পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে পবিত্র কুরবানী উনার আহকাম, ফাযায়িল ও মাসায়িল (১১)
, ২৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৪ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ৩০ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
আইইয়ামে নহর বা পবিত্র কুরবানী উনার দিনের সময়সীমা
পবিত্র কুরবানী নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সম্পর্কিত একটি ইবাদত। এ সময়ের পূর্বে যেমন কুরবানী আদায় হবে না তেমনি পরে করলেও আদায় হবে না। ঈদের ছলাত আদায়ের পূর্বে কুরবানীর পশু যবেহ করা হলে কুরবানী আদায় হবে না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنِ حَضْرَت الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ رَضِى اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اَوَّلَ مَا نَبْدَاُ فِي يَوْمِنَا هَذَا اَنْ نُصَلّيَ ثـمَّ نَرْجِعَ فَنَنْحَرَ فَمَنْ فَعَلَ ذَلِكَ فَقَدْ اَصَابَ سُنَّتَنَا وَمَنْ نَـحَرَ قَبْلَ الصَّلاَةِ فَاِنَّـمَا هُوَ لَـحْمٌ قَدَّمَهُ لاَهْلِهِ لَيْسَ مِنَ النُّسْكِ فِي شَيْءٍ.
অর্থ : “হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা মুবারক দিলেন এবং তাতে বললেন, আমাদের এই পবিত্রতম দিনে তথা পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার দিনে সর্বপ্রথম কাজ পবিত্র নামায আদায় করা, অতঃপর নামায থেকে ফিরে গিয়ে পবিত্র কুরবানী করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরীক্বা মতো হবে। আর যে পবিত্র নামায উনার আগেই পবিত্র কুরবানী করবে (তার কাজ তথা পবিত্র কুরবানী আমাদের তরীক্বা মতো হয়নি)। অতএব তা স্বীয় পরিবারের জন্য প্রস্তুতকৃত গোশত হিসেবে গণ্য হবে, মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য উৎসর্গিত পবিত্র কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে না।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, ইবনে হিব্বান শরীফ)
ছলাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে কুরবানীর পশু যবেহ না করে ছলাতের খুতবা দু‘টি শেষ হওয়ার পর যবেহ করা উত্তম। কেননা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ রকম করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جُنْدَبٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ صَلَّى النَّبِيُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ النَّحْرِ ثُـمَّ خَطَبَ ثُـمَّ ذَبَحَ
অর্থ : “হযরত জুনদাব ইবনে সুফিয়ান আল-বাজালী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানী উনার দিন ছলাত আদায় করলেন অতঃপর খুতবা দিলেন তারপর পশু যবেহ করলেন।” (বুখারী শরীফ)
তবে কেউ ছলাতুল ঈদিল আদ্বহা উনার ডান দিকে সালাম ফিরানোর পর বাম দিকে ‘আসসালামু’ এ পর্যন্ত সালাম ফিরানোর পরও যদি কুরবানী করে তবে তা শুদ্ধ হবে। আর পবিত্র কুরবানী উনার শেষ সময়সীমা হচ্ছে পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার নামায উনার পূর্বে পশু যবেহ করলে যেমন কুরবানী আদায় হবে না, তেমনিভাবে ১২ তারিখের সূর্যাস্তের পর কুরবানী করলে কুরবানী আদায় হবে না।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضَرَتْ عَلِىّ عَلَيْهِ السَّلَامَ قَالَ النحر ثلاثة أيام وفي لفظ النحر ثلاثة أيام أفضلها أولـها.
অর্থ : “হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত, পবিত্র কুরবানী তিন দিন, এই তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন উত্তম।” (মুয়াত্তা ইমাম মালিক, ই’লাউস সুনান ১২/২৩২)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে বর্ণিত মারফূ হাদীছ শরীফ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, পবিত্র কুরবানী উনার সময়সীমা ৩ দিন অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১০ তারিখ পবিত্র ঈদুল আদ্বহা উনার নামায উনার পর হতে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত।
(গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হতে প্রকাশিত কুরবানী সংক্রান্ত রেসালা হতে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিত মুয়াল্লিমাহ্
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে জাদু করার কারণে উনার দাসীকে ক্বতল বা মৃত্যুদ-
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে তা’লীম গ্রহণ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবনাতু আবীহা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আর রবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ছিফত মুবারক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪৫)
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযাহ শরীফ
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৭)
১৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সত্যের মাপকাঠি
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৯)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কোনো স্থানেই সরাসরি বরকতময় ইসিম বা নাম মুবারক দ্বারা সম্বোধন মুবারক করেননি। যা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বুলন্দী শান মুবারক উনারই বহিঃপ্রকাশ মুবারক (৪)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বাইতুল্লাহ বা পবিত্র মসজিদ ও বাইতুর রসূল বা পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলিম (১)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)