নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের অজুহাতে বাড়ছে সবকিছুর দাম
আসলে কি এগুলো উন্নয়ন প্রকল্প, নাকি শোষণ প্রকল্প? জানুন, যেভাবে একটি দেশ ভুয়া উন্নয়নের ফাঁদে জড়িয়ে যায়..(২)
, ২৮শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
ভুয়া উন্নয়ন পরিসংখ্যান তৈরি ও ঋণের লোভনীয় ফাঁদ এগুলোর পুরোটাই একটি বিশেষ আর্ন্তজাতিক অমুসলিম-বিধর্মী চক্রের কাজ। এসব কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ‘জন পার্কিন্স’ নামে তাদেরই এক এজেন্ট ‘গর্ব’ করে কয়েকটি বিষয় প্রকাশ করে বই লিখেছে। এই অর্থনৈতিক ঘাতকের বই থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। যে অংশগুলো পড়লে বুঝা সহজ হবে- কিভাবে ভুয়া উন্নয়নের হিসাব-নিকাশের ফেরে একটি দেশকে জড়ানো হয় ও ঋণের জালে আবদ্ধ করা হয়। বইটির নাম- Confessions of Economic Hitman|
(২য় অংশ)
“...বেশিরভাগ দেশেই জনসংখ্যার ক্ষুদ্রতম অংশটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল ভোগ করে। অন্যদিকে জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশটির দুর্দশা দিনে দিনে বৃদ্ধি পায়। যে সব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড একটি দেশের উন্নয়নকে পরিচালনা করে সে সব প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রকগণ বিশেষ মর্যাদা ভোগ করে। একটি আমাদের বহু সমস্যার উৎসে পরিণত হয়েছে। যখন ব্যক্তিগত লোভকে পুরস্কৃত করা হয় তখন লোভ সমষ্টিগত দুর্নীতির জন্ম দেয়। যখন আমরা বিশ্বের প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়কারীকে পুরস্কৃত করি, যখন আমরা নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপনকারীকে অন্ধভাবে অনুসরণ করি, যখন আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠের সেবায় নিযুক্ত করি, তখনই আমরা সমস্যাকে ডেকে আনি। আর এসব সমস্যা থেকে উদ্ভব ঘটে জাতীয় বিপর্যয়ের।
বিশ্ব সাম্রাজ্যকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও সরকার, সম্মিলিতভাবে যা কর্পোরেটোক্রেসি নামে পরিচিত, তাদের রাজনৈতিক ও আর্থিক শক্তি ব্যবহার করে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সংবাদ মাধ্যম ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাধ্য করে এই ত্রুটিপূর্ণ ধারণা ও আর অনুসিদ্ধান্তকে অনুসরণ করতে।
আমরা অর্থনৈতিক ঘাতকরা যে কাজটি সবচেয়ে ভালোভাবে করতে পারি সেটা হচ্ছে বিশ্ব সাম্রাজ্যকে গড়ে তোলা। আমরা হচ্ছি এমন একটি বিশেষ শ্রেণী যা আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগিয়ে বাকি বিশ্বকে আমাদের কর্পোরেটক্রেসির গোলামীর শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা। এই কর্পোরেটক্রেসিই সরকার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোকে নিরঙ্কুশ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। মাফিয়ার সদস্যদের মতই অর্থনৈতিক ঘাতকরা সুযোগ-সুবিধা বিলায়। এগুলো মূলত ভৌত অবকাঠামো, যেমন- বিদ্যুৎকেন্দ্র, হাইওয়ে, সমুদ্রবন্দর, সেতু, রেললাইন, বিমানবন্দর ও শিল্প স্থাপনা নির্মাণের জন্য ঋণ প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এসব ঋণের মূল শর্ত হচ্ছে এই যে, এসব ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ যে কোন আমেরিকান কোম্পানীকে অবশ্যই দিতে হবে। তাই প্রকৃত অর্থে ঋণের অর্থ কখনই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যায় না। বরঞ্চ এটি ওয়াশিংটনের ব্যাংকিং হাউজ থেকে নিউইয়র্ক, হাউস্টন বা সানফ্রান্সিসকোর ইঞ্জিনিয়ারিং হাউজে স্থানান্তরিত হয় মাত্র।
ঋণের অর্থ হাতে না পেলেও ঋণগ্রহীতা দেশকে এই ঋণ সুদে আসলে পরিশোধ করতে হয়। যখন একজন অর্থনৈতিক ঘাতক পুরোপুরিভাবে সফল হয়
তখন ঋণের অংক বিশালাকার ধারণ করে। তখন কয়েক বছরের মধ্যেই ঋণগ্রহীতা দেশটি ঋণখেলাপিতে পরিণত হতে বাধ্য হয়। যখনই এই ঘটনা ঘটে তখনই আমরা মাফিয়ার মত ঋণখেলাপী দেশটির টুঁটি চেপে ধরে আমাদের স্বার্থ হাসিল করি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘে আমাদের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট প্রদান, ঋণখেলাপী দেশে আমাদের সামরিক ঘাঁটি স্থাপন, আমাদের বাণিজ্যিক সংস্থাগুলোর হাতে ঋণখেলাপী দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে তুলে দেয়া অথবা ঋণখেলাপী দেশের উপর দিয়ে অবাধে আমাদের যাতায়াতের অধিকার অর্জন করা। তারপরেও ঋণখেলাপী দেশটি আমাদের কাছে ঋণীই থাকে। সেই সাথে আমাদের বিশ্ব সাম্রাজ্যে আরেকটি দেশ সংযুক্ত হয়।...”
