নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের অজুহাতে বাড়ছে সবকিছুর দাম
আসলে কি এগুলো উন্নয়ন প্রকল্প, নাকি শোষণ প্রকল্প? জানুন, যেভাবে একটি দেশ ভুয়া উন্নয়নের ফাঁদে জড়িয়ে যায়..(৪)
, ১৩ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
এসব উন্নয়নের ভুয়া প্রকল্প দেখিয়েই বাড়ানো হয় দেশের জনগণের নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম। কিন্তু প্রশ্ন হলো- উন্নয়ন হলে তো দাম কমার কথা, কিন্তু বাড়ে কেন? কারন কথিত এসব উন্নয়নের হিসাব-নিকাশে রয়েছে নানারকম ছলছাতুরী ও প্রতারণা।
ভুয়া উন্নয়ন পরিসংখ্যান তৈরি ও ঋণের লোভনীয় ফাঁদ এগুলোর পুরোটাই একটি বিশেষ আর্ন্তজাতিক অমুসলিম-বিধর্মী চক্রের কাজ। এসব কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ‘জন পার্কিন্স’ নামে তাদেরই এক এজেন্ট ‘গর্ব’ করে কয়েকটি বিষয় প্রকাশ করে বই লিখেছে। এই অর্থনৈতিক ঘাতকের বই থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। যে অংশগুলো পড়লে বুঝা সহজ হবে- কিভাবে ভুয়া উন্নয়নের হিসাব-নিকাশের ফেরে একটি দেশকে জড়ানো হয় ও ঋণের জালে আবদ্ধ করা হয়। বইটির নাম- ঈড়হভবংংরড়হং ড়ভ ঊপড়হড়সরপ ঐরঃসধহ।
(৪র্থ অংশ)
“...অর্থনৈতিক ঘাতকগণ যে সব দেশকে বিশ্ব সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে সেগুলোর সাধারণ প্রতিচ্ছবি হচ্ছে ইকুয়েডর। দেশটির অরণ্যাঞ্চল থেকে উত্তোলিত জ্বালানী সম্পদ বিক্রি করে প্রতিবছর যে অর্থ আয় হয় তার ৭৫% যায় আন্তর্জাতিক জ্বালানী প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিলে। বাকি ২৫%-এর মধ্যে ১৮.৭৫% ব্যয় হয় বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ খাতে। ৩.৭৫% ব্যয় হয় সরকারের বিভিন্ন খরচ মেটাতে। এর বৃহদাংশ যায় সামরিক ব্যয় খাতে। শেষ ২.৫% ব্যয় হয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য বিমোচন খাতগুলোতে। অথচ ইকুয়েডরের অরণ্যাঞ্চলের বাসিন্দা গোষ্ঠীগুলোর বাসস্থান, আবাদী জমি, পশুচারণ ভূমি ও সুপেয় পানির উৎস ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে বাঁধ, জ্বালানী উত্তোলন ও পাইপ লাইনের কারণে।
অর্থনৈতিক ঘাতকরা অত্যন্ত সূক্ষ্ম রকমের সুকৌশলী। আমরা ইতিহাস থেকে পরিপূর্ণভাবে শিক্ষা গ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমরা যুদ্ধ সাজে সজ্জিত হই না। আমরা অস্ত্রও বহন করি না। সাধারণ মানুষ থেকে আমাদের আলাদা করে চেনার কোন উপায় নেই। ইকুয়েডর, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মত দেশগুলোতে আমরা স্কুল শিক্ষক ও দোকানদার। ওয়াশিংটনে ও প্যারিসে আমরা আমলা ও ব্যাংকার। আমরা ভদ্র ও স্বাভাবিক। আমরা গোটা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করি। দারিদ্রপীড়িত গ্রামগুলোতে ঘুরে বেড়াই। আমরা পরের উপকার করার ইচ্ছাকে প্রচার করি। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আমাদের মানবতাবাদী কর্মকা- সম্পর্কে কথা বলি। বিভিন্ন দেশের সরকারি কমিটিগুলোতে নানারকম তথ্য ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করি। পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সামষ্টিক অর্থনীতির জয়গান গাই।
আমরা সব সময়ই প্রকাশ্যে কাজ করি, সরাসরিভাবে নিজেদের প্রচার চালাই। এভাবেই আমরা নিজেদের জনসম্মুখে উপস্থাপন করি, বিশ্বও আমাদের এভাবেই গ্রহণ করে। এভাবেই বিশ্ব সাম্রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে। আমরা সহজে অবৈধ পন্থা অবলম্বন করি না। কেননা, গোটা পদ্ধতিই ছলচাতুরীর উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তবে এতকিছুর পরেও কাগজে-কলমে পদ্ধতিটি বৈধভাবে পরিচালিত।
একটা বিষয় অত্যন্ত সাবধানতার সাথে মনে রাখা উচিত। যখন অর্থনৈতিক ঘাতকরা ব্যর্থ হয় তখন শৃগালেরা এগিয়ে আসে। শৃগালদের উৎপত্তি প্রাচীনতর সভ্যতাগুলোর যুগে। বস্তুতপক্ষে আমাদের ছায়াতলেই শৃগালেরা সবার অলক্ষ্যে ঘোরাফেরা করে। যখন শৃগালেরা সফল হয় তখন রাষ্ট্রনায়কগণ হয় ক্ষমতাচ্যুত হন, না হয় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করে। কখন কখনও শৃগালেরাও ব্যর্থ হয়। যেমন ইরাকে ও আফগানিস্তানে প্রথমে অর্থনৈতিক ঘাতকেরা ও পরে শৃগালেরা ব্যর্থ হয়েছিল। এ সমস্ত ক্ষেত্রে প্রাচীনতম পদ্ধতি অর্থাৎ সামরিক অভিযানকে কাজে লাগানো হয়। এসব অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের যুব শক্তি প্রতিপক্ষকে হত্যা করে ও নিজেরা মৃত্যুবরণ করে।...”
পাঠক! চিন্তা করুন কত সাদামাটা ভাবে তারা আমাদের দেশেই বিচরণ করে আমাদেরই ক্ষতিসাধনে মত্ত। তাদের কথিত পরিবেশবাদী সার্টিফিকেট ও উন্নয়নের পরিসংখ্যানও যে ভুয়া ও চাতুরতাপূর্ণ সেটাও কত অকপটে তারা বলে যাচ্ছে। আবার দেশের ক্ষমতাসীনরাও টাকার লোভে তাদের ফাঁদে পা দিলেও বের হয়ে আসার কথা ভাবতে পারে না, কারন তখন তাদের জীবন হয়ে পড়ে হুমকির সম্মুখীন।
-মুহম্মদ আল জাবির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ স্টাইলের শাসকগোষ্ঠী দিয়ে উন্নয়ন নয়, লুটপাটই হবে
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানরা তাদের সন্তানদের কি শেখাচ্ছে, কি শেখানো উচিত? (২)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)