পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (৯)
, ১৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ০৭ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আপনাদের মতামত
মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করা হারাম:
শিরক আরবী শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে সমান মনে করা, সমকক্ষ মনে করা, অংশীদার স্থাপন করা।
খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করা বা কাউকে সমকক্ষ মনে করাকে শিরক বলে।
যেমন: মূর্তিপূজা করা, গাছ-পালার পূজা করা, পাথরের পূজা করা, কাউকে সিজদা দেয়া ইত্যাদি।
শিরক সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বহু স্থানে কঠোরভাবে সাবধান করা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ’ উনার ৭২নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
انه من يشرك بالله فقد حرم الله عليه الجنة ومأوه النار وما لظالمين من انصار
অর্থ: “বস্তুত যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করে, মহান আল্লাহ পাক তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। আর তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। মূলত, যালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ’ উনার ৩১নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ومن يشرك بالله فكانما خر من السماء فتخطفه الطير او تهوى به السريح فى مكان سحيق
অর্থ: “আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করে তার অবস্থা হলো- সে যেন আসমান থেকে পড়ে গেল, অমনি পাখি তাকে ছো মেরে নিয়ে গেল অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে নিয়ে কোন দূরবর্তী স্থানে ফেলে দিল।”
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা যুমার শরীফ’ উনার ৬৫নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
অর্থ: “(আয় হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিশ্চয়ই আমি আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তী (হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম) উনাদের প্রতি ওহী মুবারক করেছি, যদি (আপনার উম্মত এবং আপনার পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উম্মতরা) শরীক করে, তবে তাদের আমলসমূহ অবশ্যই নষ্ট হয়ে যাবে। আর অবশ্যই তারা হবে ক্ষতিগ্রস্তের অন্তর্ভুক্ত।”
মূলত, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও অন্যান্য হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়নি, বরং উনাদের উম্মতদেরকে লক্ষ্য করেই একথা বলা হয়েছে। কারণ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পক্ষে শিরক করা শুধু অসম্ভবই নয়; বরং তা অকল্পনীয়ও বটে। বস্তুত শিরক যে কঠিন গুনাহ তাহাই উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারা বুঝানো হয়েছে। তাই মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
ولو اشركوا لحبط عنهم ماكانوا يعملون.
অর্থ: “যদি তারা (বান্দারা) মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করে, তবে তারা যা আমল করেছে তা সবই বরবাদ হয়ে যাবে।” (পবিত্র সূরা আন্য়াম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা কাহাফ শরীফ’ উনার ১১০নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
فمن كان يرجوا لقاء ربه فليعمل عملا صالحا ولايشرك بعبادة ربه احدا.
অর্থ: “যে ব্যক্তি তার রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুলাক্বাত লাভে আগ্রহী তার উচিত নেক কাজ করা এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে কাউকে শরীক না করা।
শিরক ক্ষমার অযোগ্য গুনাহ যতক্ষণ পর্যন্ত খালিছ তওবা না করবে, যেমন এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ্ শরীফ উনার ‘পবিত্র সূরা নিসা শরীফ’ উনার ৪৮নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
ان الله لايغفر ان يشرك به ويغفر مادون ذالك لمن يشاء.
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করার গুনাহ ক্ষমা করবেন না। এছাড়া অন্যান্য গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।”
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ স্টাইলের শাসকগোষ্ঠী দিয়ে উন্নয়ন নয়, লুটপাটই হবে
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানরা তাদের সন্তানদের কি শেখাচ্ছে, কি শেখানো উচিত? (২)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)