দেশের সিংহভাগ চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক সফলতা অর্জন করছে দুগ্ধখাত। শুধু আমদানি নির্ভরতা কাটানোই নয় বরং উল্টো রফতানীখাতে বিশাল সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য চাই সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও যথাযথ সক্রিয় সহযোগিতা।
, ০৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২২ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদফতর এর তথ্য মতে, দেশে প্রতি বছর ৯০ লাখ ২৪ হাজার টন দুধ উৎপাদন হচ্ছে কিন্তু চাহিদা রয়েছে ১ কোটি ৫৮ লাখ টন অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ টনের কিছু বেশি। এর মানে হলো বাংলাদেশ তার মোট প্রয়োজনের মাত্র ৬৩ শতাংশ উৎপাদন করছে এবং বাকি ৩৭ শতাংশ ঘাটতি পূরণের জন্য প্রতি বছর প্রায় এক হাজার পাঁচশ’ কোটি টাকার দুধ আমদানি করছে। বিশ্লেষকগণ মনে করছে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা গুঁড়া দুধ আমদানিতে ব্যয় হয় তা যদি স্থানীয় দুগ্ধ উন্নয়নে ঋণ কিংবা প্রণোদনা হিসাবে ব্যবহৃত হতো তা হলে উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে চাহিদার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হতো।
দেশে প্রায় ৫৮ হাজার ৫৯০টি ফার্ম রয়েছে। যেখানে দুগ্ধ উৎপাদন কাজে সম্পৃক্ত লক্ষাধিক দেশীয় খামারি। যারা নিজস্ব প্রচেষ্টায় দেশের উন্নয়নের পথে অবদান রেখে চলেছেন। তারা শুধু নিজেদের বেকারত্ব মোচনই নয়, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতের মাধ্যমে দেশীয় এ উদীয়মান শিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।
গত ১০ বছরে দেশে দুধের উৎপাদন ও চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু চাহিদার পুরো অংশ দেশীয় দুধ দিয়ে মেটানো সম্ভব হচ্ছেনা। ফলে বিদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার গুড়ো দুধ আমদানি করতে হচ্ছে। আর এই আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের কারণে দেশীয় দুগ্ধ শিল্পের বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্কসহ প্রভৃতি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যদি কোনো কৃষিজ খাতে সম্ভাবনা দেখা দেয় তাহলে সেসব দেশের সরকার বাজেটে আলাদাভাবে সেইসব খাতে বরাদ্দ দিয়ে সেইসব সম্ভাবনাকে বিকশিত করে। কিন্তু বাংলাদেশের বেলায় একেবারেই উল্টো। এখানে কোনো খাতে সম্ভাবনা দেখা দিলে তা বিকশিত তো দুরে থাক উল্টো ওই খাতকে আমদানিনির্ভর করার জন্য উঠে পড়ে লাগে একটি মহল। যার মধ্যে এই দুগ্ধশিল্পও অন্যতম। চাহিদার ৭০ ভাগ দেশেই উৎপাদন হওয়ার পরও মাত্র ৩০ শতাংশ আমদানি করা গুড়োদুধই প্রতিবছর দেশের দুগ্ধশিল্পের উপর প্রভাব বিস্তার করে দেশের ডেইরির বাজারে দরপতন ঘটায়। অথচ সরকার যথাযথ উদ্যোগ নিলেই এই ৩০ শতাংশ আমদানিনির্ভরতা দূর করা শুধু সময়ের ব্যাপার।
অন্যদিকে, সম্ভাবনা থাকলেও দুগ্ধ শিল্প বিকশিত হওয়ার পেছনে সরকারের অবহেলা ও বহুমুখী কিছু সমস্যা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবল সংকট, দক্ষ প্রাণি চিকিৎসক/ ভেটেরিনারিয়ান সংকট, স্বল্প সুদে ঋণ না পাওয়া, উৎপাদিত দুধের যৌক্তিক মূল্য না পাওয়া, দুগ্ধশিল্পের জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও ঔষধ না পাওয়া, বিদ্যুতের মূল্য কৃষিভিত্তিক শিল্পের চেয়ে অনেক বেশি আদায় করা, ফার্মে সহজে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়া, দুধ সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরনে সহযোগিতা না পাওয়া, চিকিৎসা, প্রাণি খাদ্য এবং জাত উন্নয়নের পদ্ধতি বিষয়ে সঠিক পরামর্শ না পাওয়া, তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে না লাগানো ইত্যাদি।
বলাবাহুল্য, দেশের ব্যাংক খাতে লাখ লাখ কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে, অফিসের কেরানী থেকে শুরু করে দারোয়ান পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে। অথচ দেশের সিংহভাগ চাহিদা পুরন করে দেশের ডেইরি খাতের সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা ঋণের অভাবে তাদের শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছেনা। অনেক ক্ষেত্রে ঋণ আনতে গিয়ে হয়রানিরও শিকার হচ্ছে। অথচ সরকার এ খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ সুবিধা দিলে একদিকে দুধের উৎপাদন বাড়বে, অন্যদিকে আমদানি বন্ধ হলে বিপুল পরিমাণে বিদেশী মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
