ত্বাহারাতের ইস্তিব্রা ও ইস্তিন্ক্বার আহকাম
, ১৬ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহান আল্লাহ পাক তিনি ত্বাহারাত হাছিলকারীকে মুহব্বত করেন:
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে মুহব্বত করেন, যাঁরা ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিল করতে পছন্দ করেন- যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فِيْهِ رِجَالٌ يُّحِبُّوْنَ أَنْ يَّتَطَهَّرُوْا وَاللّٰهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ
অর্থ: “সেখানে (মসজিদে কুবা শরীফে) এমন অনেক লোক আছেন, যাঁরা ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিল করতে পছন্দ করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিলকারীদেরকে মুহব্বত করেন”। (পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ,পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৮)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হলে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিছু সংখ্যক হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনাদেরকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদে কুবা শরীফে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। সেখানে কিছু সংখ্যক হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম উনাদেরকে দেখে বললেন, “হে হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম, খ¦লিক, মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আপনাদের ত্বাহারাতের প্রশংসা করেছেন। এবার বলুন আপনারা কিভাবে ত্বাহারাত অর্জন করেন। উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ্ পাক উনার ক্বসম! আমরা তো তেমন কিছু জানিনা। আশে পাশের ইহুদীরা পানি ব্যবহার করে। আমরা প্রথমে তিনটি পাথর ব্যবহার করি। এরপর পানি ব্যবহার করি।
এ কথা শুনে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করলেন।
فِيْهِ رِجَالٌ يُّحِبُّوْنَ أَنْ يَّتَطَهَّرُوْا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ
সেখানে (মসজিদে কুবা শরীফে) এমন অনেক লোক আছেন, যাঁরা ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিল করতে পছন্দ করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিলকারীদেরকে মুহব্বত করেন”। সুবহানাল্লাহ্্! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
“তাফসীরে ইবনে কাছীর” কিতাবের ৪র্থ খ-ের ২১৬ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে-
كانوا يجمعون في الاستنجاء بين الحجارة والماء. فأثنى الله تعالى عليهم بذلك.
অর্থ: “মসজিদে কুবা শরীফ উনার অধিবাসীগণ উনারা ইস্তিন্জা করার পর প্রথমে তিনটি পাথর ব্যবহার করে অর্থাৎ তিনটি ঢেলা ব্যবহার করে এরপর পানি ব্যবহার করিেছলেন, এ কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের প্রশংসা করেছেন”। সুবহানাল্লাহ্্! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
“মুসনাদে বাজ্জার” কিতাবের ১ম খ-ের ২১৮ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ: نَزَلَتْ هٰذِهِ الَلآيةُ فِيْ أَهْلِ قُبَاءٍ فِيْهِ رِجَالٌ يُّحِّبُوْنَ أَنْ يَتَطَهَّرُوْا, وَاللهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ. فسألهم رسول الله صلى الله عليه و سلم فقالوا: إنا نتبع الحجارة الماء.
অর্থ: “হযরত ইবনে আববাস রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, “মসজিদে কুবা শরীফ উনার অধিবাসীগণ উনাদের সম্পর্কে
فِيْهِ رِجَالٌ يُّحِّبُوْنَ أَنْ يَّتَطَهَّرُوْا وَاللهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِيْنَ.
এই আয়াত শরীফ নাযিল হয়। অর্থাৎ সেখানে (মসজিদে কুবা শরীফে) এমন অনেক লোক আছেন, যাঁরা ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিল করতে পছন্দ করেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিলকারীদেরকে মুহব্বত করেন”। সুবহানাল্লাহ্্! ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
যখন এই আয়াত শরীফ নাযিল হয়, তখন মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুবাবাসীগণকে জিজ্ঞাসা করলেন, “খ¦লিক মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আপনাদের ত্বাহারাতের প্রশংসা করেছেন। এবার বলুন আপনারা কিভাবে ত্বাহারাত অর্জন করেন। উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা প্রথমে তিনটি পাথর ব্যবহার করি অর্থাৎ প্রথমে তিনটি ঢেলা ব্যবহার করি। এরপর পানি ব্যবহার করি”।
“সুনানে কুবরা” কিতাবের ১ম খ-ের ১০৫ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে-
الاستنجاء بين المسح بالأحجار والغسل بالماء
অর্থ: “ইস্তিন্জা করার পর প্রথমে তিনটি পাথর দিয়ে মুছা অর্থাৎ তিনটি ঢেলা দিয়ে মুছা। এরপর পানি দিয়ে ধৌত করা”। আমভাবে ইহাকেই “ইস্তিন্জা বলে।
অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ اللهَ يُحِبُّ التَّوَّابِيْنَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِيْنَ
অর্থ:“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীদেরকে মুহব্বত করেন এবং ত্বাহারাত বা পবিত্রতা হাছিলকারী উনাদেরকেও মুহব্বত করেন”। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২২)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلطُّهْرُ شَطْرُ الْاِيْمَانِ
অর্থ: “ত্বাহারাত (طَهَارَةٌ) বা পবিত্রতা হাছিল করা ঈমানের অর্ধেক”। (মুসলিম শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)