পবিত্র মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বিরোধীদের পিছনে নামায আদায় করার হুকুম
, ০৪ রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ০২ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বিরোধী ইমামের পিছনে কোন নামাযই হবে না। তা পাঞ্জেগানা হোক কিংবা জুমুআ ও ঈদের নামায হোক।
সাধারণভাবে পাঁচওয়াক্ত ও জুমুআর নামায জামায়াতে পড়ার জন্য পুরুষরা মসজিদে গিয়ে পড়ে থাকেন। এক্ষেত্রে যিনি মসজিদের ইমাম থাকবেন উনার আক্বীদা ও আমল উভয়ই অবশ্যই শুদ্ধ হতে হবে। অর্থাৎ আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী হতে হবে। আর সম্মানিত শরীয়ত ও সুন্নত মুবারক অনুযায়ী আমলের অনুসারী হতে হবে।
যে ব্যক্তির আক্বীদা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের অনুযায়ী হবেনা, সে ঈমানদার নয়। অথচ ইমাম হওয়ার জন্য প্রথম শর্ত হলো ঈমান-আক্বীদা শুদ্ধ থাকা।
অতঃপর ইমাম হওয়ার জন্য দ্বিতীয় শর্ত হচ্ছে, ইমাম ফাসিক না হওয়া। অর্থাৎ যে ব্যক্তির আমল সম্মানিত শরীয়ত ও সম্মানিত সুন্নত উনার খিলাফ সে ফাসিক। সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া হচ্ছে, ফাসিকের পিছনে নামায পড়লে উক্ত নামায দোহরানো ওয়াজিব।
বলার অপেক্ষা রাখে না, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনার উদ্দেশ্যেই মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ করা হয়। কাজেই, মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ উনার বিরোধিতা মানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারই বিরোধিতা করা। নাউযুবিল্লাহ! যা কাট্টা কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। কেননা যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন এবং উনার ছানা-ছিফত মুবারক করার জন্য বান্দা-বান্দীদেরকেও আদেশ মুবারক করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى النَّبِيِّ يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوا تَسْلِيمًا.
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা ছলাত পাঠ করেন বা ছানা-ছিফত মুবারক করেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে। হে ঈমানদারগণ! উনার শান মুবারকে আপনারাও ছলাত পাঠ করুন বা ছানা-ছিফত মুবারক করুন এবং যথাযথ সম্মানে সালাম পেশ করুন অর্থাৎ দাঁড়িয়ে আদবের সাথে সালাম প্রদান করুন। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
অপর এক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তোমরা খিদমত মুবারক করো এবং উনাকে তোমরা সম্মান মুবারক করো এবং উনার তোমরা ছানা ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ সর্বদা বা দায়িমীভাবে। (পবিত্র সূরা ফাত্হ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)
কাজেই, যেসব খতীব ও ইমাম পবিত্র মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ উনার বিরোধিতা করে থাকে, মু’মিন-মুসলমান ও মুছল্লীদের অধিকার বলে হক্ব প্রতিষ্ঠা ও নাহক্ব বা অন্যায়ের প্রতিবাদে প্রথমে উক্ত ইমাম-খতীবকেই বলতে হবে যে, পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার বিরুদ্ধে বলা থেকে বিরত থাকতে হবে। তারপরও যদি বিরুদ্ধে বলে, তখন তাদের কাছে দলীল চাইতে হবে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার কোন্ আয়াত শরীফ কিংবা কোন্ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়াকে নিষেধ করা হয়েছে। তারা কখনোই পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের থেকে কোন দলীল দেখাতে সক্ষম হবে না।
কেউ দলীল দেখালেও বুঝতে হবে দলীলের নামে তারা মনগড়া বা অপব্যাখ্যা করেছে। কেননা এমন কোন পবিত্র আয়াত শরীফ কিংবা এমন কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ নেই, যেখানে পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বরং পবিত্র মীলাদ শরীফ পড়ার পক্ষেই বহু আয়াত শরীফ ও বহু হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র মীলাদ শরীফ বিরোধী ইমাম-খতীবকে বলার পরও তারা যদি সংশোধন না হয় তাহলে মসজিদের মুতাওয়াল্লী, সভাপতি, সেক্রেটারী ও সদস্যদেরকে বুঝিয়ে ইমাম-খতীবকে বাদ দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, কমিশনারের সহযোগিতা নিয়ে পবিত্র মীলাদ শরীফ-ক্বিয়াম শরীফ বিরোধী ইমাম-খতীবকে অপসারণের জন্য আপ্রাণ কোশেশ করতে হবে। যথাসাধ্য চেষ্টা-কোশেশ করার পরও যদি উক্ত ইমাম-খতীবদেরকে সরানো না যায় তাহলে মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ পক্ষের লোকজনকে নিয়ে আলাদ মসজিদ তৈরি করে সেখানে জামায়াতে নামায পড়ার ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। তাৎক্ষনিকভাবে মসজিদ তৈরী করা সম্ভব না হলে কোশেশ অব্যাহত রেখে পার্শ্ববর্তী অথবা দূরবর্তী কোন মসজিদে গিয়ে জুমুআর নামায আদায় করে আসতে হবে, যে মসজিদের খতীব পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেন বা পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ সমর্থন করেন। তথাপি পবিত্র মীলাদ শরীফ ও ক্বিয়াম শরীফ বিরোধী ইমাম-খতীবের পিছনে নামায পড়া জায়িয হবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)