ঘটনা থেকে শিক্ষা
নিয়ামত হাছিল করতে হলে যিনি মালিক উনার মতের সাথে মত মিলিয়ে দিতে হয়
, ০৮ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
একবার সুলতান মাহমুদ বিশিষ্ট গনিত বিশারদ আল বিরুনীসহ তার এক বাগানবাড়িতে হাটছিলেন। সুলতান মাহমুদ জানতেন যে আল বিরুনী অংক শাস্ত্রে উনার অসাধারণ এবং অকল্পনীয় ক্ষমতাবলে অনেক কিছু বলে দিতে পারেন। তাই তাকে অপ্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে তিনি এমন এক বিষয়ের কথা বলতে বললেন, যা সাধারণ দৃষ্টিতে অংকের মাধ্যমে সম্ভব নয়। তিনি আল বিরুনীকে বললেন যে, তিনি আজ উক্ত বাগান বাড়ীর কোন দরজা দিয়ে বের হবেন তা অংক কষে কাগজে লিপিবদ্ধ করতে। আল বেরুনী যথারীতি অংক কষে কাগজে লিপিবদ্ধ করলেন। সুলতান মাহমুদ অতঃপর বললেন, আমি আজ কোন দরজা দিয়েই বের হবো না। তিনি উত্তর দিকের দেয়াল ভাঙ্গার আদেশ দিলেন এবং সেখান দিয়ে বের হয়ে আল বিরুনীর লিপিবদ্ধ কাগজটি পড়ার নির্দেশ দিলেন। দেখা গেল সেখানে লেখা রয়েছে, সুলতান মাহমুদ আজ কোনো দরজা দিয়ে বের হবেন না। বরং উত্তর দিকের দেয়াল ভেঙ্গে বের হবেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুলতান নির্দেশ করলেন আল বিরুনীকে ছাদ হতে ফেলে দিতে। সুলতানের নির্দেশ মত উনাকে ছাদ হতে ফেলে দেয়া হল। এদিকে পূর্ব থেকেই সুলতানের ছাদের নীচে বিশেষ কায়দার জাল বিছানো ছিল। মূলতঃ আল বিরুনী সে জালে পতিত হলেন এবং উনার কিছু হলো না। এ কথা সুলতানের কানে গেল। সুলতান তার কোষ্ঠিনামা দেখার নির্দেশ দিলেন, দেখা গেল সেখানে লেখা রয়েছে, অমুক তারিখে সুলতান মাহমুদ আমাকে ছাদ হতে মাটিতে ফেলে দিবেন, কিন্তু আমার কোন ক্ষতি হবে না। এ লেখা দেখে সুলতানের গোস্বার আগুন বহুগুণ বৃদ্ধি পেলো। সুলতান আল বিরুনীকে চিরতরে বন্দী করে রাখার নির্দেশ দিয়ে আশ্বস্ত হলেন। কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর একবার সুলতানের সভাষদগণ বললেন, বাদশাহ নামদার! উনাকে এভাবে বন্দী করে না রেখে মুক্তি দিলে বেশি উপকার হবে। বাদশাহ এ উক্তি শুনে উনাকে মুক্ত করে বললেন, হে আল বিরুনী! আমি আপনাকে কেন বন্দী করেছি তা কি আপনি জানেন? আমি আপনাকে হেনস্তা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আপনি কোন দিক হতে তা হচ্ছিলেন না, তাই আপনাকে বন্দী করেছি। তবে জেনে রাখুন- রাজা-বাদশাহ, আমীর-উমরাদের নিকট হতে কিছু হাছিল করতে হলে তাদের মতের সাথে মত মিলিয়ে দিতে হয়। তাদেরকে সর্বদা সন্তুষ্ট রাখার উদ্দেশ্যে নিজকে ছোট হতে হয়, তা না হলে পূর্ণ লাভবান হওয়া সম্ভব নয়।
এখন ফিকিরের বিষয় হচ্ছে যে, নগন্য তুচ্ছ দুনিয়াকে অর্জনের জন্য যখন রাজা বাদশাহ্র মতে মত মিলিয়ে দিতে হয়, নিজকে নিচু ও ছোট হতে হয় এবং সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম আদব বা শিষ্টতা প্রদর্শন করতে হয়, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনাকে প্রাপ্তির জন্য কতটুকু আদব বজায় রাখা তথা নিজেকে দীন-হীনরূপে জাহির করা আবশ্যক, তা সহজেই অনুমেয়।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)