পবিত্র নামায উনার মাসয়ালা-মাসায়িল
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে পবিত্র ছলাত বা নামায উনার ফযীলত ও গুরুত্ব (৩১)
, ২২ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কোন যানবাহনে যেমন লঞ্চ, স্টীমার কিংবা গাড়ীতে নামায পড়া অবস্থায় ক্বিবলা ঘুরে গেলে নামাযী ব্যক্তিকে নামাযরত অবস্থায়ই ক্বিবলা উনার দিকে ঘুরে নামায শেষ করতে হবে। অন্যথায় নামায হবে না। আর যদি এমন অবস্থা হয় যে, ক্বিবলা উনার দিকে ফিরা সম্ভব না হয়, তখন নামায ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ক্বিবলা উনার দিকে মুখ করে নিয়ত বেঁধে নামায আদায় করতে হবে।
জেনে রাখা জরুরী যে, লঞ্চ-স্টীমার বা রেলগাড়ী ইত্যাদিতে সফররত অবস্থায় যখন নামায পড়তে যাবে, তার পূর্বে উক্ত যানবাহন কত সময় একই দিকে চলবে তা জানতে হবে। যখন একই দিকে এই পরিমাণ সময় চলবে, যাতে সে তার নামায শেষ করতে পারে, তখনই সে তার নামায আদায় করবে।
তাহলে নামায আদায়ের সময় ক্বিবলা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না। (আলমগীরী, শামী, দুররুল মুখতার, বাহরুর রায়িক, ক্বাযীখান ইত্যাদি)
নদী ও সমুদ্র পথে, মাঠ, বন-জঙ্গল কিংবা মরু-প্রান্তর ইত্যাদি স্থান দিয়ে সফরকালে ঘন কুয়াশা, অন্ধকার, মেঘাচ্ছন্ন এবং অতিবৃষ্টি ইত্যাদির কারণে যদি ক্বিবলা উনার সঠিক দিক নির্ণয় করা সম্ভব না হয়, তাহলে কম্পাস দিয়ে ক্বিবলা নির্ণয় করবে। যদি কম্পাস না থাকে, তবে লঞ্চের শারেং বা স্টীমারের ক্যাপ্টেন-এর নিকট দিক সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে ক্বিবলা ঠিক করে নামায আদায় করতে হবে। কেননা লঞ্চ-স্টীমার ইত্যাদিতে দিক নির্ণয়ের যন্ত্র থাকে। আর যারা স্থল পথে তথা মাঠ, বন-জঙ্গল, মরু-প্রান্তর ইত্যাদিতে সফর করে, তাদের নিকট যদি কম্পাস না থাকে এবং দিকও নির্ণয় করতে না পারে, তবে নিকটবর্তী কোন জনবসতি থাকলে, সেখান থেকে জিজ্ঞাসার মাধ্যমে ক্বিবলা নির্ধারণ করে নামায আদায় করতে হবে।
আর যদি স্থলপথে সফরকারী কোন ব্যক্তি বা জনবসতি না পায়, যার দ্বারা ক্বিবলা উনার দিক জেনে নিয়ে নামায আদায় করবে এবং পানি পথে সফরকারী লঞ্চ-স্টীমারের কম্পাস নষ্ট হওয়ার কারণে ক্বিবলা উনার দিক জানতে না পারে, তবে প্রত্যেককেই আকাশের সূর্য বা চন্দ্র অথবা তারকার মাধ্যমে দিক নির্ধারণের কোশেশ করতে হবে।
আর যদি মেঘ, অন্ধকার ও কুয়াশাচ্ছন্নতার কারণে চন্দ্র, সূর্য ও তারকার মাধ্যমেও দিক নির্ধারণ সম্ভব না হয়, আর কম্পাসও না থাকে এবং জিজ্ঞাসা করার মত কোন জনমানবও না থাকে, তখন প্রত্যেকেই অনুমান করে অর্থাৎ তার অন্তর ক্বিবলা হওয়ার জন্য যে দিকে শায় দেয়, সে দিকেই মুখ করে নামায আদায় করবে। যদি সফরকারী অনেক লোক থাকে এবং তাদের মধ্যে একাধিক লোকের অনুমানকৃত ক্বিবলা এক হয়ে যায়, তাহলে তারা যেনো জামা‘আতে নামায আদায় করে। আর আদায় করাও উচিত।
