দেশ পরিচালনায় আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল অবদান (২)
, ২৮ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৫ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১৩ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার শাসন ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল ইসলামী হুকুমত ব্যবস্থাপনা। সম্প্রসারিত এক বিশাল মুসলিম খিলাফতী শাসন ব্যবস্থাকে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের নির্দেশ অনুসারে পরিচালনা করার জন্য তিনি সামরিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক এবং আইন বিভাগের কাঠামোতে পূর্ণাঙ্গ রূপ দান করেন; এমন কিছু বিষয় প্রবর্তন করেন যা মানুষ কল্পনা করতে পারে না। তিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকে সমস্ত সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
তিনি রক্তচোষা গণতন্ত্র, রাজতন্ত্রের পরিবর্তে ইসলামী সর্বোচ্চ আদর্শের ভিত্তিতে খলীফা নিযুক্তি, পরামর্শ সভা (মুজলিসে শূরা)’র মতানুসারে প্রশাসনিক কাঠামো ও কার্যক্রম গ্রহণ, সাক্ষ্য, একতা, মুসলিম ভ্রাতৃত্বের আদর্শে জনকল্যাণমূলক ব্যবস্থা প্রবর্তন, খলীফা উনার কার্যে জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ দেয়ার অধিকার, খলীফা উনার জবাবদিহিতা ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য সমূহ জারী করেন। উনার খিলাফতী কার্যক্রমের প্রধান কিছু দিক উপস্থাপন করা হলো-
প্রদেশে বিভক্তীকরণ ও শাসনকর্তা নিয়োগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি শাসনব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিশাল মুসলিম সাম্রাজ্যকে ১৪টি প্রদেশে বিভক্ত করেন। যথা: মক্কা শরীফ, মদীনা শরীফ, সিরিয়া, আলজেরিয়া, বসরা, কূফা, মিসর, প্যালেস্টাইন, ফারস, কিরমান, মাকরান, খোরাসান, সিজিস্তান ও আজারবাইজান। শাসনব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণের ফলে দূরবর্তী অঞ্চলেও সুষ্ঠুভাবে ইসলামী শাসনব্যবস্থার নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিটি প্রদেশকে জেলা ও মহকুমায় বিভক্ত করা হয়। প্রদেশের শাসনকর্তাকে ওয়ালী বা আমীরে শো’বা এবং জেলার শাসনকর্তাকে আমীন বলা হতো।
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মজলিসে শূরা বা উপদেষ্টা পরিষদের সাথে পরামর্শ করে সর্বোচ্চ ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে প্রদেশের শাসনকর্তা ও জেলার শাসনকর্তা নিয়োগ করতেন। উনারা তাদের কার্যের জন্য আমিরুল মু’মিনীন উনার নিকট দায়ী থাকতেন। প্রতি বছর হজ্জ পালনের সময় শাসনকর্তাগণ পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফ আগমন করে উনাদের কার্যকলাপের বিবরণ এবং আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রদান করতেন। তাছাড়া প্রাদেশিক সরকারের কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কর্মচারী নিযুক্ত করতেন। যেমন কাজী (বিচারক), কাতিব (প্রধান উপদেষ্টা), কাতিব উল দিওয়ান (প্রধান সামরিক উপদেষ্টা), ছাহিব উল খারাজ (রাজস^ উপদেষ্টা), ছাহিব উল আহদাত (পুলিশ উপদেষ্টা), ছাহিব উল বাইতুল মাল (কোষাধ্যক্ষ) ইত্যাদি।
বেতন-ভাতা বিভাগ:
খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করেই ক্ষান্ত ছিলেন না। বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, মেধা এবং তাক্বওয়া-পরহেজগারী ও সম্মানিত বিশেষ ব্যক্তি অনুসারে বেতন-ভাতা নির্ধারণ করে দেন। তিনি বয়স্ক ভাতারও প্রচলন করেন। এজন্য আলাদ একটা বায়তুল মাল বিভাগ করেছিলেন, যেখান থেকে সবাইকে বেতন-ভাত দেয়া হত। তাছাড়া দুর্নীতি এবং অনিয়ম প্রতিরোধের জন্যও তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নেন। প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে সর্বোচ্চ ৫০০০ দিরহাম পর্যন্ত বেতন-ভাতা দিতেন। এমন বেতন-ভাতা দিতেন যে সবাই সবার বেতন-ভাতায় সন্তুষ্ট ছিলেন।
-মুহম্মদ আবদুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৩)
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১২)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৫)
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)