দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে সবকিছুরই ফায়সালা মুবারক রয়ে গেছে
, ১২ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩০ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এদিকে শরবত ওয়ালা তার মেয়েকে বিবাহ দিবে, বিবাহের বিষয়াদি নিয়ে ছেলে পক্ষের অভিভাবকদের সাথে আলোচনা হচ্ছিল। ছেলের পক্ষ শরবত ওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করলো- আপনি মেয়ের বিয়েতে কি কি দিবেন? শরবত ওয়ালা বললো- যা চান, তাই দিব। ছেলের পক্ষ বললো- তুমি সাধারণ শরবত ওয়ালা, তুমি যা চাই, তা কি করে দিবে? কিছুক্ষণ কথা কাটা কাটির পর শরবত ওয়ালা রাগ হয়ে বলে উঠলো- আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে, সব দিব। যদি না দিতে পারি, তবে আমার স্ত্রী তালাক। ছেলের পক্ষ বললো- প্রথমে নিজ স্ত্রীর ব্যাপারে ফায়ছালা করুন, অতঃপর মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে আলোচনা হবে। শরবত ওয়ালা তার স্ত্রীর তালাক সংক্রান্ত বিষয়ের ফায়ছালার জন্য আলেমদের দরবারে ঘুরতে লাগলো, কিন্তু কেউ তার ফায়ছালা দিতে পারলোনা। শেষ পর্যন্ত ঘুরতে ঘুরতে শরবত ওয়ালা হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে উপস্থিত হলো এবং উক্ত বিষয়ের ফায়ছালা কামনা করলো। ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, সে দিন শরবতের বিনিময়ে এই মাসয়ালাটিই তোমাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলাম। তুমি সেদিন শরবতের বিনিময়ে পয়সা চেয়েছিলে, আজ আমার কাছ থেকে ফতওয়া নিতে হলে এক হাজার দেরহাম লাগবে। শরবত ওয়ালা এক হাজার দেরহাম নিয়ে আসলো। ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তখন ফতওয়া দিলেন, “তোমার মেয়ের বিয়েতে এক জিল্দ কুরআন শরীফ দিয়ে দাও, তোমার স্ত্রী তালাক হবেনা। কারণ মহান আল্লাহ্ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
ولا رطب ولا يابس الا فى كتاب مبين.
অর্থ: “শুকনা এবং ভিজা এমন কিছুই নেই, যা এ স্পষ্ট কিতাবে উল্লেখ করা হয় নাই।” (পবিত্র সূরা আন্য়াম শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
অর্থাৎ আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, তার চাইতেও বেশী পবিত্র কুরআন শরীফে রয়েছে। সুবহানাল্লাহ্! অতএব প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র কুরআন শরীফ অর্থাৎ দ্বীন ইসলামে সব বিষয়ের ফায়ছালাই রয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তির দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পরিপূর্ণ অনুসরণ করা। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱدۡخُلُواْ فِي ٱلسِّلۡمِ كَآفَّةٗ وَلَا تَتَّبِعُواْ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيۡطَٰنِۚ إِنَّهُۥ لَكُمۡ عَدُوّٞ مُّبِينٞ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা সম্মানিত দ্বীন ইসলামে পরিপূর্ণ প্রবেশ কর, আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করোনা, নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২০৮)
অর্থাৎ জ্বীন ও মানব জাতির জন্যে মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুম মোতাবেক চলতে হলে যা কিছুর দরকার অর্থাৎ তার ব্যক্তিগত পর্যায় হতে শুরু করে, রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত এবং তার পায়ের তলা হতে মাথার তালু পর্যন্ত, তার হায়াত হতে মৃত্যু পর্যন্ত, এক কথায় ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত সমস্যারই উদ্ভব হোক না কেন, সকল বিষয়েরই ফায়ছালা বা সমাধান দ্বীন-ইসলাম উনার মধ্যে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসের মধ্যে রয়েছে।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)