পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষ দশকে সম্মানিত ই’তিকাফ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
, ১৯ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩১ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
اِعْتِكَاف (ই’তিকাফ) অর্থ হলো স্থির থাকা, অবস্থান করা, গুনাহ হতে বেঁচে থাকা, নিরিবিলি অবস্থান করা, নিজেকে কোন স্থানে আবদ্ধ রাখা, কোণায় অবস্থান করা ইত্যাদি। সম্মানিত শরীয়ত উনার পরিভাষায় মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল উনার উদ্দেশ্যে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষ ১০ দিন (অর্থাৎ ২০ তারিখ বাদ আছর বা মাগরিবের পূর্ব হতে শুরু করে পবিত্র শাওওয়াল শরীফ মাস উনার চাঁদ দেখা পর্যন্ত) দুনিয়াবী যাবতীয় কার্যকলাপ ও পরিবার-পরিজন হতে ভিন্ন হয়ে আলাদাভাবে পুরুষের জন্য পবিত্র জামে মসজিদে ও মহিলাদের জন্য নিজ ঘরে আলাদা কামরায় পবিত্র ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকাকে সম্মানিত ই’তিকাফ বলে। যিনি সম্মানিত ই’তিকাফ করেন উনাকে মু’তাকিফ বলা হয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের জন্য ও আমাদের পূর্ববর্তীদের জন্য সম্মানিত ই’তিকাফ উনার মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَعَهِدْنَا اِلٰى اِبْرَاهِيْمَ وَاِسْمَاعِيْلَ اَنْ طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِيْنَ وَالْعَاكِفِيْنَ وَالرُّكَّعِ السُّجُوْدِ .
অর্থ: আর আমি সাইয়্যিদুনা হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের প্রতি মহাসম্মানিত ওহী মুবারক করেছিলাম “আমার মহাসম্মানিত ঘর মুবারক তওয়াফকারীদের জন্য, সম্মানিত ই’তিকাফকারীদের জন্য ও পবিত্র রুকূ-সিজদাহকারীদের জন্য পবিত্র রাখুন (এবং রাখতে বলুন।)” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ: ১২৫)
সম্মানিত ই’তিকাফ উনার প্রকারভেদ:
সম্মানিত ই’তিকাফ তিন প্রকার (১) সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া (২) ওয়াজিব (৩) নফল।
এক. সম্মানিত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ কিফায়া ই’তিকাফ : পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার শেষ দশক উনার সম্মানিত ই’তিকাফ। অর্থাৎ পবিত্র ২০শে রমাদ্বান শরীফ উনার সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত থেকে পবিত্র শাওওয়াল শরীফ মাস উনার চাঁদ ওঠা পর্যন্ত পবিত্র জামে মসজিদে ই’তিকাফ বা অবস্থান করা হয়- এ প্রকারের সম্মানিত ই’তিকাফকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ কিফায়া বলা হয়। উল্লেখ্য, প্রত্যেক জামে মসজিদে গ্রাম বা মহল্লাবাসীর পক্ষ হতে এক বা একাধিক ব্যক্তি এই সম্মানিত ই’তিকাফ করলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু মহল্লার একজন ব্যক্তিও যদি উক্ত মহল্লার জামে মসজিদে সম্মানিত ই’তিকাফ না করে, তাহলে মহল্লার সবাই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ কিফায়া তরকের গুণাহে গুণাহগার হবে। অর্থাৎ ওয়াজিব তরকের গুনাহে গুনাহগার হবে। (ফতওয়ায়ে আলমগীরী, বাহরুর রায়িক, দুররুল মুখতার ইত্যাদি)
দুই. সম্মানিত ওয়াজিব ই’তিকাফ : মান্নতের সম্মানিত ই’তিকাফ ওয়াজিব। যেমন কেউ বলল যে, আমার অমুক কাজ সমাধান হলে আমি এতদিন সম্মানিত ই’তিকাফ করব অথবা কোনো কাজের শর্ত উল্লেখ না করেই বলল, আমি একদিন বা দুই দিন অবশ্যই সম্মানিত ই’তিকাফ করব। যতদিন শর্ত করা হবে ততদিন সম্মানিত ই’তিকাফ করা ওয়াজিব। উল্লেখ্য, সম্মানিত ওয়াজিব ই’তিকাফ উনার জন্য পবিত্র রোযা রাখা শর্ত।
তিন. সম্মানিত নফল ই’তিকাফ : সাধারণভাবে যেকোনো সময় ই’তিকাফ করাকে সম্মানিত নফল ই’তিকাফ বলে। এর জন্য কোনো দিন কিংবা সময় নির্ধারিত নেই। অল্প সময়ের জন্যও সম্মানিত ই’তিকাফ করা যেতে পারে। এ জন্য পবিত্র মসজিদে প্রবেশের পূর্বে সম্মানিত ই’তিকাফ উনার নিয়ত করে প্রবেশ করা উত্তম।
উল্লেখ্য, যারা বলে থাকে, পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার শেষে এক দিন, তিন দিন বা সাত দিন সম্মানিত ই’তিকাফ করলেই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ কিফায়া সম্মানিত ই’তিকাফ আদায় হয়ে যায়- তাদের এ কথা শুদ্ধ নয়। এক দিন, তিন দিন, পাঁচ দিন এবং সাত দিন সম্মানিত ই’তিকাফ করলে সুন্নতে মুয়ক্কাদাহ্ কিফায়া সম্মানিত ই’তিকাফ আদায় হবে না। অর্থাৎ পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস ৩০ দিনে হলে শেষ ১০ দিন, কিংবা ২৯ দিনে হলে শেষ ৯ দিন পবিত্র মসজিদে অবস্থান বা সম্মানিত ই’তিকাফ করতে হবে- এর চেয়ে এক মিনিট কম হলেও সম্মানিত সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ কিফায়া ই’তিকাফ আদায় হবে না।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)