পবিত্র আশূরা শরীফ উনার খুছুছিয়ত মুবারক
, ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৯ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ০২ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
১) পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসটি চারটি হারাম বা পবিত্র মাসের মধ্যে অন্যতম মাস।
২) এ মাসটি বিশেষভাবে সম্মানিত ।
৩) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনটি পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাসের দশ তারিখ বলে এর নামকরণ করা হয়েছে “পবিত্র আশূরা শরীফ”।
৪) অন্য বর্ণনা মতে, উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে দশটি সম্মানিত দিন হাদিয়া দেয়া হয়েছে উনার মধ্যে পবিত্র আশূরা শরীফ দিনটি দশম স্থানীয়। এ কারণেই “পবিত্র আশূরা শরীফ” নামকরণ করা হয়েছে।
৫) আবার কারও কারও মতে এ দিনটিতে যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় দশজন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে দশটি ভিন্ন ভিন্ন রহমত মুবারক বর্ষণ করেছেন, তাই এই দিনকে “পবিত্র আশূরা শরীফ” নামকরণ করা হয়েছে।
৬) বিশেষ বিশেষ সৃষ্টি এই দিনেই করা হয় এবং বিশেষ বিশেষ ঘটনা মুবারক এই দিনেই সংঘটিত হয়।
৭) এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন এবং সৃষ্টির সমাপ্তি বা ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে এই দিনে।
৮) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে প্রথম সম্মানিত নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম পর্যন্ত প্রায় সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোনো না কোনো বিশেষ ঘটনা এই দিনে সংঘটিত হয়েছে।
৯) এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শান-মান মুবারক, ফযীলত ও খুছূছিয়ত মুবারক ও হাবীবুল্লাহ মহাসম্মানিত শান মুবারক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে পবিত্র আশূরা শরীফ উনাকে সম্মানিত করা হয়।
১০) এ দিন সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দোয়া মুবারক কবুল করা হয় এবং উনার ইছমত মুবারক ঘোষণা করা হয়।
১১) এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকা বা কিস্তি মুবারককে জুদী নামক পাহাড় মুবারকে ভিড়িয়েছিলেন।
১২) এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইদ্রীস আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত আসমানে তুলে নেন ।
১৩) এই দিনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ হয় এবং এই দিনে উনাকে “খলীল” লক্বব মুবারক হাদিয়া করা হয় এবং উনাকে কাট্টা কাফির নমরূদের অগ্নিকুন্ড থেকে বের করে আনা হয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে কুদরতীভাবে হিফাযত করেন।
১৪) এই দিন সাইয়্যিদুনা হযরত দাউদ খলীফাতুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মর্যাদা-মাক্বাম মুবারক বৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হয়। উনার দোয়া মুবারক কবুল করা হয় এবং উনার সম্মানিত আওলাদ (সন্তান) সাইয়্যিদুনা হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার বিশ্বব্যাপী কর্তৃত্ব/ ক্ষমতা প্রদানের ঘোষণা মুবারক দেয়া হয়।
১৫) এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আইয়ূব আলাইহিস সালাম উনাকে পবিত্র মারীদ্বী শান মুবারক (অসুস্থতা) থেকে আরোগ্য/শিফা মুবারক হাদিয়া করেন।
১৬) এই দিনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম তিনি মাছ সম্প্রদায়কে সুস্থতা দান করে পুনরায় যমীনে তাশরীফ মুবারক এনেছিলেন।
১৭) এই দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে কথা মুবারক বলেছিলেন এবং পবিত্র তাওরাত শরীফ নাযিল করেছিলেন। এই দিনেই সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও উনার সম্প্রদায় লোহিত সাগর পার হয়েছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি গজব দিয়ে কাট্টা কাফির ফিরাঊন ও তার দলের লোকদেরকে লোহিত সাগরে ডুবিয়ে মেরেছিলেন ।
১৮) এই দিনে সাইয়্যিদুনা হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার দোয়া মুবারক উনার প্রেক্ষিতে কুদরতীভাবে উনাকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়।
১৯) এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম যমীনে বৃষ্টি নাযিল করেন।
২০) এই দিনেই হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি রহমত মুবারকসহ সর্বপ্রথম যমীনে নাযিল হন।
২১) আর এই দিনেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম পৃথিবীতে রহমত মুবারক বর্ষণ করেন।
কিতাবে উল্লেখ রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পর্যন্ত প্রায় সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন না কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা এ দিনে সংঘটিত হয়েছে। সঙ্গতকারণে এ দিনটি আমাদের সবার জন্যে এক মহান আনুষ্ঠানিকতার দিন, যা রহমত, বরকত, সাকীনা, মাগফিরাত হাছিল করার বিশেষ দিন।
কাজেই, সকলের জন্য আবশ্যক হলো, পবিত্র আশূরা শরীফ উনার সম্মানার্থে নি¤েœাক্ত মহাসম্মানিত সুন্নতী আমলগুলো করা। যথা-
ক) পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ উনার ৯,১০ অথবা ১০,১১ তারিখে রাযা রাখা।
খ) রোযাদারদেরকে ইফতার করানো।
গ) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন পরিবারবর্গকে ভালো খাদ্য খাওয়ানো ও ভালো পোশাক অর্থাৎ মহাসম্মানিত সুন্নতী পোশাক পরিধান করানো।
ঘ) পবিত্র আশূরা শরীফ উনার নিয়ত করে গোসল করা।
ঙ) চোখে (মেশক মিশ্রিত) সুরমা দেয়া।
চ) ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো, ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়ানো ও পিপাসার্তকে পানি করানো।
উপরোক্ত আমলগুলো করার মাধ্যমে ইহকালে ও পরকালে সর্বপ্রকার কামিয়াবী হাছিল করা যায়।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঠান্ডা ও মিঠা পানি পান করা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ফল খাওয়া মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাঁটি মধুসহ সকল সুন্নতী সামগ্রী
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)