ধানের গোলা এখন কেবলই স্মৃতি
, ১৬ ই জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২২ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পাঁচ মিশালী
গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ আর গোলা ভরা ধান এখন শুধুই স্মৃতি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে সেই ধানের গোলাঘর। আধুনিক যুগে তার জায়গা নিয়েছে বিশেষ সুবিধা সম্পন্ন গুদাম ঘর। তবে বাপ-দাদার স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখতে এখনও এই গোলা বাড়িতে রেখে দিয়েছেন কেউ কেউ।
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বৈগ্রাম গ্রামের কৃষক সাব্বির হোসেন সবুজের বাড়ির খোলা জায়গায় আজও দাঁড়িয়ে আছে এই ধানের গোলাঘর। প্রায় ৫০ বছর আগে তৈরি করা হয়েছিলো ধানের গোলাটি। এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় জায়গা দখল করে আজও দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় ১৫ বছর ধরে কোনো কাজেই আসে না গোলাঘরটি।
এক সময়ের গ্রামবাংলার সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। কৃষিক্ষেত ও কৃষকের ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা আধুনিক যুগের ইট, বালু আর সিমেন্টের তৈরি গুদামের কারণে হারিয়ে গেছে। গ্রাম-গঞ্জে প্রায় কৃষকের বাড়িতে ধান মজুদ রাখার জন্য বাঁশ, বেত ও কাদা দিয়ে তৈরি করা হতো গোলা। পরে গোলাঘরের গায়ে ভেতরে ও বাহিরে বেশ পুরু করে লাগানো হতো মাটির আস্তরণ। গোলা ঘরের প্রবেশ পথ রাখা হতো উঁচুতে, যাতে সহজেই চোর ধান চুরি না করতে পারে।
এছাড়াও অতিতে সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত কার কয়টি ধানের গোলা আছে এই হিসেবে। শুধু তাই নয় কন্যা ও বর পক্ষের বাড়ির ধানের গোলার খবর নিতো উভয় পক্ষের লোকজন, যা এখন শুধু কল্পকাহিনী। ধানের গোলা দেখা যেত অনেক দূর থেকে। গোলা নির্মাণ করার জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে দক্ষ শ্রমিক ছিল। তারা বাড়িতে এসে বাঁশ দিয়ে তৈরি করত ধানের গোলা। কাজ না থাকায় এখন তারা ভিন্ন পেশা বেছে নিয়েছে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ধানের গোলাঘর এখন শুধুই স্মৃতি।
বৈগ্রাম গ্রামের ৮০ বছর বয়সী লোকমান হোসেন বলেন, ইট, পাথর, বালি, সিমেন্ট আর রডের আবিষ্কার হওয়াতে অতীতের অনেক জিনিস এখন অচল হয়ে গেছে। আমাদের সময় ভাদ্র মাসে জমিতে পানি থাকতো। পানির মধ্যে আউশধান কেটে ভিজা ধান গোলায় রাখতাম। ভিজা ধান গোলায় শুকিয়ে যেত। আবার ওই ধানের চাল অনেক শক্ত হতো। ভাত খেতেও স্বাদ পেতাম। এখন এসব আর হয় না, আধুনিকতার ছোঁয়ায় সব হারিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় অনেক প্রবীণ মুরুব্বীরা বলেন, আমাদের সময় প্রায় সব বাড়িতে ধানের গোলাঘর ছিলো। সারা বছর গোলা থেকে ধান বের করে তা সিদ্ধ-শুকান করে ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে চাল বের করতাম। এখন আর তা করতে হয় না। মিল-কারখানা আর চাতালে এসব কাজ হয়। ওই সময় বড় বড় গৃহস্থদের বাড়িতে বড় বড় ধানের গোলাঘর থাকতো।
কৃষক সাব্বির হোসেন সবুজ বলেন, আমাদের এই গোলাঘর এর বয়স প্রায় ৫০ বছর হবে। আমি ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি, বাবা-মা এই গোলাঘর বোঝাই করে ধান রাখতো। সারা বছর গোলায় ধান থাকতো। প্রায় ১৫ বছর ধরে গোলাঘরটি আর ব্যবহার করা হয় না। কালের সাক্ষী হিসেবে আজও আমরা ধানের গোলাঘর রেখে দিয়েছি। মাঝে-মধ্যে অনেকেই গোলাঘরটি দেখতে আসে। যদিও আর কিছুদিনের মধ্যে গোলাঘরটি ভেঙে যেতে পারে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দিনে তিন কাপ কফি মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি করতে সক্ষম - ক্যানসার-হার্টের মত আত্মঘাতী রোগ-ব্যাধি দূর করে
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম প্রজাতন্ত্রের দেশ সেনেগাল
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সেনেগালে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও ইসলামী আদর্শে নতুন মাত্রা
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঘরোয়া ঔষধ হিসেবে আদা
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রাশিয়ার আকাশে দেখা মিললো উজ্জ্বল গ্রহাণুর
১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মসজিদের ভেতরে ৫৪০ বছরের পুরনো জিনের মসজিদ!
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চাঁদের বয়স কত? এক খ- পাথরের মাধ্যমে যা জানা গেল
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পাখির অভয়াশ্রম যে গ্রাম
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বায়ুদূষণ কতোটা ক্ষতিকর, জানালো গবেষণা
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতিদিন ডাল খেলে যে ৩টি দারুণ উপকার মিলবে
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চাঁদে বসছে ট্রেন লাইন!
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রতিদিন কাঁচা মরিচ খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)