মুসলমানদের স্বর্ণালী ইতিহাস
দেশ পরিচালনায় আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল অবদান (৪)
, ০৪ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাসন ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ইসলামী হুকুমত ব্যবস্থাপনা। সম্প্রসারিত এক বিশাল মুসলিম খিলাফতী শাসন ব্যবস্থাকে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের নির্দেশ অনুসারে পরিচালনা করার জন্য তিনি সামরিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং আইন বিভাগের কাঠামোতে পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করেন; এমন কিছু বিষয় প্রবর্তন করেন যা মানুষ কল্পনা করতে পারে না। তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি রক্তচোষা গণতন্ত্র, রাজতন্ত্রের পরিবর্তে ইসলামী সর্বোচ্চ আদর্শের ভিত্তিতে খলীফা নিযুক্তি, পরামর্শ সভা (মুজলিসে শূরা)’র মতানুসারে প্রশাসনিক কাঠামো ও কার্যক্রম গ্রহণ, সাক্ষ্য, একতা, মুসলিম ভ্রাতৃত্বের আদর্শে জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন, খলীফা উনার কার্যে জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ দেয়ার অধিকার, খলীফা উনার জবাবদিহিতা ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ জারী করেন। উনার খিলাফতী কার্যক্রমের প্রধান কিছু দিক উপস্থাপন করা হলো-
বিচার বিভাগ ও ক্বাযী নিয়োগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বিচার বিভাগের গঠন এবং উন্নতি বহুলাংশে প্রশাসনিক মেধার জন্য সম্ভবপর করেছিলেন। বিচারব্যবস্থা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি প্রত্যেক প্রদেশে একজন প্রধান ক্বাযী (ক্বাযী-উল কুযাত বা প্রধান বিচারক) এবং প্রত্যেক জেলায় একজন ক্বাযী নিযুক্ত করেন। পূর্বে প্রাদেশিক গভর্নর (ওয়ালী) বিচার বিভাগের কার্যাবলীর পরিচালনা করতেন। ইসলামী আদর্শে আদর্শবান, নিষ্কলুষ চরিত্র, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নৈতিক শক্তিকে বলীয়ান, সুস্থ, শিক্ষিত ও শরীয়ত উনার সম্যক জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের খলীফা মজলিসে শূরার সাথে পরামর্শ করে বিচারক বা ক্বাযী নিযুক্ত করতেন। ক্বাযী বা বিচারকদের দুর্নীতি ও প্রলোভন থেকে দূরে রাখার জন্য যোগ্যতানুসারে উচ্চাহারে বেতন দিতেন এবং নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য খলীফা সর্বপ্রকার আশ্বাস প্রদান করতেন। বিচারের জন্য কোনো প্রকার ফি প্রদান করতে হতো না এবং মসজিদে সাধারণত মজলিসের সভা অনুষ্ঠিত হতো। পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস অনুসারে ইসলামী বিশেষ জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের মতামত মোতাবেক বিচার পরিচালিত হতো।
কুফা, বসরা, দামেস্ক ও হিমসের জন্য বিশেষ বিচারক নিযুক্ত করেছিলেন। খলীফা বিচার বিভাগের সর্বময় ব্যক্তি ছিলেন এবং প্রয়োজনে নিম্ন আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতেন। বিধর্মীদের বিচারকার্য তাদের নিজস্ব অনুশাসনে পরিচালিত করার ব্যবস্থা রেখেছিলেন।
খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কাছে ধনী-দরিদ্র, উ”ু-নীচু সকলেই সমান ছিলেন। কোনো নিকটাত্মীয় কোনো অন্যায় করলে উনাকেও কঠোর শাস্তি দিতে দ্বিধা করেননি। তিনি স্বীয় পুত্র হযরত আবু সামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকেও ৮০টি বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ বিভাগ:
খুলাফায়ে রাশিদীন উনাদের প্রথম দিকে কোনো স্বতন্ত্র পুলিশ বিভাগ রাখেননি। অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধ করে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সর্বপ্রথম একটি সুগঠিত পুলিশ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেন। এই বাহিনীর কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দিওয়ান আল আহদাত নামে একটি পুলিশ বিভাগের সূচনা করেন। চুরি, ডাকাতি বন্ধ করা, ওজন পরীক্ষা, মাদকদ্রব্য বিক্রয় বন্ধ ও অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা পুলিশ বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব ছিল। পুলিশ প্রধানের নাম রেখেছিলেন ছাহেব উল আহদাত।
-মুহম্মদ আবদুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)