পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার বর্ণনা মতে ঐতিহাসিক গাযওয়াতুল হুদায়বিয়াহ:
, ২৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০২ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আইন ও জিহাদ
গত পর্বের পর---
قَالَ حضرت الزُّهْرِيِّ قَالَ حضرت عُمَرُ عليه السلام فَعَمِلْتُ لِذَلِكَ أَعْمَالاً. قَالَ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْ قَضِيَّةِ الْكِتَابِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لأَصْحَابِهِ " قُومُوا فَانْحَرُوا، ثُمَّ احْلِقُوا ". قَالَ فَوَاللَّهِ مَا قَامَ مِنْهُمْ رَجُلٌ حَتَّى قَالَ ذَلِكَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ، فَلَمَّا لَمْ يَقُمْ مِنْهُمْ أَحَدٌ دَخَلَ عَلَى حضرت أم المؤمنين السادسة أُمِّ سَلَمَةَ عليها السلام، فَذَكَرَ لَهَا مَا لَقِيَ مِنَ النَّاسِ. فَقَالَتْ حضرت أم المؤمنين السادسة عليها السلام يَا نَبِيَّ اللَّهِ، أَتُحِبُّ ذَلِكَ اخْرُجْ ثُمَّ لاَ تُكَلِّمْ أَحَدًا مِنْهُمْ كَلِمَةً حَتَّى تَنْحَرَ بُدْنَكَ، وَتَدْعُوَ حَالِقَكَ فَيَحْلِقَكَ. فَخَرَجَ فَلَمْ يُكَلِّمْ أَحَدًا مِنْهُمْ، حَتَّى فَعَلَ ذَلِكَ نَحَرَ بُدْنَهُ، وَدَعَا حَالِقَهُ فَحَلَقَهُ. فَلَمَّا رَأَوْا ذَلِكَ، قَامُوا فَنَحَرُوا، وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يَحْلِقُ بَعْضًا، حَتَّى كَادَ بَعْضُهُمْ يَقْتُلُ بَعْضًا غَمًّا، ثُمَّ جَاءَهُ نِسْوَةٌ مُؤْمِنَاتٌ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى (يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا جَاءَكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ) حَتَّى بَلَغَ (بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ) فَطَلَّقَ عُمَرُ عليه السلام يَوْمَئِذٍ امْرَأَتَيْنِ كَانَتَا لَهُ فِي الشِّرْكِ، فَتَزَوَّجَ إِحْدَاهُمَا مُعَاوِيَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ، وَالأُخْرَى صَفْوَانُ بْنُ أُمَيَّةَ،
হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম বলেছিলেন, আমি এর জন্য (অর্থাৎ এ প্রশ্ন করার কাফফারাস্বরূপ) অনেক নেক আমল করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, সন্ধিপত্র লেখা শেষ হলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমভাবে ঘোষণা করে দেন, লোকেরা যেন হুদায়বিয়ায় নিজ নিজ আনিত পশুগুলি কুরবানী করে দেয় এবং হলক্ব করে নেয়। পর পর তিন বার তিনি ঘোষণা দেন, কিন্তু ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের মধ্যে নির্দেশ পালনের কোন লক্ষণ দেখা গেল না। (সবাই অপেক্ষা করতে লাগলেন, কখন তিনি নিজেই কুরবানী ও হলক্ব করবেন) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ ব্যাপারে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে পরামর্শ করলেন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপর অসন্তুষ্ট হবেন না। আপনি কাউকে কিছু না বলে বাইরে গিয়ে নিজের কুরবানী করুন এবং পবিত্র নূরুল হুদা মুবারক (মাথা মুবারকের) নূরুল ফাতাহ মুবারক (চুল মুবারক) মুন্ডন করুন এবং ইহরামের কাপড় খুলে ফেলুন। উনার পরামর্শ অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাই করলেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুসরণ করে সকলেই তৎক্ষণাৎ নিজ নিজ কুরবানী করে ইহরামের কাপড় খুলে ফেললেন। অবস্থা এমন হল যে, ভীড়ের কারণে একে অপরের উপর পড়তে লাগলেন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে কয়েকজন সম্মানিত মুসলিম মহিলা এলেন।
তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا جَاءكُمُ الْمُؤْمِنَاتُ مُهَاجِرَاتٍ فَامْتَحِنُوهُنَّ اللهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِهِنَّ فَإِنْ عَلِمْتُمُوهُنَّ مُؤْمِنَاتٍ فَلَا تَرْجِعُوهُنَّ إِلَى الْكُفَّارِ لَا هُنَّ حِلٌّ لَّهُمْ وَلَا هُمْ يَحِلُّونَ لَهُنَّ وَآتُوهُم مَّا أَنفَقُوا وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ أَن تَنكِحُوهُنَّ إِذَا آتَيْتُمُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ وَلَا تُمْسِكُوا بِعِصَمِ الْكَوَافِرِ وَاسْأَلُوا مَا أَنفَقْتُمْ وَلْيَسْأَلُوا مَا أَنفَقُوا ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ وَاللهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
অর্থ: হে মু’মিনগণ! যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা করো। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জানো যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠাবে না। তারা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা এই মহিলাদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছো, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম; তিনি তোমাদের মধ্যে ফায়সালা করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। (পবিত্র সূরা মুমতাহিনাহ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ- ৬০)
সেদিন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনার দু’জন আহলিয়াকে তালাক দিয়ে দিলেন, তারা ছিলেন মুশরিক থাকাকালে উনার আহলিয়া। তাদের একজনকে হযরত মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং অপরজনকে হযরত সাফওয়ান ইবনু উমাইয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বিবাহ করেন।
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৮)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৬)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৭)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৫)
০৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৬)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৪)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
২৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (২)
২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (১)
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (১০)
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার সনদ (৩)
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)