পবিত্র আযান ও পবিত্র ইক্বামাতের মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ইসিম মুবারক শুনে চোখে বুছা দেয়া মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত এবং ইহানত করা কাট্টা কুফরী (২)
, ২৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
مَنْ سَمِعَ اِسْمِىْ فِى الْاٰذَانِ وَوَضَعَ اِبْهَامَيْهِ عَلٰى عَيْنَيْهِ فَاَنَا طَالِبُهٗ فِىْ صُفُوْفِ الْقِيَامَةِ وَقَائِدُهٗ اِلَى الْجَنَّةِ.
অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র আযান উনার মধ্যে আমার মহাসম্মানিত নাম মুবারক শুনে বুদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চোখের উপর বুলাবে (রাখবে) আমি তাকে ক্বিয়ামতের দিন কাতারের মধ্যে তালাশ করব। (কাতার থেকে বের করে) টেনে সম্মানিত জান্নাতে নিয়ে যাব অর্থাৎ সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করাব। ”
উল্লেখিত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ খানাকে অনেকেই জঈফ, এমনকি মওজু হিসাবেও উল্লেখ করেছে। নাউযুবিল্লাহ!
যারা উপরোক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে মওজু বলে উল্লেখ করেছে, তাদের জন্য সংক্ষেপে এতটুকু বলাই যথেষ্ট যে, একই মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ একাধিক ইমাম-মুজতাহিদগণের নিকট একাধিক রেওয়ায়েতে অর্থাৎ সনদে পৌঁছেছে। যার কাছে যে সনদে (ছহীহ, হাসান, জঈফ, মওজু ইত্যাদি) পৌঁছেছে, তিনি সে মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ খানাকে সে শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত বলে নামকরণ করেছেন।
যার কারণে একই মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফকে এক ইমাম ছহীহ বলেছেন, অন্য ইমাম সেটাকে মওজু বা বাতিল বলেছেন। যার হাজারো উদাহরণ রয়েছে। যেমন- ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যাদের থেকে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ গ্রহণ করেছেন, ইমাম মুসলিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাদের থেকে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ গ্রহণ করেননি। এছাড়াও মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রত্যেক ইমামই লক্ষ লক্ষ মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ আয়ত্ব বা মুখস্থ থাকার পরেও উনাদের প্রত্যেকের কিতাবে মাত্র কয়েক হাজার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করেছেন।
পরবর্তীতে উনাদের নিকট উনাদের ছেড়ে দেয়া অবশিষ্ট মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উনারা প্রত্যেকেই জবাব দিয়েছেন- “যে সমস্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফগুলো উনার কাছে উনার উছূল মুতাবেক বিশুদ্ধ রেওয়ায়েতে পৌঁছেছে, তিনি শুধুমাত্র সেগুলোকে প্রহণ করেছেন। আর যা ছেড়ে দিয়েছেন, তারমধ্যেও অনেক অনেক ছহীহ হাদীছ শরীফ রয়েছে। ” যার কারণে আমরা দেখতে পাই যে, ছিহাহ সিত্তাহ ছাড়াও পঞ্চাশেরও অধিক ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার কিতাব রয়েছে। কেউ কেউ উক্ত সংখ্যা শতাধিক বলেও উল্লেখ করেছেন।
পবিত্র আযানে চোখে বুছা দেয়া সম্পর্কিত উল্লেখিত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা সম্পর্কে একাধিক ইমাম একাধিক মত পেশ করেছেন। যারা মওজু বলে উল্লেখ করেছেন, তাদের রেওয়ায়েত আমাদের কাছে পৌঁছেছে। আর যারা জঈফ, ছহীহ, মওকুফ ও মারফু’ বলে উল্লেখ করেছেন, উনাদের রেওয়ায়েতও আমাদের কাছে পৌঁছেছে।
অর্থাৎ বর্ণিত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা একাধিক সনদে বর্ণিত রয়েছে। ইমাম ছাখাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “মাকাসিদুল হাসানাহ” কিতাবে, হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “মওজুআতুল কবীর” কিতাবে, আল্লামা মুহম্মদ তাহের ফাত্তানী রহমতুল্লাহি আলাইহি “মাজমাউল বিহার” কিতাবে উক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ খানাকে মারফু’ হিসেবে ছহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
আর মুফতীউল আ’যম আল্লামা মুফতী আমীমুল ইহসান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার “ফতওয়ায়ে বরকতিয়া” কিতাবে উক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাকে মওকুফ হিসাবে ছহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।
এছাড়াও নিম্নের কিতাবসমূহেও পবিত্র আযানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নাম মুবারক শুনে অঙ্গুলী চুম্বন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক উল্লেখ রয়েছে- কিতাব সমূহ হচ্ছে-
১. তাফসীরে জালালাইন, ২. তাফসীরে রুহুল বায়ান, ৩. মারাকিউল ফালাহ, ৪. দায়লামী শরীফ, ৫. জামিউর রুমুজ, ৬. কানযুল ইবাদ, ৭. শরহে কবীর, ৮. শরহে ইলিয়াস, ৯. মুহীত, ১০. শামী, ১১. মজমুয়ায়ে ফতওয়া, ১২. ফতওয়ায়ে খাযানাতুর রেওয়ায়েত, ১৩. ফতওয়ায়ে সিরাজুম মুনির, ১৪. ফতওয়ায়ে মিফতাহুল জিনান, ১৫. এয়ানাতু ত্বালেবীন আলা হল্লে আলফাজে ফতহিল মুবীন, ১৬. কেফায়াতু ত্বালেবুর রব্বানী লে রেছালাতে আবি যায়দিল কায়রোয়ানী, ১৭. মুনিরুল আইন ফি তাকবীলিল ইবহামাইন, ১৮. ফতওয়ায়ে ছুফিয়াহ, ১৯. নাহজুচ্ছালামা ফি তাকবীলিল ইবহামাইনে ফিল ইক্বামা, ২০. কুওওয়াতুল কুলুব, ২১. কিতাবুন্নিয়ামুল ইন্তেবা, ২২. ফতওয়ায়ে ছিদ্দিকিয়া, ২৩. জাআল হক, ২৪. ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, ২৫. আহসানুল ফতওয়া ইত্যাদি)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইমামাহ বা পাগড়ী পরিধানের মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মধু
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার মাঠা (লাবান)
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)