মান হয় যে, রাজকীয় রুচিবোধ ও বিপুল আর্থিক সামর্থ্য ব্যতীত এমন অপূর্ব ও বিশাল স্থাপত্য নির্মাণ সম্ভব নয়। আর তাই বাদশাহী বা রাজকীয় মসজিদ নামটিও যে এ মসজিদের বেলায় যথার্থ হয়েছে তা যে কোন সমঝদার এটি পরিদর্শন করলেই হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম হবেন। এই মসজিদ নির্মাণের পরপরই শাসক আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি মসজিদের বিপরীত দিকে এক বিশাল কেল্লা নির্মাণ করেন, যা লাহোরের শাহী কেল্লা নামে সমধিক পরিচিত। কেল্লা থেকে মসজিদে প্রবেশের জন্য যে রাস্তা ও রাজকীয় তোরণ নির্মাণ করা হয়, তা আলমগীরী গেট বা তোরণ হিসেবে পরিচিত। চলবে ইনশাআল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন: স্পেনের কুরতুবা বা কর্ডোবা মসজিদ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যার এক মাথা বাংলাদেশে অপর মাথা ত্রিপুরার আগরতলায়!
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
গৌরবের স্মারক: হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক মসজিদ
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৯)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)