পাঠক! লেখাটির এই অংশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী এজেন্ট পার্কিন্সের বইয়ের ভূমিকা থেকে ১টি অংশ তুলে ধরা হলো। দালালটি নিজেই এখানে খোলাসা করে বলে দিয়েছে, তাদের দেয় ঋণের মূল শর্ত হলো, ‘এসব ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ যে কোন আমেরিকান কোম্পানীকে অবশ্যই দিতে হবে। তাই প্রকৃত অর্থে ঋণের অর্থ কখনই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যায় না।’
পাঠক! শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, চীন, জাপান ভারতসহ যতগুলো দেশ এবং আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকসহ যতগুলো তথাকথিত ‘ঋণদাতা’ দেশ বা সংস্থা আছে, সবগুলোই এই সিস্টেম অনুসরন করে। উদাহরণত ভারতের একটি ঋণ প্রকল্পের কথাই বলা যাক। কিছুদিন আগে ভারত বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিবে বলে একটি চুক্তি করে। এই ঋণের কয়েকটি শর্ত হলো- বাস্তবায়িতব্য সরবরাহ প্রকল্পের (সাপ্লাই প্রজেক্ট) ৭৫ ভাগ পণ্য অবশ্যই ভারত থেকে আমদানি করতে হবে। পাশাপাশি প্রকল্পের সেবাও (পরামর্শক নিয়োগ) নিতে হবে ভারত থেকে। এছাড়া ভৌত অবকাঠামো প্রকল্পের ৬৫ ভাগ পণ্য কিনতে হবে ভারত থেকে।
এটাতো একটি উদাহরণ এভাবেই শর্তের বেড়াজালে প্রতিটি ঋণ এসে থাকে। আর তার বোঝা টানতে থাকে সাধারন জনগণ।
-মুহম্মদ আল জাবির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ধর্মব্যবসায়ী ও বিধর্মীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো থেকে অপসারণ জরুরী
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ভিন্নভাবে একটু ভাবুন...........
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ একটু ভাবতে হবে....
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ফসলের ৪২ ভাগ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে। স্বাধীন বাংলাদেশে উপজাতি সন্ত্রাসী চৌকিদারকে কেন রাজা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে?
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পাহাড়ে ৪০ হাজার নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করেছে উপজাতিরা, এর বিচার হবে কবে?
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শুধু কথিত জাতীয় সংগীত নয়, সকল রবীন্দ্র ঠগের সকল সাহিত্য নিষিদ্ধ করতে হবে
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মাজার শরীফে হামলাকারী বেয়াদব ও লানতপ্রাপ্ত
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের ভেতর এ আবার কোন দেশ!
১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দূর্গাপূজায় ছুটি ঐচ্ছিক করতে হবে
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কথিত জাতীয় সংগীত শিরকী কথায় ভরপুর
১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ভারত নিজেই ব্যাপকভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতন করে আবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিয়ে মাথা ঘামায়
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মনিপুর অশান্ত, বার্মা অশান্ত, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম কবে অশান্ত হবে?
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)