পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ উনার ফাযায়িল-ফযীলত (১৬)
, ০৮ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২০ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত পড়ার দলীল
(গতকালের পর)
মূলত এ পবিত্র হাদীছ শরীফ হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামাযের বর্ণনা, তারাবীহ নামাযের বর্ণনা নয়। কারণ তারাবীহ নামায শুধুমাত্র পবিত্র রমাদ্বান শরীফ উনার জন্যই নির্দিষ্ট। পবিত্র রমাদ্বান শরীফ ব্যতীত অন্যান্য মাসে তারাবীহ নামায নেই। আর তাহাজ্জুদের নামায সারা বছরই পড়তে হয়।
অতএব, “তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত”- এ ব্যাপারে বহু ছহীহ পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে।
যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يصلى فى رمضان عشرين ركعة سوى الوتر.
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশ রাকাআত তারাবীহ নামায পড়তেন বিতর নামায ব্যতীত। অর্থাৎ তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত এবং বিতর তিন রাকাআত। (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت على عَلَيْهِ السَّلَامَ و حضرت عمر عَلَيْهِ السَّلَامَ وغيرهما من اصحاب النبى صلى الله عليه وسلم عشرين ركعة.
অর্থ : সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং অন্যান্য ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে বর্ণিত রয়েছে, তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত। (তিরমিযী শরীফ)
روى البيهقى باسناد صحيح كانوا يقيمون على عهد حضرت عمر عليه السلام عشرين ركعة وعلى عهد حضرت عثمان عَلَيْهِ السَّلَامَ و حضرت على عَلَيْهِ السَّلَامَ.
অর্থ : হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ সনদে বর্ণনা করেন যে, “খুলাফায়ে রাশিদীন অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনারা সকলেই বিশ রাকাআত (তারাবীহ) নামায আদায় করেছেন।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت يزيد بن رومان رحمة الله عليه انه قال كان الناس يقومون فى زمان حضرت عمر بن الخطاب عليه السلام فى رمضان بثلث وعشرين ركعة.
অর্থ : হযরত ইয়াযীদ ইবনে রূমান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই তারাবীহ ও বিতর নামাযসহ মোট তেইশ রাকাআত নামায আদায় করতেন। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০ ও ১৭৫তম সংখ্যাগুলো পাঠ করুন। সেখানে ৩০৪ খানা অকাট্য ও নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে ছাবিত করা হয়েছে যে, পবিত্র তারাবীহ নামায বিশ রাকাআত পড়াই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ এবং এটাই গ্রহণযোগ্য ও ছহীহ মত।
পবিত্র ছলাতুত তারাবীহ উনার নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلٰوةِ التَّرَاوِيْحِ سُنَّةُ رَسُوْلِ اللهِ تَعَالٰى مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللهُ اَكْبَرُ.
উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন উছল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রকআতাই ছলাতিত তারাবীহ সুন্নাতু রসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ : আমি ক্বিবলামুখী হয়ে দু’রাকাআত তারাবীহ সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ নামাযের নিয়ত করছি। আল্লাহু আকবার।
পবিত্র তারাবীহ নামায উনার মধ্যে দু’রাকাআত পর পর দুআ
পবিত্র তারাবীহ নামায উনার দু’রাকাআত পর পর নিম্নোক্ত দুআ পড়তে হয়-
هٰذَا مِنْ فَضْلِ رَبِّىْ يَا كَرِيْمَ الْمَعْرُوْفِ يَا قَدِيْمَ الإِحْسَانِ اَحْسِنْ اِلَيْنَا بِإِحْسَانِكَ الْقَدِيْمِ ثَبِّتْ قُلُوْبَنَا عَلٰى دِيْنِكَ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ.
উচ্চারণ : হা-যা মিং ফাদ্বলি রব্বী ইয়া কারীমাল মা’রূফ, ইয়া ক্বদীমাল ইহসান, আহসিন ইলাইনা বি ইহসানিকাল ক্বদীম। ছাব্বিত ক্বুলূবানা আলা দীনিকা বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
পবিত্র তারাবীহ নামায উনার মধ্যে চার রাকাআত পর পর দুআ
পবিত্র তারাবীহ নামায উনার মধ্যে চার রাকাআত পর পর নি¤েœাক্ত দুআ পড়তে হয়-
سُبْحَانَ ذِى الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوْتِ سُبْحَانَ ذِى الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَىِّ الَّذِىْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنَا وَرَبُّ الْمَلَائِكَةِ وَالرُّوْحِ.
উচ্চারণ : সুব্হানাযিল মুলকি ওয়াল মালাকূতি সুবহানাযিল ইঝঝাতি ওয়াল আযমাতি ওয়াল হাইবাতি ওয়াল ক্বুদরতি ওয়াল কিবরিয়ায়ি ওয়াল জাবারূত। সুব্হানাল মালিকিল হাইয়িল্লাযী লা-ইয়ানামু ওয়ালা ইয়ামূতু আবাদান আবাদা। সুব্বূহুন ক্বুদ্দূছুর রব্বুনা ওয়া রব্বুল মালা-য়িকাতি ওয়ার রূহ্।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)