চলন্ত অবস্থায় নৌকাতে নামায পড়া অবস্থায় ক্বিবলা পরিবর্তন হলে নামাযী ব্যক্তিকে নামাযরত অবস্থায়ই ক্বিবলা উনার দিকে ঘুরে নামায শেষ করতে হবে। অন্যথায় নামায হবে না। আর যদি এমন অবস্থা হয় যে, ক্বিবলা উনার দিকে ফিরা সম্ভব না হয়, তখন নামায ছেড়ে দিয়ে পুনরায় ক্বিবলা উনার দিকে মুখ করে নিয়ত বেঁধে নামায আদায় করতে হবে।
সফর অবস্থায় ট্রেন, বাসে বা লঞ্চে বসে ফরয নামায পড়ার মাসয়ালা হলো, নামাযী ব্যক্তি প্রথমে লক্ষ্য করবে যে, ট্টেনে, বাসে বা লঞ্চে যে কোনভাবেই হোক দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব কিনা? যদি দাঁড়িয়ে নামায পড়া সম্ভব হয়, তবে তার জন্য দাঁড়িয়ে নামায পড়াই ফরয।
কিন্তু দাঁড়িয়ে নামায পড়তে গেলে যদি মাথায় ছাদ লেগে যায় অথবা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা অধিক অসুস্থতার কারণে দাঁড়ানো অসম্ভব হয় অথবা দাঁড়িয়ে যথাযথ নিয়মে নামায পড়ার জায়গা না থাকে, তবে এসকল অবস্থায় দাঁড়ানোর ফরয সাকিত বা রহিত হয়ে যাবে এবং বসে নামায আদায় করতে হবে, এতে নামায পূর্ণরূপেই আদায় হয়ে যাবে। আর নামাযী ব্যক্তির জন্য দাঁড়িয়ে হোক, বসে হোক, ইশারায় হোক, সর্বাবস্থায় ক্বিবলামুখী হয়ে নামায পড়া ফরয। কোন অবস্থাতেই ইচ্ছাকৃতভাবে ক্বিবলা পরিবর্তন করা জায়িয নেই। সফর অবস্থায় যানবাহনে ক্বিবলা ঘুরার সাথে সাথে নামাযী ব্যক্তিও ঘুরে ক্বিবলামুখী হয়ে যাবে।
আর সফর অবস্থায় হোক অথবা মুক্বীম অবস্থায় হোক, যদি যথাযথ নিয়মে রুকূ’-সিজদা করে নামায আদায় করা যায়, তাহলে রুকূ’-সিজদা করেই নামায আদায় করবে। তবে যদি যানবাহনে অধিক ভিড়ের জন্য সিজদা করার মত কোন জায়গা না থাকে অথবা অসুস্থতার কারণে রুকূ’-সিজদা করতে না পারে, তবে ক্বিবলামুখী হয়ে (বসে হোক অথবা দাঁড়িয়ে হোক) ইশারায় রুকূ’, সিজদা করে নামায আদায় করবে। অর্থাৎ রুকূ উনার ক্ষেত্রে মাথা একটু কম ঝুঁকাতে হবে এবং সিজদা উনার ক্ষেত্রে মাথা একটু বেশি ঝুঁকাতে হবে। এতেও নামায পূর্ণরূপেই আদায় হবে। উক্ত নামায পুনরায় গন্তব্যস্থানে পৌঁছে দোহরায়ে পড়তে হবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খেলাধুলা নাজায়িয ও হারাম হওয়া সম্পর্কে সম্মানিত ইসলামী শরীয়তের ফায়সালা
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মানুষকে আমলের প্রতি নিরুৎসাহিত করতেই পবিত্র হাদীছ শরীফ নিয়ে মওজু-জয়ীফ ইত্যাদি অপপ্রচার করছে বাতিল ফিরক্বারা
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩০)
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মাজার শরীফে হামলাকারী বেয়াদব ও লানতপ্রাপ্ত
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -৪
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আইনী কার্যক্রম
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় (৬)
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)