ধর্মব্যবসায়ীদের জন্য জাহান্নাম
, ০৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ মে, ২০২৪ খ্রি:, ০৪ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَيْلٌ لِأُمَّتِي مِنْ عُلَمَاءِ السُّوْءِ اَلَّذِيْنَ يَتَّخِذُوْنَ هٰذَا الْعِلْمَ تِجَارَةً يَبِيْعُوْنَ مِنْ اُمَرَاءِ زَمَانِهِمْ لَا اَرْبَحَ اللهُ تِجَارَتَهُمْ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমার উম্মতের ওই সব উলামায়ে সূ’দের জন্য আফসুস বা তাদের জন্য জাহান্নাম, যারা ইলিমকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করে তাদের যামানার আমীর-উমরাদের কাছে বিক্রি করে থাকে দুনিয়া হাছিলের জন্য। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না।” নাউযুবিল্লাহ!
পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ
যে সকল পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা ‘হিজাব বা পর্দা’ ফরয প্রমাণিত হয়েছে তা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে, শুধু বোরকা বা পর্দা করে রাস্তায় বের হওয়ার নাম হিজাব বা পর্দা নয়। বরং তার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট আয়াত শরীফসমূহে উল্লেখিত সকল হুকুম-আহ্কামসমূহ মেনে চলার নামই হচ্ছে “শরয়ী হিজাব বা পর্দা”।
যেমন, কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে অনুমতি নেয়া, মাহরাম ব্যতীত অন্য কারো সাথে দেখা-সাক্ষাত না করা, মাহরামদের সামনেও শালীনতা বজায় রাখা, চলাচলের সময় পুরুষ-মহিলা উভয়ের দৃষ্টিকে অবনত রাখা, নিজেদের লজ্জাস্থানকে হিফাজত করা, বিনা প্রয়োজনে গলার আওয়াজ বা কণ্ঠস্বর পরপুরুষকে না শুনানো, প্রয়োজনে কথা বলতে হলে ও কিছু চাইতে হলে পর্দার আড়াল থেকে বলা ও চাওয়া এবং শক্ত ভাষায় কথা বলা, নরম ভাষায় কথা না বলা ইত্যাদি সবই হিজাব বা পর্দার অন্তর্ভুক্ত। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ সমূহে এ বিষয়গুলোই মূলতঃ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন।
অনুমতি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করা সংক্রান্ত আয়াত শরীফ সমূহের ব্যাখ্যা:
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য ঘরে প্রবেশ করোনা, যে পর্যন্ত অনুমতি না নাও এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যদি তোমরা স্মরণ রাখ। (পবিত্র সূরা নূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭)
উক্ত আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমভাবে সকলকেই যে কোন কারো ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ কারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে ঘরওয়ালাদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর এটাও মূলতঃ ‘হিজাব বা পর্দার’ একটি অংশ। অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করা সংক্রান্ত উল্লেখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় ইমাম-মুজতাহিদ তথা অনুসরণীয় মুফাস্সিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের তাফসীর গ্রন্থসমূহে যে ফায়ছালা দিয়েছেন নিম্নে তা উল্লেখ করা হলো-
প্রথম মাসয়ালা: কারো ঘরের ছিদ্র দিয়ে ভিতরে দৃষ্টি দেয়া সংক্রান্ত।
মহান আল্লাহ তায়ালা উনার কালাম-
(يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَدْخُلُوا بُيُوتًا)
“(হে ঈমানদারগণ! তোমরা কারো ঘরে প্রবেশ করো না) মহান আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল বাশার আদম আলাইহিস সালাম উনার সন্তানের জন্য আবাসস্থল তথা ঘর নির্ধারণ করেছেন। এর মাধ্যমে তাদেরকে অনেক দৃষ্টি থেকে আড়ালে রেখেছেন এবং আলাদাভাবে তাদেরকে উপকার লাভের মালিকানাস্বত্ত্ব দিয়েছেন। মানুষের জন্য সীমা যে, যা ঘরের বাইরে এবং ঘরের অভ্যন্তরে তা ঘরের মালিকের অনুমতি ছাড়া দেখবে না। তাদেরকে আদব শিক্ষা দিয়েছেন তাদের মধ্যে আওরাতদের থেকে ফিরানোর মাধ্যমে, যাতে তাদের মধ্যে কেউ অপর কোন মহিলার দিকে দৃষ্টি না দেয়। ‘ছহীহ্ মুসলিম’ শরীফে আছে, সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “কেউ যদি কোন সম্প্রদায়ের কারো বাড়ীতে তাদের অনুমতি ছাড়া উকি মেরে দেখে, বাড়ীওয়ালার জন্য বৈধ হবে তার চক্ষুকে ফুটা করে দেয়া।”... এখানে চক্ষু ফুটা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, যেন এর উপর আমল করার মত আমল করা হয়। এমনকি এরপর সে অপর কারো ঘরে দৃষ্টি দিবে না। আর কেউ কেউ বলেন; এতে জরিমানা হবে না এবং কেছাছও হবে না। এটাই ছহীহ্ মত।
-সাইয়্যিদ আহমদ শুয়াইব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
গোল্ডেন রাইস (২)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে -১১
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৭)
০৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)