পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -(৩)
, ২২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কোনো কিছুকে হালাল ও হারাম করার অধিকার একমাত্র মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরই আছে। কিন্তু কোনো ব্যক্তি যদি হালালকে হারাম আর হারামকে হালাল করে, তবে সে হবে কাট্টা কাফির। যেমন খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ شَرَعُوا لَهُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا لَمْ يَأْذَنْ بِهِ اللهُ
অর্থ: “তবে কি তাদের এমন উপাস্য রয়েছে, যারা তাদের জন্য দ্বীনের এমন সব বিধান দিয়েছে, যার অনুমতি মহান আল্লাহ পাক তিনি দেননি?” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২১)
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ যারা জানে না, বুঝে না, তাদের হারাম-হালাল সম্পর্কে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন লোক সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هٰذَا حَلَالٌ وَهٰذَا حَرَامٌ لِتَفْتَرُوا عَلَى اللهِ الْكَذِبَ
অর্থ:“তোমাদের জিহ্বায় মিথ্যা উচ্চারিত হয় বলে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি মিথ্যা আরোপের নিমিত্তে বলো না যে, এটা হালাল, ওটা হারাম। ” (পবিত্র সূরা নহল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৬)
আর একটা বিষয় সবার ভালো করে মনে রাখা দরকার যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلْحَلاَلُ بَيِّنٌ وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ
অর্থ: “হালাল সুস্পষ্ট আর হারামও সুস্পষ্ট। ” (বুখারী শরীফ)
অর্থাৎ যা হালাল হয়েছে তা ক্বিয়ামত পর্যন্ত হারাম হবে না। আর যা হারাম হয়েছে তাও ক্বিয়ামত পর্যন্ত হালাল হবে না।
কাজেই এই বিষয়টিও সবার মনে রাখতে হবে যে-
اِسْتِحْلَالُ الْحَرَامِ كُفْرٌ
অর্থ: “কেনো হারাম বিষয়কে হালাল করার চেষ্টা করাও কুফরী। ” (উছূলে কারখী)
আর কেউ জেনে শুনে কুফরী করলে সে কাফির হয়ে যায়, মুরতাদ হয়ে যায়। মুরতাদের হুকুম হচ্ছে- ইসলামী খিলাফত থাকলে তাকে তওবার জন্য ৩ দিন সুযোগ বা সময় দিতে হবে। তিন দিনের মধ্যে তওবা না করলে তার শাস্তি মৃত্যুদ-। তাকে মৃত্যুদ- দেয়ার পর তার লাশকে শরঈ তর্জ-তরীক্বা মুতাবেক গোসল, কাফন ও জানাযা দিতে পারবে না। তাকে মুসলমানের কোনো কবরস্থানেও দাফন করা যাবে না। তাকে কুকুর-শূকরের ন্যায় মাটির মধ্যে পুঁতে রাখতে হবে। তার বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে। হজ্জ করে থাকলে তাও বাতিল হয়ে যাবে। ওয়ারিছস্বত্ব বাতিল হয়ে যাবে। আর যে মুরতাদের জানাযার নামায পড়াবে সেও মুরতাদ হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
মোট কথা হলো- পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে যখন হারাম বর্ণিত আছে এবং চিহ্নিতও আছে, তখন মুসলমানদের বুঝতে হবে, নিশ্চয়ই হারাম ঘোষণার মাঝে কোনো হিকমত লুকিয়ে রয়েছে।
যেমন, খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হারাম দ্বারা উনার বান্দাদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন। বান্দাগণ এ সম্পর্কে কেমন আচরণ করে তা তিনি লক্ষ্য করেন। কে সম্মানিত জান্নাতবাসী হবেন আর কে জাহান্নামবাসী হবে তা হারামের মাধ্যমেই নির্ণয় করা হয়। যারা জাহান্নামী তারা সর্বদা প্রবৃত্তির পূজায় মগ্ন থাকে, যা দিয়ে জাহান্নামকে ঘিরে রাখা হয়েছে।
আর যারা সম্মানিত জান্নাতী হবেন উনারা সর্বদাই সম্মানিত শরীয়ত উনার উপর ইস্তিক্বামত থাকবেন। যা জান্নাতী হওয়ার মাধ্যম।
যারা ঈমানদার বান্দা তারা হারাম বর্জনের কষ্ট সহ্য করাকে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের যে কোনো আদেশ-নিষেধ পালন করাকে উনাদের মুবারক সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম মনে করে থাকেন। পক্ষান্তরে যারা কপট ও মুনাফিক তারা হারাম বর্জনের কষ্ট সহ্য করাকে অসহনীয় যন্ত্রণা বলে মনে করে। ফলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার পথে চলা তাদের জন্য কঠিন এবং নেকীর কাজ সম্পাদন ও আনুগত্য স্বীকার করা ততধিক কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। নাউযুবিল্লাহ!
একজন নেককার লোক মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক রেযামন্দি সন্তুষ্টি অর্জনার্থে হারাম পরিহার করলে বিনিময়ে তার চেয়ে যে অধিক উত্তম প্রতিদান পাওয়া যায় তা ভালোমতে অনুধাবন করতে পারে। এভাবে সে তার অন্তরে ঈমান উনার স্বাদ আস্বাদন করতে পারে। সুবহানাল্লাহ!
খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদেরকে হালাল ও হারাম জেনে হালালে মশগুল এবং হারামকে পরহেয করার তাওফীক দান করুন। (চলবে)
-আল্লামা মুহম্মদ নাজমুল হুদা ফরাজী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারী, কটাক্ষকারী, অবমাননাকারীদেরকে শরঈ শাস্তি প্রদান করা ওয়াজিব
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৭)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্বীন ইসলাম উনার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর ৩ শ্রেণী
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মালিকুত তামাম, ক্বাসিমুন নিআম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকত ও ফযীলত (৩)
১০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৭)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৬)
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মী-কাফেরদের সাথে সাদৃশ্যতা রাখা জায়েজ নেই
০৯ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
০৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)