পবিত্র নামায উনার মাসয়ালা-মাসায়িল
, ০৬ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৯ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র ছলাত বা নামায উনার ফযীলত ও গুরুত্ব
ক্বাযা নামায উনার বর্ণনা
সম্মানিত শরীয়ত অনুযায়ী প্রত্যেক ফরয ও ওয়াজিব নামায উনার জন্য সময় নির্দিষ্ট আছে। সেই নির্দিষ্ট সময়ে নামায আদায় না করে পরে সেই নামায আদায় করাকে ক্বাযা নামায বলা হয়। বিশেষ কোন কারণ ব্যতীত ফরয বা ওয়াজিব নামায নির্দিষ্ট সময়ে আদায় না করা কবীরা গুণাহ।
অতএব, ইচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে বা নিদ্রা যাওয়ার কারণে যদি কোন ফরয বা ওয়াজিব নামায ছুটে যায় তবে স্মরণ হওয়া মাত্রই বা সময় পাওয়া মাত্রই তা আদায় করে নিতে হবে এবং যথাসময় আদায় না করার কারণে যে গুণাহ্ হয়েছে তা ক্ষমা লাভের জন্য বারংবার তওবা করতে হবে। কোন ফরয বা ওয়াজিব নামায ছুটে গেলে তার ক্বাযা আদায় না করে পরবর্তী ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করলে তা আদায় হবে না।
ক্বাযা নামায উনার প্রকারভেদ
ক্বাযা নামায দু’প্রকার :
১. ক্বাযায়ে আদা ও ২. ক্বাযায়ে উমরী।
১. ক্বাযায়ে আদা : ক্বাযায়ে আদা বলে এমন নামাযকে যে নামায ক্বাযা থাকা সম্বন্ধে নামাযী ব্যক্তির কোন সন্দেহ নেই। অর্থাৎ তার ক্বাযা নামায বাকী রয়েছে। সন্দেহ ব্যতীত যে ক্বাযা নামায পড়া হয় তাকেই ক্বাযায়ে আদা বলে।
২. ক্বাযায়ে উমরী : উমরী ক্বাযা বলে এমন ক্বাযা নামাযকে, যে নামায ক্বাযা থাকা সম্বন্ধে নামাযী ব্যক্তির সন্দেহ রয়েছে অর্থাৎ তার ক্বাযা নামায বাকী আছে কিনা? এ সন্দেহের কারণে যে ক্বাযা নামায পড়া হয়, তাকে উমরী ক্বাযা বলে।
ক্বাযায়ে আদা আবার দু’প্রকার :
১. ছাহিবে তরতীব অর্থাৎ যে সমস্ত ক্বাযা নামায উনার ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয়।
২. গইরে ছাহিবে তরতীব অর্থাৎ যে সমস্ত ক্বাযা নামায উনার ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয়না।
প্রথমতঃ যে সমস্ত ক্বাযা নামায উনার ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয়। এর হুকুম হলো- নামায যদি পাঁচ ওয়াক্ত বা তার চেয়ে কম ক্বাযা হয়, তাহলে তরতীব অনুযায়ী ক্বাযা আদায় করে তারপর ওয়াক্তিয়া নামায পড়তে হবে। যেমন কারো যদি ফজর, যুহর, আছর, মাগরিব, ইশা নামায ক্বাযা হয়, তাহলে পরবর্তী ফজর নামায আদায়ের পূর্বে উক্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামায পর্যায়ক্রমে ক্বাযা আদায় করে তারপর ফজর নামায পড়তে হবে, অন্যথায় ফজর নামায আদায় হবে না।
দ্বিতীয়তঃ যে সমস্ত ক্বাযা নামায উনার ক্ষেত্রে তরতীব রক্ষা করতে হয় না। যেমন, যদি ফজর থেকে ফজর পর্যন্ত ৬ (ছয়) ওয়াক্ত বা তদুর্ধ্ব নামায ক্বাযা হয়, তাহলে পরবর্তী যুহর পড়ার সময় ক্বাযা নামায উনার তরতীব রক্ষা না করলেও চলবে। বরং ক্বাযা নামায সুযোগ সুবিধা অনুযায়ী হারাম ওয়াক্ত বাদে যে কোন সময় আদায় করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। তবে তরতীবওয়ালা নামায উনার ক্ষেত্রে ক্বাযা আদায় করতে গেলে যদি ওয়াক্তিয়া নামায উনার সময় কম থাকার কারণে ওয়াক্তিয়া নামায ফউত হওয়ার আশঙ্কা হয়, তাহলে তরতীব রক্ষা না করে বরং ওয়াক্তিয়া নামায পড়ে নিতে হবে। যেমন কারো মাগরিব ও ইশা নামায ক্বাযা হয়ে গেছে এবং ফজর ওয়াক্তে এমন সময় ঘুম থেকে উঠেছে- সূর্য উদয় হতে ৫/৭ মিনিট বাকী, এখন উযূ করে যদি ক্বাযা নামায আদায় করতে যায় তাহলে আর ফজর উনার ফরয নামায পড়া যায়না, এমতাবস্থায় তরতীব রক্ষা করার প্রয়োজন নেই। বরং ফজর নামায পড়ে নিতে হবে।
স্মরণযোগ্য যে, তরতীব তিন কারণে ভঙ্গ হয়-
১. পাঁচ ওয়াক্তের বেশি ক্বাযা থাকলে,
২. নামায উনার ওয়াক্ত কম থাকলে,
৩. তরতীবের কথা ভুলে গেলে।
ছাহিবে তরতীব ক্বাযা নামায ছেড়ে ওয়াক্তিয়া নামায আদায় করলে সেই ওয়াক্তিয়া নামায পুনরায় দোহরায়ে আদায় করতে হবে। না দোহরালে তাও ক্বাযা নামায উনার মধ্যে শামিল হয়ে যাবে।
নাবালেগ ছেলে মেয়ে যদি ইশা উনার নামায আদায় না করে ঘুমিয়ে পড়ে, নিদ্রা ত্যাগ করার পর বালেগ হওয়ার কোন আলামত প্রকাশ হলে তাদের ইশা ও বিতির নামায ক্বাযা আদায় করতে হবে।
ভুলক্রমে ইশা উনার ফরয নামায যদি কেউ উযূবিহীন অবস্থায় আদায় করে, সুন্নত ও বিতির আদায় করে উযূ করা অবস্থায়, তবে ইশা উনার ফরযের সাথে সুন্নত ও বিতিরও পুনরায় আদায় করতে হবে।
ক্বাযা নামায উনার নিয়তে “ছলাতি ফাওতিল ফাজরি বা উমরী ক্বাযা যুহরি” ইত্যাদি শব্দ সংযুক্ত করতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)