পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১০)
, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করা হারাম:
মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা নিসা শরীফ’ উনার ৪৮নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ومن يشرك بالله فقد افترى اثما عظيما.
অর্থ: “যে ব্যক্তি কোনো ব্যক্তি বা বস্তুকে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করেছে, সে ব্যক্তি মহা পাপ করেছে। ”
শিরক শুধু মহাপাপই নয়; বরং সুস্পষ্ট গোমরাহী বা পথভ্রষ্টতা। অর্থাৎ যে ব্যক্তি শিরক করলো সে প্রকাশ্য গোমরাহ্ বা পথভ্রষ্ট।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা নিসা শরীফ’ ১১৬নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّـهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا
অর্থ: “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করে, সে ব্যক্তি প্রকাশ্য গোমরাহে গোমরাহ্। ”
অনুরূপভাবে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অসংখ্য স্থানে ‘শিরক’-এর ভয়াবহ পরিণাম বর্ণনা করা হয়েছে এবং ‘শিরক’ থেকে বেঁচে থাকার জন্য বান্দাদেরকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়; সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মতদেরকে ‘শিরক’ থেকে বেঁচে থাকার জন্য কঠোরভাবে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন।
যেমন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عن حضرت جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ثنتان موجبتان قال رجل يارسول الله ماالموجبتان؟ قال من مات يشرك بالله شيئا دخل النار ومن مات لا يشرك بالله شيأ دخل الجنة.
অর্থ: “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দুটি বিষয় ওয়াজিব হয়ে গেল। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা জিজ্ঞাসা করলেন- কি ওয়াজিব হলো? ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক বা শরীক করে মৃত্যুবরণ করলো, সে ব্যক্তি জাহান্নামী। নাউযুবিল্লাহ! আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক বা শরীক না করে মৃত্যুবরণ করলো সে ব্যক্তি জান্নাতী। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, শরহে নববী, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীক্বুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরআতুল মানাজীহ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত মুয়ায বিন জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে বলেন-
لا تشرك بالله وان قتلت او حركت.
অর্থ: “হে মুয়ায বিন্ জাবাল! আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কখনো কাউকে শরীক করোনা, যদিও আপনাকে হত্যা করা হয় অথবা জালিয়ে দেয়া হয়। ” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফাত্হুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ইরশাদুস্সারী, তাইসীরুল ক্বারী, শরহে নববী, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তালীক্বুছ্ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরআতুল মানাজীহ্)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من صلى برائى فقد اشرك ومن صام برائى فقد اشرك ومن تصدق برائى فقد اشرك
অর্থ: “যে ব্যক্তি লোকদেখানো উদ্যেশ্যে নামায আদায় করলো, রোযা পালন করলো এবং দান ছদক্বা করলো, সে ব্যক্তি অবশ্যই শিরক করলো। ”
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اخوف ما اخاف عليكم الشرك الاصغر فسئل عنه فقال الرياء
অর্থ: “আমি তোমাদের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়ে ভীত, তা হচ্ছে- শিরকে আছগর। তিনি শিরকে আছগর সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হয়ে জবাবে বললেন, শিরকে আছগর হচ্ছে ‘রিয়া’ বা লোক দেখানো আমল। ”
শিরক সম্পর্কিত উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার (সাথে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুসমূহকে) শরীক করবে সে ব্যক্তি ঈমানহারা হয়ে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। মৃত্যুর পূর্বে শিরক থেকে খালিছ তওবা না করলে চিরজাহান্নামী হবে। তাই ক্বওলী এবং ফে’লী সব ধরনের শিরক থেকেই বেঁচে থাকা প্রত্যেকের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু ইহুদী ও মুশরিকরা
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গোল্ডেন রাইস (১)
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৩)
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ব্যবসা করা হালাল ও সুন্নত আর সুদ হারাম
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)