পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে পবিত্র কুরবানী উনার আহকাম, ফাযায়িল ও মাসায়িল (২)
, ০৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
‘কুরবানী’ শব্দটি আরবী قُرْبَانٌ ‘কুরবান’ শব্দ হতে উদ্ভূত যার শাব্দিক অর্থ নৈকট্য, যা শব্দমূল قُرْب ‘র্কুব’ শব্দ থেকে উদ্গত। নিকটবর্তী হওয়া বা নৈকট্য লাভ করা, বিলীন হওয়া, উৎসর্গ করা অর্থে قُرْبَانٌ ‘কুরবান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে قُرْبَانٌ ‘কুরবান’ শব্দটি মোট তিন জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ উনার ১৮৩ নং আয়াত শরীফ, পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার ২৭ নং আয়াত শরীফ এবং পবিত্র সূরা আহক্বাফ শরীফ উনার ২৮ নং আয়াত শরীফ। এছাড়া পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে কুরবানী অর্থে نَحَرٌ, نُسُكِىْ ও مَنْسَكًا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে। অনুরূপভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে কুরবানী অর্থে اُضْحِيَّةٌ, اُضْحِيَةٌ, اِضْحِيَّةٌ, اِضْحِيَةٌ, اَضَاحِىُّ, اَضْحَاةٌ, اَضْحٰى, ضَحْيَةٌ, ضَحَيَّةٌ, ضَحَايَا শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে।
পবিত্র কুরবানী উনার দিনসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার সান্নিধ্য লাভের উদ্দেশ্যে যবেহযোগ্য উট, গরু, ছাগল বা ভেড়াকে اُضْحِيَّةٌ ‘উদ্বহিয়্যাহ’ বলা হয়। এ শব্দটি ضُحٰي ‘দ্বুহা’ শব্দ থেকে গৃহীত যার অর্থ ‘পূর্বাহ্ন’। যেহেতু কুরবানী যবেহ করার উত্তম সময় হলো ১০ যিলহজ্জ শরীফ উনার (ঈদের দিনের) পূর্বাহ্নকাল, তাই ওই সামঞ্জস্যের জন্য ‘উদ্বহিয়্যাহ’ বলা হয়েছে। এটিকে আবার ضَحِيَّةٌ ‘দ্বাহিয়্যাহ’ বা اَضْحٰي ‘আদ্বহা’ও বলা হয়। আর ‘আদ্বহাহ’ এর বহুবচন হলো ‘আদ্বহা’, যার সাথে সম্পর্ক জুড়ে ঈদের নাম হয়েছে عِيْدُ الْاَضْحٰي ‘ঈদুল আদ্বহা’।
মূলত সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায় খ¦লিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নামে নির্দিষ্ট তারিখে অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১০, ১১ ও ১২ তারিখের যে কোন দিনে নির্দিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট প্রাণী অর্থাৎ দুম্বা, মেষ, ভেড়া, খাসী, ছাগল, উট, গরু, মহিষ প্রভৃতি গৃহপালিত হালাল চতুষ্পদ প্রাণীসমূহকে মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করে যবেহ করাকে কুরবানী বলে।
মূলত পবিত্র কুরবানী হচ্ছে আবুল মুসলিমীন হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সুন্নত। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ زَيِدِ بْنِ اَرْقَمَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ اَصْحَابُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ! مَا هذِهِ الْاَضَاحِىْ؟ قَالَ سُنَّةُ اَبِيْكُمْ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ الـسَّلاَمُ.
অর্থ : “হযরত যায়িদ ইবনে আরকাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই কুরবানী কি? তিনি জাওয়াবে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনাদের পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সুন্নত।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩০)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)