নিত্যনতুন উন্নয়ন প্রকল্পের অজুহাতে বাড়ছে সবকিছুর দাম আসলে কি এগুলো উন্নয়ন প্রকল্প, নাকি শোষণ প্রকল্প? জানুন, যেভাবে একটি দেশ ভুয়া উন্নয়নের ফাঁদে জড়িয়ে যায়..(৫)
, ১৩ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
(৫ম অংশ)
“...আমাজন তো পেট্রোলিয়ামের মহাসগরের উপরে ভাসছে। ওই অঞ্চলে আমাদের এমন সব এজেন্ট প্রয়োজন যারা স্থানীয়দের হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারবে। পীস কোরের চাকুরী হবে ভবিষ্যতের এজেন্টদের জন্য একটি চমৎকার প্রশিক্ষণ। তবে সেজন্য তোমাকে খুব ভালোভাবে সপ্যানিশ ভাষায় কথা বলা শিখতে হবে। আর এখানে কাজ শুরু করার সাথে সাথে স্থানীয়দের ভাষাগুলোতে কথা বলাও শিখে নিও। এমনও তো হতে পারে যে, তোমার ভাগে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরী লেখা রয়েছে।” শেষ কথাটি বলার সময়ে তার ঠোঁটে সূক্ষ্ম হাসির রেখা ফুটে উঠেছিল।
আমি তখন তার কথাগুলোর প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারিনি। তবে এটুকু জেনেছিলাম যে, কর্মজীবন শুরু করার আগেই একজন সাধারণ এজেন্ট থেকে আমার পদোন্নতি ঘটেছে একজন অর্থনৈতিক ঘাতকে। তখনও আমি এহেন পদের নাম শুনিনি। আর বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছি এই পদটির প্রকৃত গুরুত্ব সঠিকভাবে অনুধাবন করতে। তখনও আমি জানতাম না যে, যুক্তরাষ্ট্রের বহু কনসালটিং ফার্ম ও মাল্টিন্যাশনাল করপেরেশনগুলোতে এ ধরনের বহু ব্যক্তি কাজ করছে। এরা সরকার থেকে একটি পয়সা বেতন না নিয়েও গোটা বিশ্ব জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-বাণিজ্যিক স্বার্থকে রক্ষা করছে। চলমান শতাব্দী শেষ হওয়ার আগেই যে এসব ব্যক্তি সুশ্রাব্য নামওয়ালা পদবীগুলোর অধিকারী হবে, তা আমার চিন্তার বাইরেই ছিল। আর আমি যে এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবো তাতো আমার উদ্ভটতম কল্পনারও সাধ্যের অতীত ছিল তখন।
আইনগত দিক থেকে মেইনকে একটি সুসংহত করপেরেশন বলা চলে। এর ২ হাজার কর্মীর মধ্যে মাত্র ১০০ জন ছিলো এর মালিক। এদেরকে বলা হতো বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রতিষ্ঠানে এদের অবস্থান ছিল ঈর্ষণীয়। তারা যে বাকি ১ হাজার ৯০০ কর্মীর মাথার উপরে ছড়ি ঘোরাতো তা শুধু নয়, বার্ষিক আয়ের সিংহভাগই এদের পকেটে যেতো। গোপনীয়তা ছিল তাদের কাজের মূল বৈশিষ্ট্য। তারা বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ ও বিবিধ আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্ণধারদের সাথে মতামত বিনিময় করতো। এসব ক্ষেত্রে মেইনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণ ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও আইনজীবির মতই কঠোরভাবে গোপনীয়তা রক্ষা করতো। সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলা ছিল পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ। কেউ এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেইনে টিকতে পারতো না। তাই প্রতিষ্ঠানটির কথা সাধারণ মানুষ জানতই না। যদিও মেইনের প্রধানতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান আর্সার ডি লিটল, স্টোন অ্যান্ড ওয়েবস্টার, ব্রাইন অ্যান্ড রুট, হ্যাসিবার্টন ও বেখটেলের পরিচিতি ছিল বিশ্বজোড়া।
প্রতিদ্বন্দ্বী শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সামগ্রিকভাবে। আসলে নিজ ক্ষেত্রে মেইন ছিল প্রায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী। প্রতিষ্ঠানটির সিংহভাগ কর্মীই ছিলো প্রকৌশলী। অথচ তারপরেও মেইনে কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হতো না। এমনকি প্রতিষ্ঠানটি একটি ছোট ঘরও কোন দিন তৈরি করেনি। প্রকৌশলীদের পরে মেইনের দ্বিতীয় বৃহত্তম কর্মী বাহিনী ছিলো সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যগণ। তারপরেও সংস্থাটির সাথে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ও সামরিক বাহিনীর কোন বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল না। মেইনের কর্মকা- এতটাই পৃথক ছিল যে, প্রথম কয়েক মাস আমি এ সম্পর্কে কোন ধারণাই গড়ে তুলতে পারিনি। আমি শুধু জানতাম যে, আমার প্রথম কর্মক্ষেত্র হবে ইন্দোনেশিয়া। আমি হবে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষজ্ঞ দলের সবচেয়ে কম বয়সী সদস্য। আমাদের কাজ হবে জাভা দ্বীপে বিদ্যুকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আর্থ-বাণিজ্যিক সম্ভাব্যতা যাচাই করা।...”
-মুহম্মদ আল জাবির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ স্টাইলের শাসকগোষ্ঠী দিয়ে উন্নয়ন নয়, লুটপাটই হবে
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানরা তাদের সন্তানদের কি শেখাচ্ছে, কি শেখানো উচিত? (২)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)