সরকারকে মনে রাখতে হবে, ডেইরি শিল্প শুধু দুগ্ধ উৎপাদনেই সীমিত নয়। এর সঙ্গে ব্যাপক ও বহুমুখী কর্মসংস্থান ও শিল্প সম্ভাবনা জড়িত। যেমন দেশব্যাপী ডেইরি ফার্মের মাধ্যমে গাভী পালন হলে বেকার যুবক-যুবতীরা বিদেশগামী হবে না বা চাকরির পেছনে ছুটবে না। স্থানীয়ভাবে ছোট-বড় ডেইরি ফার্ম গড়ে উঠলে গ্রামীণ উন্নয়ন দ্রুত ত্বরান্বিত হবে। ডেইরি ফার্মের খাদ্য চাহিদাকে কেন্দ্র করে আরো ব্যবসা ও কর্মসংস্থান হবে। গাভী পালনের ফলে দেশে গরু উৎপাদন বাড়বে, এতে দেশে গোশতের চাহিদা পূরণ হবে। ভারতীয় গরু নির্ভরতা বন্ধ হবে। বিকশিত হবে আমাদের চামড়া শিল্প। তরল দুধের পাশাপাশি গুঁড়াদুধে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ। আরো একটি বিরাট পরিবেশবান্ধব লাভ আছে। আর সেটি হলো ডেইরি ফার্ম বিকশিত হলে প্রচুর গোবর উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে প্রাকৃতিক সারের ব্যবহার সামগ্রিকভাবে কল্যাণ বয়ে আনবে।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন
২২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রসঙ্গ: হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে শহীদ করা জায়নবাদী তথা বর্বর ইহুদীরা কাপুরুষতার প্রমাণ দিয়ে অতীত ইতিহাস থেকে একের পর এক গুপ্তহত্যা করে আসছে ইহুদীদের গুপ্তহত্যার অনেক নিন্দা, ধিক্কার এবং প্রচারণা ও প্রতিহতের প্রচেষ্টা দরকার (পর্ব-১)
১৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইহুদী-নাছারাদের ষড়যন্ত্রে পড়েই দুনিয়াদার মালানারা বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফ বাদ দিয়েছে। পর্নোগ্রাফি, মাদক থেকে যুব সমাজকে বাঁচাতে চাইলে বেহেশত-দোযখের ওয়াজ শরীফও বেশি বেশি করতে হবে।
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিন দিন বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, খুন আর আত্মহত্যা মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং দ্বীন ইসলাম বৈরিতাই এর মুখ্য কারণ সরকারের উচিত জাতীয়ভাবে দ্বীন ইসলাম উনার আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে এই সামাজিক সমস্যাটি দূরিকরণ করা।
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যথাযথ পদক্ষেপ নিলে ইনশাআল্লাহ আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের প্রথম ধনী দেশ। এক উত্তারাঞ্চলের খনিজ উত্তোলন করলেই গোটা দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। সরকারের নিষ্ক্রিয়তা বরদাশতযোগ্য নয়।
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অবহেলায় কৃষিতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও রাসায়নিক; বাড়ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি। বিলুপ্তির পথে ১৯২ জাতের উপকারী পোকা। সরকারের উচিত অবিলম্বে কীটনাশক ও রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও কৃষিকে বিষমুক্ত করা।
১৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালন করা কী অপরাধ? সংবিধান কী পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনের সুযোগ দেয়নি? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে কী বেপর্দা ও ছবির বিরুদ্ধে বলা হয়নি?
১২ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রতি বছর ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে পারে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক “অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
১১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘ইসলামভীতি মোকাবেলায় জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস’ হলেও কার্যকরী কিছুই হচ্ছে না ইসরাইলকে সহযোগিতা করতে আমেরিকায় ইসলামোফোবিয়ার বিস্তার আরো বাড়ানো হচ্ছে
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুবারক বিস্তারের বিকল্প নেই।
০৯ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)