নছীহতপূর্ণ ঘটনা
পবিত্র দরূদ শরীফ নিয়মিত পাঠকারীদের জন্য সুসংবাদ
, ২৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি আরজু নিয়ে এসেছেন?
প্রথমে আরজু পেশ করলেন মালাকুল মউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার সন্তুষ্টি মুবারকের লক্ষ্যে আমি নিয়ত করেছি, আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যে বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আমি এমন ভাবে রূহ তার কবজ করব যেমন আমি অতীতে হযরত নবী এবং রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রূহ মুবারক কবজ করেছি। সুবহানাল্লাহ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজু মুবারক কবুল করলেন। সুবহানাল্লাহ।
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করে, মালাকুল মউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম তিনি তার রূহ এমন ভাবে কবজ করবেন যেমন অতীতে হযরত নবী এবং রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রূহ মুবারক কবজ করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
দ্বিতীয়ত আসলেন হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যে বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, সেই কঠিন হাশরে মানুষ যখন গুণাহর ফিকিরে পেরেশান থাকবে তখন আমি সেজদায় পড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সুপারিশ করে তার জিন্দেগীর সমস্ত গুণাহ-খতাগুলি আমি ক্ষমা করিয়ে দিবো। সুবহানাল্লাহ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজুও কবুল করলেন। সুবহানাল্লাহ।
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করে, স্বয়ং হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম তিনি হাশরের ময়দানে সেজদায় গিয়ে সেই ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করে তার জিন্দেগির সমস্ত গুনাহখাতা গুলো ক্ষমা করিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।
এরপর তৃতীয়ত আসলেন হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যে বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, কঠিন হাশরের দিন মানুষ যখন পানির পিপাসায় হন্যে হয়ে ঘুড়তে থাকবে, হাউজে কাউসারের পানি ব্যতীত কোন পানি থাকবেনা, আমি স্বয়ং নিজ হাতে হাউজে কাউসারের পানি নিয়ে তাকে পান করাবো। সুবহানাল্লাহ। যে পানি পান করার পর জান্নাতে প্রবেশ করা পর্যন্ত তার পিপাসা লাগবেনা। সুবহানাল্লাহ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজুও কবুল করলেন সুবহানাল্লাহ।
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করে, কঠিন হাশরের দিন যখন পানির জন্য মানুষ হন্যে ঘুরতে থাকবে তখন স্বয়ং হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম তিনি হাউজে কাউসার থেকে পানি নিয়ে তাকে পান করাবেন। সুবহানাল্লাহ।
এরপর চতুর্থত আসলেন হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম। তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নিয়ত করেছি আপনার যে উম্মত এবং মহান আল্লাহ পাক উনার যে বান্দা প্রতিদিন আপনার প্রতি মাত্র দশবার দরূদ শরীফ পাঠ করবে, আমি তাকে হাতে ধরে চোখের পলকে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌছে দিবো। সুবহানাল্লাহ। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই আরজুও কবুল করলেন। সুবহানাল্লাহ।
অর্থাৎ কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করে, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম তাকে হাতে ধরে চোখের পলকে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌছে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।
এর ফলশ্রুতিতে দাড়ালো, কোন ব্যক্তি যদি প্রতিদিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মাত্র দশবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করবে, তাকে চারটি বিশেষ মর্যাদা দান করা হবে।
প্রথমত, মালাকুল মউত হযরত আজরাইল আলাইহিস সালাম তিনি তার রূহ এমন ভাবে কবজ করবেন যেমন অতীতের হযরত নবী এবং রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রূহ মুবারক কবজ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ।
দ্বিতীয়ত, হযরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম তিনি হাশরের দিন সেজদায় গিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সুপারিশ করে তার জিন্দেগীর গুনাহখাতা গুলো ক্ষমা করিয়ে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।
তৃতীয়ত, কঠিন হাশরের দিন মানুষ যখন পানির পিপাসায় হন্যে ঘুরতে থাকবে স্বয়ং হযরত মিকাইল আলাইহিস সালাম তিনি হাউজে কাওছার থেকে পানি নিয়ে সেই ব্যক্তিকে পান করাবেন।
চতুর্থত, হযরত জিবরাইল আলাইহিস সালাম তিনি সেই ব্যক্তির হাত ধরে চোখের পলকে পুলসিরাত পার করে জান্নাতে পৌছে দিবেন। সুবহানাল্লাহ।
মূলত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির মূল। তাই, উনার পবিত্র দরূদ শরীফ সমস্ত ভালাইয়ের চাবিকাঠি। পবিত্র দরূদ শরীফ ব্যতিত দুআ কবুল হয়না, নামাজ কবুল হয়না। আবার পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠের মাধ্যমে ভুলে যাওয়া বিষয় স্মরণ হয়, গুণাহ-খ¦তা ক্ষমা হয়, বিপদ-আপদ দূর হয়, বালা-মুছীবত থেকে মুক্তি লাভ হয়, রোগ-ব্যাধি হতে শিফা লাভ হয়। সামগ্রিকভাবে জীবনের প্রতিটি বিষয়ে পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠের কোন বিকল্প নেই।
ছহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি প্রত্যেক সালিককে প্রতিদিন বাদ ইশা একশতবার এবং প্রতিদিন বাদ ফজর একশতবার ত্বরীক্বা অনুযায়ী পবিত্র দরূদ শরীফ আবশ্যিকভাবে পাঠ করার নির্দেশনা মুবারক দেন। যা পাঠ করা শিশু হতে বৃদ্ধ এবং পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে সবার জন্যই অত্যাবশকীয়, ফরযে আইন।
ছহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বাদ ইশার পবিত্র দরূদ শরীফ নিয়মিত পাঠের মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক, মা’রিফাত মুবারক, তায়াল্লুক মুবারক, নিসবত মুবারক, কুরবত মুবারক এবং সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল হয়। একইভাবে বাদ ফজরের পবিত্র দরূদ শরীফ নিয়মিত পাঠের মাধ্যমে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের, বিশেষ করে আপন হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার খাছ ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক, মুহব্বত মুবারক, মা’রিফাত মুবারক, তায়াল্লুক মুবারক, নিসবত মুবারক, কুরবত মুবারক এবং সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল হয়। কাজেই, নিয়মিত পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠের কোন বিকল্প কারো জন্য নেই।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উছীলায় পবিত্র দরূদ শরীফ নিয়মিত পাঠের আবশ্যকতা উপলব্ধি করে তা আমলে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিলের তাওফীক সকলকে নসীব করুন। আমীন।
-আহমদ নুছাইর
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৬)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (৩)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র খুতবা উনার হুকুম-আহকাম
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৬)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানদেরকে ঈমান থেকে সরিয়ে দিতে কাফিরগুলো সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (২)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)