পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম {এবং গরুর গোস্ত নিয়ে সকল বিভ্রান্তির খ-নমূলক জবাব} (৩)
, ১৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ হাদি আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ৪ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হালাল প্রাণীসমূহের মধ্যে গরুকে বিশেষ মর্যাদা মুবারক দান করেছেন
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার তরতীব অনুযায়ী ২য় ও সবচেয়ে বড় সূরা শরীফ উনার নাম হলো: পবিত্র সূরাতুল বাক্বারাহ্ শরীফ।
বাক্বারাহ্ শব্দের অর্থ হলো: গরু বা গাভী। আর এই নামকরণের অন্যতম কারণ হলো, এই পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি বনী ইসরাঈলদের একটি সমস্যার সমাধানে সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে তাদেরকে গরু যবেহ করার নির্দেশ মুবারক দেয়ার ঘটনা রয়েছে।
উক্ত ঘটনাটির মূল বিষয় হলো: মুসনাদে ইবনে আবি হাতিমে বর্ণিত হয়েছে, বনী ইসরাঈলের এক ধনী লোক-যার কোনো সন্তান ছিল না, তাঁর উত্তরাধিকারী ছিল এক ভ্রাতুষ্পুত্র। তাড়াতাড়ি সম্পত্তি লাভের আশায় সে স্বীয় চাচাকে হত্যা করে এবং হত্যার পর সেই রাতে তার চাচার মৃতদেহ গ্রামের এক লোকের বাড়ির দরজার ওপরে রেখে আসে এবং সকালে গিয়ে ওই লোকটির ওপর হত্যার অপবাদ দেয়। অবশেষে দুই দলে বিভক্ত লোকদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনির উপক্রম হয়। এমন সময় জ্ঞানী লোকেরা তাদেরকে বলেন- তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বিদ্যমান থাকতে একে অপরকে হত্যা করবে কেন? সুতরাং তারা সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার কাছে এসে ঘটনাটি বর্ণনা করে।
উক্ত ঘটনাটি পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ৬৭ থেকে ৭৩তম পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে এই ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় বলা হয়েছে, এ ফিৎনার মীমাংসার জন্যে বনী ইসরাইলের লোকেরা সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরজী পেশ করলো। যেহেতু সাধারণ উপায়ে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব ছিল না, তাই সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যেন এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বনী ইসরাইলীদের বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন যে, একটি গরু যবেহ করতে হবে। এরপর যবেহকৃত গরুর এক টুকরা গোস্ত নিহত ব্যক্তির গায়ে স্পর্শ করলে সে জীবিত হয়ে সে হত্যাকারীর নাম বলে দিবে। তারা এই নির্দেশ মুবারক শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বলল, এ ধরনের পরামর্শ দিয়ে আপনি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছেন? (নাউযুবিল্লাহ!)
সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি জবাবে বললেন, ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা অজ্ঞ লোকদের কাজ। মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নবী আলাইহিমুস সালাম উনারা কখনও এমনটি করেন না।
কাজেই, তোমরা যদি হত্যাকারীকে চিহ্নিত করতে চাও তবে নির্দেশিত এই কাজ করতে হবে। অতঃপর তারা অনেক প্রশ্নের মাধ্যমে বিষয়টি জটিল করলো, এবং পরবর্তীতে সেই গরুর চামড়া ভর্তি টাকা দিয়ে গরু কিনে যবেহ করে, সেই মৃত ব্যক্তির শরীরে লাগিয়ে তাকে জীবিত করে প্রকৃত হত্যাকারীকে সনাক্ত করলো। সুবহানাল্লাহ!
এখানে বলার বিষয় হলো, দুনিয়াতে মহান আল্লাহ পাক তিনি অনেক প্রাণী-ই তো মুসলমানদের জন্য হালাল করেছেন, তাহলে তিনি তো ইরাদা (ইচ্ছা) মুবারক করলেই সেই প্রাণী গুলোর নাম বলতে পারতেন। তিনি তো অন্য কোন প্রাণীর কথা বলেন নি, বরং গরুর কথা উল্লেখ করেছেন। আর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মূল সূরা হচ্ছেন পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার পরেই যে সূরা শরীফ উনার নাম তা হচ্ছেন পবিত্র সূরাতুল বাক্বারাহ্ শরীফ। যার অর্থ: হলো গরু/গাভী।
এখানে বুঝার বিষয় হলো, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার দ্বিতীয় কোন সূরা শরীফ কেউ দেখাতে পারবে না; যার নাম হালাল কোন প্রাণীর নামে করা হয়েছে। আর এমন কোন নজীরও নেই যে, গরু ব্যতীত কোন প্রাণীর গোস্তের টুকরা লাগানোর মাধ্যমে মৃত মানুষ জীবিত হয়ে গিয়েছে। এখানে মূলত মহান আল্লাহ পাক তিনি গরুর বিশেষ খুছূছিয়াত মুবারক বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মূল কথা হলো, মহান আল্লাহ পাক তিনি হালাল প্রাণীসমূহের মধ্যে গরুকে বিশেষ মর্যাদা মুবারক দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
-মুস্তাজিবুর রহমান ওয়াক্বি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












