পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার আহকাম (১১)
পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত
, ১১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৩ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৩ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ২০ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র রোযা ফরয হওয়ার শর্তাবলী
পবিত্র রোযা ফরয হওয়ার জন্য নি¤œবর্ণিত শর্তগুলো থাকা আবশ্যক-
১. মুসলমান হওয়া।
২. বালিগ হওয়া।
৩. জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া।
৪. সুস্থ হওয়া।
৫. মুক্বীম হওয়া। অর্থাৎ মুসাফির না হওয়া। কেননা মুসাফিরের জন্য পবিত্র রোযা রাখার বাধ্যবাধকতা থাকেনা। তবে মুক্বীম হওয়ার পর অবশ্যই তা ক্বাযা আদায় করতে হবে।
যাদের উপর রোযা ফরয নয়
১. মুসাফিরের জন্য পবিত্র রোযা আদায় করা ফরয নয়। তবে আদায় করাই উত্তম। যদি মুসাফির অবস্থায় আদায় না করে তবে মুক্বীম হওয়ার পর অবশ্যই ক্বাযা আদায় করতে হবে।
২. অসুস্থ ব্যক্তির উপর পবিত্র রোযা আদায় করা ফরয নয়। তবে সুস্থ হলে ক্বাযা আদায় করতে হবে।
৩. মহিলাদের মাসিক স্বাভাবিক মাজুরতা, সন্তান হওয়ার কারণে মাজুরতার সময় তাদের উপর পবিত্র রোযা ফরয নয়, উক্ত সময়ে রোযা রাখা জায়িয নয়। তবে উভয় মাজুরতা থেকে পবিত্র হলে ক্বাযা আদায় করতে হবে।
বি. দ্র. বালিগ না হলেও ছোট ছেলে-মেয়ে যারা পবিত্র রোযা রাখতে পারবে তাদেরকে রোযা রাখিয়ে অভ্যাস করানো পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য।
যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না
১. ভুলক্রমে কোন কিছু পানাহার করলে। অতঃপর শেষ সময় পর্যন্ত পানাহার না করলে।
২. ভুলক্রমে নির্জনবাস করলে।
৩. রোযারত অবস্থায় দিনে ঘুমালে এবং ঘুমের মধ্যে গোসল ফরয হলে।
৪. আহলিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করার কারণে গোসল ফরয হওয়ার মতো কোন কিছু নির্গত হলে।
৫. শরীরে তেল মালিশ করলে।
৬. শিঙ্গা লাগালে যদিও রক্ত বা পুঁজ বের হয়।
৭. চোখে সুরমা বা ওষুধ দিলে। উল্লেখ্য, ওষুধের স্বাদ গলায় অনুভূত হলে বা সুরমার রঙ থুথুর সাথে দেখা গেলেও রোযা ভঙ্গ হবে না।
৮. আহলিয়াকে বুছা দিলে।
৯. অনিচ্ছাকৃত বমি করলে।
১০. রোযাদারের গলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে ধোঁয়া গেলে।
১১. মুখে থুথু এলে বারবার না ফেলে গিলে ফেললে।
১২. রোযারত অবস্থায় নখ ও চুল কাটলে।
১৩. রোযাদার ব্যক্তি স্বপ্নে কিছু খেলে বা পান করলে।
১৪. রাস্তায় চলাচলের সময় গাড়ির ধোঁয়া, রান্না করার সময় রান্নার ধোঁয়া নাকে প্রবেশ করলে মাজূর বা অক্ষমতার কারণে রোযা ভঙ্গ হবে না।
১৫. রোযারত অবস্থায় সন্তানকে দুধ খাওয়ালে মায়ের রোযা ভঙ্গ হবে না। এমনকি ওযূও ভঙ্গ হবে না।
যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় এবং শুধু ক্বাযা ওয়াজিব হয়
১. ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে।
২. আহলিয়াকে বুছা বা স্পর্শ করার কারণে গোসল ফরয হওয়ার মতো কোন কিছু নির্গত হলে।
৩. কোন অখাদ্য বস্তু তথা পাথর, লোহার টুকরো, ফলের আঁটি ইত্যাদি গিলে ফেললে।
৪. স্বাভাবিক স্থান ব্যতীত অন্যস্থানে মেলামেশায় গোসল ফরয হওয়ার মতো কোন কিছু নির্গত হলে।
৫. জোরপূর্বক সম্মানিত রোযাদারকে কিছু খাওয়ানো হলে।
৬. ভুলক্রমে কিছু খেতে আরম্ভ করে রোযা ভঙ্গ হয়েছে মনে করে পুনরায় আহার করলে।
৭. কুলি করার সময় পেটে পানি চলে গেলে।
৮. প্রস্রাব -পায়খানার রাস্তায় ওষুধ বা অন্য কিছু প্রবেশ করালে।
৯. রাত মনে করে ছুবহি ছাদিক্বের পর পানাহার করলে।
১০. সন্ধ্যা মনে করে সূর্যাস্তের পূর্বেই ইফতার করলে।
১১. মুখে বমি এনে পুনরায় তা পেটে প্রবেশ করালে।
১২. দাঁতের ফাঁক থেকে খাদ্য কণা (ছোলা বুট পরিমাণ) বের করে খেয়ে ফেললে।
১৩. শরীরের কোন ক্ষতস্থানে ওষুধ লাগানোর ফলে তা ভেতরে প্রবেশ করলে।
১৪. নাকে বা কানে তেল বা তেলবাহিত ওষুধ প্রবেশ করালে।
১৫. আগরবাতি, কয়েল, বিড়ি-সিগারেট-এর ধোঁয়া ইচ্ছাকৃতভাবে নাকে প্রবেশ করালে।
১৬. রোযা রেখে পেস্ট, কয়লা, পাউডার, ছাই ইত্যাদি যে কোন প্রকার মাজন দ্বারা দাঁত মাজা মাকরূহ। এগুলোর সামান্য অংশও যদি গলায় প্রবেশ করে তাহলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এছাড়া সর্বাবস্থায় গুল ব্যবহার করা হারাম। কারণ গুল মাদকদ্রব্যের অন্তর্ভুক্ত।
১৭. রাত্রি বাকি আছে মনে করে ছুবহি ছাদিক্বের পর পানাহার করলে বা নির্জনবাস করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যাবে। এসব ক্ষেত্রে শুধু ক্বাযা ওয়াজিব হবে। কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
(সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খেলাধুলা নাজায়িয ও হারাম হওয়া সম্পর্কে সম্মানিত ইসলামী শরীয়তের ফায়সালা
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মানুষকে আমলের প্রতি নিরুৎসাহিত করতেই পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে মওজু-জয়ীফ ইত্যাদি অপপ্রচার করছে বাতিল ফিরক্বারা
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩০)
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মাজার শরীফে হামলাকারী বেয়াদব ও লানতপ্রাপ্ত
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -৪
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আইনী কার্যক্রম
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৬)
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)