দুনিয়ার মুলা (২)
, ১৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১০ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আপনাদের মতামত
বাংলাদেশের অনেক তরুণ এখন ইউরোপ-আমেরিকা-কানাডা যেতে চায়। তাদের ধারণা কাফিরের দেশে গেলেই বোধ হয় ভালো থাকা যাবে। সেই মুলার পেছনে সে ছুটতে থাকে। প্রচুর টাকা খরচ করে, পরিশ্রম করে, কষ্ট করে, কিন্তু কাফিরের দেশের মুলা আর তাকে ধরা দেয় না। দেখা যায়, বাংলাদেশে যে ছেলে একা এক রুমে থাকতো, বিদেশে গিয়ে সে ৫-১০ জন এক রুমে গাদাগাদি করে থাকে। বাংলাদেশে যে ছেলে অলসতায় দিন কাটাতো, ইউারোপ-আমেরিকায় হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতে হয়, তারপরও জীবন নির্বাহ কঠিন হয়ে যায়। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে বিদেশের মুলা যত সহজ মনে হয়েছে, বাস্তবে তা তত সহজ না, বরং অনেক কঠিন। হিসেব করে দেখা যায়, যে টাকা খরচ করে বিদেশে যাওয়া হয়েছে এবং সেখানে যে পরিশ্রম হচ্ছে, সেই অর্থ ও পরিশ্রম যদি বাংলাদেশে কেউ করতে পারতো, তবে দেশেই অনেক ভালো থাকতে পারতো।
শুধু বিদেশ কেন, দেশের মধ্যেও দুনিয়ার মুলার ঘাটতি নেই। অনেকে আছে, যারা দ্বীন ভুলে সারা দিন শুধু দুনিয়া, আর দুনিয়া। ভালো স্কুল-কলেজ, ভালো ভার্সিটি, ভালো চাকুরী, ভালো গাড়ি, ভালো বাড়ি, ভালো কারিয়ারের চিন্তা সারাদিন। হালাল-হারাম ভুলে শুধু টাকার বস্তা কামানোর চিন্তা। দ্বীনের জন্য, পরকালের জন্য চিন্তা করার নূন্যতম ফুসরত নেই। এরকম করতে করতে এক সময় বয়স বাড়তে থাকে। এক সময় মৃত্যুর ডাক চলে আসে, জীবন প্রদীপটা ঢুশ করে নিভে যায়।
আমার এক পরিচিত ছেলে ছিলো। বয়সে আমার থেকে ৮-১০ বছরের ছোট। তাকে দেখা হলেই বলতাম, তোমাকে তো দ্বীনি কাজে দেখি না। কোথায় থাকো? উত্তরে সে বলতো- ভাই, খালি একটা সরকারী চাকুরী পাই, তারপর দেখবেন দ্বীনি কাজে কিভাবে সময় দেয়। হঠাৎ একদিন খবর পেলাম, ছেলেটা পানিতে ডুবে মারা গেছে। আফসুস লাগলো, আহারে ছেলেটা সরকারী চাকুরীও পেলো না, আর দ্বীনি কাজেও সময় দিতে পারলো না, তার আগেই পরপারে চলে গেলো।
আমি লক্ষ্য করেছি, আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোও দুনিয়াদার কম নয়। তারা নিজেও দ্বীনের কাজ করে না, আবার দ্বীনি কাজে ব্যস্ত কাউকে দেখলে তাকে কিভাবে বাধা দেয়া যায়, তাকেও কিভাবে দুনিয়াদার বানানো যায়, সেই চেষ্টা করে। আমার নিজের কথাই বলি, তরুণ বয়স থেকে চেষ্টা করতাম নিজে দ্বীনের রাস্তায় থাকার এবং অন্যদের সেই রাস্তায় আনতে। কিন্তু সেই কাজে নানানভাবে বাধা এসেছে। একদিন আমি এক চাচার বাসায় কোন কাজে যাই। সেই চাচা আমাকে দেখে বলবো, “আরে তুমি এগুলো কি করো? এগুলো বাদ দাও। এসব দাড়ি-টুপি ছাড়ো। আমার কাছে আসো। আমি তোমাকে চাকুরী দিবো। অনেক টাকা দিবো। তোমাকে ভালো দেখে বিয়ে করায় দিবো। অনেক কিছুর মালিক হবে।”
একই আশ্বাস আমার আরো দুই আত্মীয় আমাকে দিয়েছিলো। বলেছিলো, এসব দ্বীনি কাজ বাদ দাও। এগুলো করলে ক্যারিয়ার হবে না। আগে ক্যারিয়ার গঠন করো। টাকা পয়সা কামাও, সবাই তোমার কথা শুনবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের দমিয়ে রাখতেই ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ বুলি
২৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এ সকল মুখোশধারীদের আসল পরিচয় অনেকেরই অজানা!
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)