দেশ পরিচিতি: ইন্দোনেশিয়া
, ১৩ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ০৬ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ০৬ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২০ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পাঁচ মিশালী
বিশ্বের বৃহৎ মুসলিম এবং এশিয়ার অর্থনীতিতে একটি সমৃদ্ধ দেশ ইন্দোনেশিয়া। ইন্দোনেশিয়া দেশটি অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মূল ভূখ- থেকে প্রশান্ত মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের মধ্যে অবস্থিত। এটি নিরক্ষরেখা জুড়ে অবস্থিত এবং তাই ভৌগলিকভাবে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধের পাশাপাশি পূর্ব গোলার্ধে ইন্দোনেশিয়া দেশটির অবস্থান। স্থল সীমান্ত রয়েছে মালয়েশিয়া, বোর্নিও, পাপুয়া নিউগিনি এবং পূর্ব তিমুর। সরু প্রণালী দ্বারা আলাদা হয়েছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের সঙ্গে। এটি দক্ষিণে ভারত মহাসাগর দ্বারা, উত্তরে প্রশান্ত মহাসাগর (দক্ষিণ চীন সাগর) এবং এক ডজনেরও বেশি আঞ্চলিক সমুদ্র দ্বারা বেষ্টিত। ইন্দোনেশিয়া ভারত (আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ), অস্ট্রেলিয়া, পাকদু, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের সাথে তার সামুদ্রিক সীমানা ভাগ করে।
আজকে জানবো ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কে কিছু তথ্য। প্রায় ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়া দেশটি “শ্রীবিজয়া” নামে পরিচিত ছিল। পর্তুগিজরা ১৬ শতকের গোড়ার দিকে ইন্দোনেশিয়ায় প্রথম আসে প্রধানত মশলার জন্য। সে সময় ইউরোপে মসলার ব্যাপক চাহিদা থাকায় সেগুলো বিক্রি করে লাভ করা যেত। তাই, পর্তুগিজরা প্রধান মসলা উৎপাদনকারী অঞ্চল মোলুকাস দখল করে নেয়। পরবর্তীতে পর্তুগিজরা অবশ্য এই অঞ্চলে ডাচদের কাছে তাদের আধিপত্য হারিয়ে ফেলেছিল।
পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত তিন বছর জাপানিরা ইন্দোনেশিয়া দখল করে রেখেছিল। ১৯৪৫ সালের ১৭ আগষ্ট স্বাধীনতা লাভ করে। এবং ১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫০ সালে দেশটি জাতিসংঘের ৬০তম সদস্য হিসেবে যোগদান করে।
১.৯১৯.৪৪০ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ইন্দোনেশিয়া দেশটি ১৭,৫০০ টিরও বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত এবং এটি পৃথিবীর বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় দ্বীপপুঞ্জ। জাভা দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত জাকার্তা হলো ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এটি প্রশাসনিক কেন্দ্রের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, আর্থিক, ব্যবসায়িক এবং ব্যবসা কেন্দ্র।
ইন্দোনেশিয়ার এই দ্বীপগুলির মধ্যে সুমাত্রা, জাভা, কালিমান্তান (যা বোর্নিও দ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশ নিয়ে গঠিত), সুলাওয়েসি এবং ইরিয়ান জায়া দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তর দ্বীপগুলি বেশ পাহাড়ী, কিছু চূড়া ১২,০০০ ফুট পর্যন্ত রয়েছে। প্রধান ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপপুঞ্জের এই পর্বতগুলি হল ঘন বনভূমি এবং উৎপত্তিস্থলে আগ্নেয়গিরি। ইরিয়ান জায়াতে সর্বোচ্চ উচ্চতার পর্বত যা ১৬,০০০ ফুটের বেশি রয়েছে।
