পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -৬
, ২৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ০২ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৭ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
প্রসঙ্গ: গইরুল্লাহর মুহতাজ হওয়া হারাম।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে- “রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, একদিন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাওয়ারির পিছনে বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করলেন- হে প্রিয় বৎস! মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ নিষেধসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলবেন, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনিই আপনাকে হিফাযত (সংরক্ষণ) করবেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব আদায় করবেন, তাহলে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সবসময় সামনে পাবেন। যখন কোনোকিছুর প্রয়োজন দেখা দেবে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার নিকটেই চাইবেন। যখন কারো সাহায্যের প্রয়োজন পড়বে, তখন মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই সাহায্য চাইবেন। জেনে রাখুন! যদি পৃথিবীর সমস্ত মাখলূক্বাত একত্রিত হয়ে আপনার কোনো উপকার করতে চায়, তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত পরিমাণ ব্যতীত আপনার কোনো উপকার করতে পারবে না। পক্ষান্তরে যদি সকল মাখলূক্বাত সম্মিলিতভাবে আপনার কোনো ক্ষতিসাধন করতে চায়, তাহলেও মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারিত পরিমাণ ব্যতীত আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। ” সুবহানাল্লাহ! (আহমদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা মুবারক ও নির্ধারণ ব্যতীত কোনো কিছুই হবে না। কাজেই সবক্ষেত্রে উনার উপরই তাওয়াক্কুল বা ভরসা রাখা উচিত। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে- হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে, তোমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার উপর যথাযথভাবে তাওয়াক্কুল করতে পারো, তাহলে তিনি তোমাদেরকে অনুরূপ রিযিক দান করবেন, যেরূপ পাখিকে তিনি রিযিক দিয়ে থাকেন। পাখিরা ভোরে খালি পেটে বাসা থেকে বের হয় এবং দিনের শেষে ভরা পেটে বাসায় ফিরে আসে। অর্থাৎ কুদরতী রিযিক খেয়ে থাকে। (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক উনার জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে যখন কাফিররা চড়কে বেঁধে আগুনে নিক্ষেপ করতেছিল তখন তিনি বলেছিলেন-
حسبى الله ونعم الوكيل
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনিই আমার সাহায্যের জন্য যথেষ্ট। আর তিনিই আমার উত্তম উকীল বা কার্যনির্বাহক। ”
চড়ক থেকে নিক্ষিপ্ত হয়ে হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখন শূন্যে ভাসমান ছিলেন, তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে উনাকে বললেন, আপনি কি আমার কোনো সাহায্যের (খিদমত) প্রয়োজনবোধ করেন? জাওয়াবে তিনি বললেন, “আপনার খিদমতের কোনো প্রয়োজন নেই। ” এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার প্রশংসা করে ইরশাদ মুবারক করেন-
وابراهيم الذى وفى
অর্থ: “আর হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি উনার ওয়াদা বা অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন। ” (পবিত্র সূরা নজম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৭
অতএব, উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বুঝলাম গইরুল্লাহর মুহতাজ হওয়া হারাম। আর মহান আল্লাহ পাক উনার মুহতাজ হওয়া, উনার উপর তাওয়াক্কুল বা ভরসা করা প্রত্যেক মুসলমান, জিন, ইনসান, পুরুষ, মহিলা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার মুখাপেক্ষী হওয়ার ও গইরুল্লাহ বিমুখ হওয়ার হাক্বীক্বী তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।
-মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বদ নযর বা কুদৃষ্টি এবং তার শরয়ী আহকাম (৪)
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিজ থেকে হালালকে হারাম ও হারামকে হালাল বানানো নিষেধ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অন্যায়কে ঘৃণা না করলে ঈমানদার থাকা যায় না
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পবিত্র নামায ক্বছর হওয়ার জন্য সফরের দূরত্বের সঠিক পরিমাপ মাইল হিসেবে সফরের দূরত্ব
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৫)
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)