তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (১)
, ০৫ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ১২ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সকল রোগ-ব্যাধির শিফা (আরোগ্য) দানকারী। উনার ইচ্ছা ও মদদে সব কিছু হয়। তিনি ভালো কাজে সন্তুষ্ট হন। আর বান্দার খারাপ কাজে অসন্তুষ্ট হন। সকল মাখলুকাতই উনার আজ্ঞাবহ। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَإِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِيْنِ.
অর্থ: কোন বান্দা রোগাক্রান্ত হলে মহান আল্লাহ পাক তিনিই তাকে শিফা (আরোগ্য) দান করেন। (পবিত্র সূরা শুয়ারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৮০)
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءٌ فَإِذَا أُصِيْبَ دَوَاءُ الدَّاءِ بَرَأَ بِإِذْنِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ.
অর্থ: প্রত্যেক রোগেরই ঔষধ রয়েছে। যখন তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হয় তখন মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে রোগ নিরাময় হয়। সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ الدَّرْدَاءِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ أَنْزَلَ الدَّاءَ وَالدَّوَاءَ وَجَعَلَ لِكُلِّ دَاءٍ دَوَاءً فَتَدَاوَوْا وَلاَ تَدَاوَوْا بِحَرَامٍ
অর্থ: হযরত আবূ দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি রোগ-ব্যাধি ও ঔষধ উভয়টিই সৃষ্টি করেছেন। আর প্রতিটি রোগেরই ঔষধ সৃষ্টি করেছেন। কাজেই তোমরা ঔষধ সেবন করো। তবে হারাম ঔষধ থেকে বিরত থাকো। (আবূ দাউদ শরীফ: ৩৮৭৪, মিশকাত শরীফ: ৪৫৩৭, বায়হাক্বী শরীফ)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঔষধ সেবন করতে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। তবে কোন হারাম বস্তু ঔষধরূপে গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ نَهَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الدَّوَاءِ الْخَبِيْثِ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নাপাক বা হারাম ঔষধ সেবন বা ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাউদ শরীফ: ৩৮৭০)
ঔষধ সেবন করা, চিকিৎসা করা বা করানো তাওয়াক্কুল অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ভরসা করার খিলাফ নয়। যারা বলে, ঔষধ সেবন করা, চিকিৎসা করা তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী- তাদের এ বক্তব্য শুদ্ধ নয়। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِىْ خُزَامَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَرَأَيْتَ رُقًى نَسْتَرْقِيْهَا وَدَوَاءً نَتَدَاوَى بِهِ وَتُقَاةً نَتَّقِيْهَا هَلْ تَرُدُّ مِنْ قَدَرِ اللهِ شَيْئًا قَالَ هِىَ مِنْ قَدَرِ اللهِ.
অর্থ: হযরত আবূ খুজামা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সম্মানিত পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!!! আমরা যে ঝাড়-ফুঁক করি, ঔষধ সেবন করি, সুস্থতার জন্য যা কিছু গ্রহণ করি তা কি তকদীরকে (মহান আল্লাহ পাক উনার নির্ধারন) রদ বা প্রতিহত করতে পারে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার তকদীরেরই অন্তর্ভুক্ত। (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (২৭)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করতে হবে
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
তাওয়াক্কুল তথা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভরসা করার ফযীলত
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
“সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সুদের ভয়াবহতা
০১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)