পাপুয়া প্রদেশে অবস্থিত এবং সুদিরমান পর্বতমালার একটি অংশ হলো পুনকাক জায়া যা ইন্দোনেশিয়ার সর্বোচ্চ বিন্দু। ১৬,৫০২ ফুট (৫,০৩০ মিটার) উচ্চতায় পুনকাক জায়া হল বিশ্বের সর্বোচ্চ দ্বীপের শিখর এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের সবচেয়ে উঁচু পর্বত। সর্বনিম্ন বিন্দু হলো ভারত মহাসাগর (০.০০ মিটার)। ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন উচ্চতম শিখর হলো মাউন্ট টাম্বোরা (৮,৯৩০ ফুট, ২,৭২২ মিটার), এটি একটি সক্রিয় স্ট্র্যাটোভোলকানো যার ১৮১৫ সালের অগ্ন্যুৎপাত রেকর্ড করা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ছিল। তখন সেখানে প্রায় ৭১,০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল। বিস্ফোরণটি প্রায় ২,০০০ কিমি দূরে সুমাত্রা দ্বীপ পর্যন্ত পশ্চিমে শোনা গিয়েছিল এবং বোর্নিও, সুলাওয়েসি, জাভা এবং মালুকু দ্বীপে এর ছাই পড়েছিল।
জানা আছে যে ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়গিরি রয়েছে? হ্যাঁ, এটা সত্যি। দেশটির আগ্নেয়গিরির সংখ্যা জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে। সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মোট সংখ্যার দিক থেকেও ইন্দোনেশিয়া দেশটি বিশ্বের শীর্ষে।
আমরা অনেকে রিং অফ ফায়ারের নাম শুনেছি ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান রিং অফ ফায়ারের দক্ষিণ-পশ্চিম হাত বরাবর অবস্থানের কারণে, ইন্দোনেশিয়ার সীমানার মধ্যে প্রায় ৪০০ টির বেশি আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ৯০টি এখনও কোনো না কোনোভাবে সক্রিয়। সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হল জাভা দ্বীপের মাউন্ট কেলুদ (যা ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৩০ বারের বেশি বিস্ফোরিত হয়েছে) এবং মাউন্ট মেরাপি (যা ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮০ বারের বেশি বিস্ফোরিত হয়েছে)। দুটি মহাদেশীয় প্লেটসহ অসংখ্য টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে এর অবস্থানের জন্য ইউরেশিয়ান প্লেট, অস্ট্রেলিয়ান প্লেট, এবং দুটি মহাসাগরীয় প্লেট: ফিলিপাইন সাগর প্লেট এবং প্যাসিফিক প্লেট, ইত্যাদিতে ইন্দোনেশিয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘন ঘন লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ হল ভূমিকম্প। ২০০৪ সালে ৯.২ মাত্রার ভূমিকম্প যা ভারত মহাসাগরে আঘাত হানে এবং সুনামির সূত্রপাত করে এবং ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে অনেক দ্বীপকে ধ্বংস করে দেয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উৎপাদন বাড়াতে ছাঁটাই করা হয় চা গাছ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সর্দি-কাশি দূর করতে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মধুর গুণাগুণ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের যে গ্রামের জনসংখ্যা চারজন!
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ডাবের পানি খেলে শরীরে কি হয়? ডাবের পানির উপকারিতা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ধানের গোলা এখন কেবলই স্মৃতি
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
১০ হাজার ফুট ওপর থেকেও যেভাবে শিকার দেখতে পায় ঈগল
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওজন আর রক্তচাপ কমায় বিটের রস! বাড়ায় স্মৃতিশক্তি
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবালের সন্ধান মিললো প্রশান্ত মহাসাগরে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্ট্রবেরি খেলে শরীরে যা ঘটে
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে ৫ ভিটামিনের অভাবে অকালে চুল পেকে যায়
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত নূহ আলাইহিস সালাম উনার নৌকার সন্ধান দেবে ৩ হাজার বছরের পুরোনো মানচিত্র!
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)