পবিত্র নামায উনার মাসয়ালা-মাসায়িল
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে পবিত্র ছলাত বা নামায উনার ফযীলত ও গুরুত্ব
, ০৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০১ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০১ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৫ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১. উযূ ভঙ্গ অবস্থায় এমন কোন কাজ করতে পারবে না, যা নামায উনার মধ্যে করা হয়।
২. উযূ করতে যাওয়ার সময় পথে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ বা পবিত্র সূরা শরীফ পাঠ করতে পারবে না।
৩. যে সমস্ত কাজ করলে নামায ভঙ্গ হয় তার কোনটিই করতে পারবে না।
৪. ছতর খুলতে পারবে না। অর্থাৎ নামায রত অবস্থায় শরীরের যে যে অংশ ঢেকে রাখা ফরয উযূ উনার সময়ও তা ঢেকে রাখতে হবে।
৫. উযূ ভঙ্গের পর বিনা ওজরে নিজের স্থানে বিলম্ব করতে পারবে না বরং তাড়াতাড়ি উযূ করার জন্য চলে যেতে হবে। একইভাবে উযূ শেষে তাড়াতাড়ি নামায উনার মধ্যে শামিল হতে হবে। যদি উযূ করতে যেতে এক রুকন পরিমাণ সময় বিলম্ব করে তাহলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে।
এই সমস্ত শর্তের কোন একটির খিলাফ করলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। তখন আর অবশিষ্ট নামায আদায় করলে নামায শুদ্ধ হবে না। বরং পুনরায় শুরু থেকে নামায আদায় করতে হবে।
মূলতঃ উল্লেখিত শর্তগুলো যথাযথ পালন করে নামায আদায় করলে নামায আদায় হয়ে যাবে সত্যি তবে শর্তগুলো পালন করা খুবই কঠিন। এজন্য উযূ করে এসে পুনরায় প্রথম হতে নামায আদায় করাই উত্তম।
উল্লেখ্য, যদি নামায উনার মধ্যে অনিচ্ছাসত্ত্বে উযূ ভঙ্গ হয় যেমন- প্রস্রাব, পায়খানা, বায়ু, নাসিকা হতে রক্ত বের হওয়া, মুখ ভরে বমি হওয়া, ক্ষত স্থান হতে আপসে আপ রক্তপাত হওয়া ইত্যাদি তাহলে পুনরায় উযূ করে বাকী নামায আদায় করতে পারবে।
আর যদি নিজের ইচ্ছায় উযূ ভঙ্গ হয় যেমন- পায়খানা, প্রসাব, মুখভরা বমি, উচ্চ হাস্য, ক্ষতস্থান হতে রক্তপাত ইত্যাদি যে সমস্ত কাজে উযূ ভঙ্গ হয়, সে সমস্ত কাজ যদি নিজ ইচ্ছায় করে তাহলে পুনরায় উযূ করে নতুন নিয়তে নামায আদায় করতে হবে। অনুরূপ নামায আদায়কালে শরীরের কোন অঙ্গে কাঁটা ফুটে রক্তপাত হলে কিংবা শরীরের চাপ লেগে ক্ষতস্থান হতে রক্ত বের হওয়ার কারণে উযূ ভঙ্গ হলে পুনরায় উযূ করে নতুন নিয়তে নামায আদায় করতে হবে।
একইভাবে অন্যের দ্বারা উযূ ভঙ্গ হলে যেমন- অন্যের নিক্ষেপ করা ঢিলা, গুলি, তীর, পাথর শরীরে লেগে রক্তপাত হলে উযূ করে নতুন নিয়তে নামায আদায় করতে হবে।
যদি ইমাম ছাহিব উনার উযূ নষ্ট হয়ে যায় তবে তৎক্ষনাত মুক্তাদীগণের মধ্য হতে ইমাম ছাহিব উনার যোগ্য কোন ব্যক্তিকে খলীফা বা স্থলাভিষিক্ত নিযুক্ত করে নিজে উযূ করতে চলে যাবে এবং খলীফাকে অবশিষ্ট নামায আদায় করার জন্য ইশারায় বুঝিয়ে দিবে।
যেমন, এক রাকা‘আতের জন্য এক অঙ্গুলি এবং দু’রাকা‘আতের জন্য দু’অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করবে। রুকূ উনার জন্য হাঁটুতে, সিজদা উনার জন্য কপালে, ক্বিরাআতের জন্য মুখে, সিজদা সাহুর জন্য বুকে হাত রেখে ইশারা করবে। যে ব্যক্তি এ সমস্ত ইশারার তাৎপর্য বুঝেনা তাকে খলীফা নিযুক্ত করা যাবে না।
ইমাম ছাহিব উযূ করে এসে যদি দেখেন যে, জামা‘আত তখনও শেষ হয়নি তাহলে নিজে মনোনীত খলীফার মুক্তাদী হয়ে জামা‘আত শেষ হওয়ার পর উযূ উনার সময়ে যে নামায ছুটে গেছে তা মাসবূকের মাসয়ালা অনুযায়ী একাকী আদায় করে নিবেন। অর্থাৎ সূরা-ক্বিরাআত ইত্যাদি যথা নিয়মে পড়ে নামায আদায় করবেন। উযূ করে ফিরে এসে যদি দেখেন যে, জামা‘আত শেষ হয়ে গেছে তাহলেও বাকী নামায একাকী মাসবূকের ন্যায় আদায় করতে হবে।
যদি ইমাম ছাহিব এমন কোন ব্যক্তিকে খলীফা মনোনীত করেন, যে নামায উনার দু-এক রাক‘আত আদায় হয়ে যাওয়ার পর জামা‘আতে শামিল হয়েছে তাহলে সে প্রথমে ইমামের অসমাপ্ত নামায সমাপ্ত করে জামা‘আতে প্রথম হতে শামিল আছে এমন একজন মুক্তাদীকে সালাম ফিরাবার জন্য নিজ স্থানে বসিয়ে দিবে এবং সেই ব্যক্তি সালাম ফিরাবার পর প্রথম খলীফা নিজের ছুটে যাওয়া নামায মাসবূকের মাসয়ালা অনুয়ায়ী পুরা করে নিবে।
রুকূ’ কিংবা সিজদা উনার মধ্যে ইমাম ছাহিব উনার উযূ ভঙ্গ হলে ইমাম ছাহিব যদি অন্য রুকন আদায়ের নিয়তে তাকবীর বলে মাথা উঠায় এবং দাঁড়ায় তাহলে ইমাম, মুক্তাদী সকলের নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে।
যদি মুক্তাদী ইমাম ছাহিব উনার সাথে নামায উনার মধ্যে দাঁড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে আর ইমাম ছাহিব দু-এক রাক‘আত নামায পড়ে ফেলেন তাহলে হুশ আসার পর মুক্তাদীকে ইমাম ছাহিব উনার তাবেদারী করতে হবে। অতঃপর ফউত নামায শেষে আদায় করতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িয
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হালালকে হারাম করা নিষেধ
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৬)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)