তিনি নক্বশায়ে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ০৯ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ২০ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ০৬ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত হিসেবে প্রত্যেক বান্দা-বান্দীর হৃদয়েই উনাকে দেখার, উনার যিয়ারত মুবারক লাভ করার, ছোহবত মুবারকে ধন্য হওয়ার আকাঙ্খা রয়েছে। কিন্তু উনাকে সরাসরি দেখার সেই সুজোগ এখন আর নেই। কারণ তিনি আমাদের থেকে জাহিরী পর্দা মুবারক করেছেন। তবে বর্তমানে জমীনে এমন এক সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক রয়েছেন যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরিপূর্ণ নক্বশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো; নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত চরিত্র মুবারক কেমন ছিলেন? তিনি জবাব মুবারকে বলেছিলেন-
كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْاٰنَ
‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত চরিত্র মুবারক ছিলেন, মহাসম্মানিত কুরআন শরীফ উনার অনুরুপ। ’ সুবহানাল্লাহ!
যেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার প্রসঙ্গে এই লেখা উনার মহাসম্মানিত চরিত্র মুবারক সম্পর্কে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তাহলে একমাত্র জবাব হবে- তিনি হচ্ছেন নক্বশায়ে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
তবে কে সেই সুমহান ব্যক্তিত্ব মুবারক?
তিনি আর কেউ নন তিনি হচ্ছেন, লখতে জিগারে সুলত্বানিন নাছীর আলাইহিস সালাম, উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার হৃদয়মনি, আহলে মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যমনি, ভক্ত কুলের মাথার তাজ, আল মানছূর, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত শাহযাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
নিম্নে উনার কয়েকখানা বৈশিষ্ট্য মুবারক উল্লেখ করা হলো:
গঠন বা আকৃতিগত দিক থেকে নক্বশায়ে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
“হযরত জাবির ইবনে সামুরা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি একবার জ্যোৎস্না রাত্রির স্নিগ্ধ আলোতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে একখানা চাদর মুবারক ও ইযার (লুঙ্গি) মুবারক পরিহিত অবস্থায় দেখলাম। তখন আমি একবার উনার দিকে আরেকবার চাঁদের দিকে তাকাতে থাকলাম। মনে হলো তিনি আমার কাছে জ্যোৎ¯œার চাঁদের চেয়েও অধিকতর চমৎকার। ” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ)
একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, কেউ যদি জ্যোৎ¯œা রাত্রির স্নিগ্ধ আলোতে সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে তার জন্যও এরূপ ঘটবে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) উনার আলোর আভায় চাঁদের স্নিগ্ধতাও যেন মøান হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন মাঝারি গড়নবিশিষ্ট। তিনি খুব দীর্ঘ ছিলেন না আবার খাটোও ছিলেন না। উনার মহাসম্মানিত নূরুল মুজাসসাম মুবারক (জিসিম বা শরীর মুবারক) ছিলেন খুব আকর্ষণীয়। উনার মহাসম্মানিত নূরুল ফাতাহ মুবারক (চুল মুবারক) একেবারে কোঁকড়ানো ছিলেন না, আবার একদম সোজাও ছিলেন না, অত্যন্ত সুন্দর ছিলেন। দাঁড়ি মুবারক ছিলেন অত্যন্ত কালো, চোখের পাতা মুবারক ছিলেন লম্বা চুল মুবারক বিশিষ্ট্য, তিনি ছিলেন গন্ধম বা গৌরবর্ণের। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত জিসিম মুবারক উনার দিকে দৃষ্টি দিলে উল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার প্রতিটি বিষয়ই হুবহু দৃশ্যমান হয়। সুবহানাল্লাহ!
ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার দিক থেকে নক্বশায়ে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বভাবগতভাবে মহৎ ছিলেন আর মানুষ অর্থাৎ কায়িনাতের সবার নিকটও মহান মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে, কেউ যখন হঠাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখতো তখন তার ভিতরে ভয়ে কম্পন সৃষ্টি হতো। কিন্তু যখনই উনার সাথে পরিচয় মুবারক হতো, কথা মুবারক হতো তখন তার কাছে মনে হতো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই তার কাছে সবচেয়ে আপন। সুবহানাল্লাহ!
ঠিক সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে কেউ যদি প্রথম দেখে তাহলে তার মাঝেও ভীতি কাজ করে, কম্পন সৃষ্টি হয়। কিন্তু যখন উনার সাথে পরিচয় মুবারক হয়, কথা মুবারক হয় তখন মনে হয় তিনিই তার কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে আপন ব্যক্তিত্ব মুবারক। তিনিই তাকে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে বলার অপেক্ষাই রাখেনা সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার ব্যক্তিত্ব মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কতটা সাদৃশ্যপূর্ণ। উনাকে না দেখলে সেটা ভাষায় প্রকাশ করা কখনোই সম্ভব নয়।
কথা মুবারক বলার ক্ষেত্রেও হুবহু নক্বশা মুবারক:
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন নছীহত মুবারক করতেন, তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুমগণ উনারা এমনভাবে মাথা ঝুঁকিয়ে নীরব থাকতেন যেন উনাদের মাথার উপর পাখি বসে আছে। তিনি যখন নছীহত মুবারক করতেন তখন সকলেই নীরব থাকতেন। উনার নিকট প্রত্যেকের কথাই প্রথম ব্যক্তির ন্যায় ছিলো। তিনি সবার কথাই সমানভাবে শুনতেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
ঠিক সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনিও যখন নছীহত মুবারক করেন, তখন সকলেই অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শুনেন, কেউ উনার নিকট কথা বললে তিনি সবার কথাই সমানভাবে শুনেন, সবাই উনার নিকট কোনো আরযী করে অত্যন্ত ইতমিনান বোধ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে প্রতিটি বিষয়েই তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! যা উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারকে আসলেই হাক্বীক্বীভাবে অনুধাবন করা সহজ ও সম্ভব।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারকে আসার, উনাকে অনুধাবন করার, উনাকে মাল-জান দিয়ে সর্বোচ্চ মুহব্বত মুবারক করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সকল কাফিররাই মুসলমানদের প্রকাশ্য শত্রু
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৫)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬৪)
২৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হালাল ও হারাম উভয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে (১৩)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৭)
২৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)