পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারকসমূহ-৪
, ০৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৮ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ بُرَيْدَةَ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لَا يَخْرُجُ يَوْمَ الْفِطْرِ حَتّٰى يَطْعَمَ وَكَانَ لَا يَأْكُلُ يَوْمَ النَّحْرِ شَيْئًا حَتَّى يَذْبَحَ فَيَأْكُلُ اَضْحِيَّتَه).مسند احمد(
অর্থ : হযরত বুরায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদুল ফিতরে না খেয়ে বের হতেন না অর্থাৎ খেয়ে বের হতেন। আর ঈদুল আদ্বহার সময় কোনো কিছু খেতেন না যতক্ষণ পর্যন্ত যবেহ না করতেন। অতঃপর কুরবানীকৃত গোশত দিয়ে আহার মুবারক করতেন।” (মুসনাদে আহমাদ শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ الثَّالِثَةَ الصديقة عَلَيْهَا السَّلَامُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أمَرَ بِكَبْشٍ أَمْرُنَ يَطَأُ فِي سَوَادٍ وَ يَبْرُكُ فِي سَوَادٍ وَ يَنْظُرُ فِي سَوَادٍ فاتي به ليُضحي به فقال لها يا أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ الصديقة عَلَيْهَا السَّلامُ هَلمي المدية. ثمَّ قَالَ اشْحَذِيْهَا بِحَجْرٍ فَفَعَلْتُ ثُمَّ أخذَهَا وأخذ الكيش فَاضْجَعه ثُمَّ ذَبَحَهُ ثُمَّ قَالَ بِاسْمِ اللهِ اللَّهُ تَقَبَّلْ مِن سيدنا مُحمَّد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ و آل سيدنا محمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ من امة سيدنا محمد صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثم ضحى به.
অর্থ : সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এমন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা আনার জন্য আদেশ মুবারক করলেন, যেটা কালোতে হাঁটে, কালোতে শয়ন করে এবং কালোতে দেখে অর্থাৎ যার পা কালো, পেট কালো এবং চোখ কালো। অতঃপর এমন একটি কালো দুম্বা কুরবানী করার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আনা হলো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মুল মু‘মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে বললেন, হে হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম! আপনি আমার নিকট একটি বড় ছুরি নিয়ে আসুন। এরপর বললেন, এই ছুরিটিকে পাথরের মধ্যে ধার দিন। তখন আমি তাই করলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছুরিটি নিলেন এবং দুম্বাটিকে ধরে কাত করে শোয়ালেন। তারপর এটাকে যবেহ করার সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বললেন। অত:পর বললেন, আয় মহান আল্লাহ পাক! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে, উনার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের তরফ থেকে এবং উম্মতে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তরফ থেকে কবুল করুন। অতঃপর তিনি এই কুরবানীর পশুর গোশত দ্বারা লোকদেরকে সকালের নাস্তা করালেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
উল্লেখিত উভয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী স্পষ্টত প্রতীয়মান হয় যে, পবিত্র ঈদুল আযহার দিনে সকাল সকাল কুরবানী করা এবং কুরবানীকৃত পশুর গোশত রান্না করে তা দিয়ে ইফতার করা এবং করানো খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
ঈদের দিনের মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
وَالشَّفْعُ يَوْمُ النَّحْرِ.
জোড় হচ্ছে ইয়াওমুন নহর অর্থাৎ ঈদুল আদ্বহা উনার দিন। এই দিনের শ্রেষ্ঠ মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল মুবারক হলো পবিত্র কুরবানী করা। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
أَفْضَلُ الْعِبَادَاتِ يَوْمَ الْعِيْدِ إِرَاقَةُ دَمِ الْقُرْبَاتِ.
অর্থ : ঈদের দিন কুরবানীর পশুর রক্ত প্রবাহিত করা অর্থাৎ কুরবানী করা শ্রেষ্ঠ ইবাদত।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي سَعِيدِ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ضَحَى بِكَبْرٍ أَقْرَنَ وَقَالَ هَذَا عَنِّى وَعَمَّنْ لَّمْ يُضَحَ مِنْ أُمَّتِي.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শিং বিশিষ্ট একটি দুম্বা সম্মানিত কুরবানী মুবারক করেন এবং বলেন, এটা আমার পক্ষ থেকে এবং আমার যে সমস্ত উম্মত সম্মানিত কুরবানী মুবারক করতে পারেনি তাদের পক্ষ থেকে।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
কাজেই, পবিত্র কুরবানী ঈদের দিনের শ্রেষ্ঠ সুন্নতী আমল হলো পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। অর্থাৎ পবিত্র কুরবানী করা।
(অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ ইমরান হুসাইন শাহী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)