তাইয়াম্মুম করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
, ২২ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
যেসব বস্তুর দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয:
মাটি কিংবা মাটি জাতীয় পাক জিনিসের উপর তাইয়াম্মুম করা জায়িয। যেমন- মাটি, বালু, চুনা পাথর, সুরমা, হরিতাল, সুরকি, লাল মাটি, সাদা মাটি, সবুজ মাটি, এঁটেল মাটি, পাকা ইট, মাটির তৈরি যেকোনো পাত্র, পাহাড়ি লবণ, গন্ধ্রক, পাথর ইত্যাদি জাতীয় বস্তুর উপর তাইয়াম্মুম করা জায়িয রয়েছে।
যেসব বস্তুর দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয নেই:
সোনা, রূপা, তামা, লোহা, শিশা, রাং ইত্যাদি খনিজ পদার্থের উপর, চাল, গম ইত্যাদি ফল-শস্যের উপর, তৃণলতা, কাঠ ইত্যাদির ছাইয়ের উপর, ঘাস, কাঠের উপর, পানি হতে উৎপন্ন লবণের উপর, শীলা, বরফের উপর তাইয়াম্মুম জায়িয হবে না।
উল্লেখ্য, সোনা, রূপা, তামা ইত্যাদি খনিজ পদার্থের উপর কিংবা কাঠের উপর ধুলা-বালি মিশ্রিত হলে, তাতে তাইয়াম্মুম শুদ্ধ হবে।
যেসব ওজরের কারণে তাইয়াম্মুম জায়িয:
১. যে ব্যক্তি পানি হতে এক মাইল দূরে থাকে, সে শহরে কিংবা শহরের বাইরে থাকুক, মুসাফির কিংবা মুক্বীম হোক, তার জন্য তাইয়াম্মুম করা জায়িয। আর তা অপেক্ষা কম দূরে পানি থাকলে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে না। যদি পানির স্থানে পৌঁছতে পৌঁছতে পবিত্র নামায উনার ওয়াক্ত ফউত (ওয়াক্ত শেষ) হবার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাইয়াম্মুম করে পবিত্র নামায পড়তে হবে এবং পানির নিকট উপস্থিত হয়ে ওযূ করে পুনরায় পবিত্র নামায আদায় করতে হবে।
২. যদি লক্ষণ কিংবা পরীক্ষা দ্বারা অথবা কোনো পরহেযগার মুসলমান চিকিৎসকের কথায় দৃঢ় ধারণা হয় যে, পানি ব্যবহার করলে পীড়া বৃদ্ধি কিংবা পীড়া উপশমে বিলম্ব হবে, তবে সেক্ষেত্রে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। যদি এরূপ আশঙ্কা না থাকে কিন্তু সে ব্যক্তি ওযূ করতে অক্ষম অথবা সেখানে ওযূ করিয়ে দেয়ার লোক না থাকে, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৩. যদি নাপাক ব্যক্তির অধিকাংশ শরীরে কিংবা ওযূবিহীন ব্যক্তির অধিকাংশ ওযূ অঙ্গে জখম কিংবা বসন্ত থাকে, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। যদি অধিকাংশ শরীর বা অঙ্গ সুস্থ থাকে আর কিছু অংশে জখম বা বসন্ত থাকে, তবে সুস্থ শরীর ও অঙ্গটি ধৌত করতে হবে এবং জখমি অংশে মাসেহ করতে হবে।
আর যদি মাসেহ করলেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তবে তার উপর পট্টি বেঁধে পট্টির উপর মাসেহ করতে হবে। যদি সুস্থ অঙ্গ ধৌত করার সময় জখমি অংশে পানি গড়িয়ে পড়ে এবং ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তবে এক্ষেত্রে শুধু তাইয়াম্মুম করলেই যথেষ্ট হবে।
৪. ওযূ উনার চার অঙ্গের মধ্যে তিনটি অঙ্গে জখম হলে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে। মাথা, মুখম-ল ও দু’হাতে জখম থাকলে, যদিও পরিমাণে জখমের মাত্রা অধিকতর না হয়, তবুও তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে। যদি দু’হাতে জখম থাকে, এক্ষেত্রে যদি মুখম-ল ও দু’পা পানিতে ধৌত করা সম্ভব হয়, তবে তাই করতে হবে, অন্যথায় তাইয়াম্মুম করতে হবে।
৫. যদি অতিরিক্ত শীতের কারণে কারো প্রাণ নাশ কিংবা পীড়া বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে, কিংবা পানি গরম করতে, কিংবা হাম্মামের (যে গরম পানি করে দিবে) বেতন দিতে অক্ষম হয়, তবে তার জন্য তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে।
৬. যদি পানির নিকটে কোনো হিংস্র জন্তু বা শত্রু থাকে, যাতে প্রাণ বিনাশ বা অর্থ লুণ্ঠন হতে পারে, কিংবা সর্প দংশনের আশঙ্কা থাকে অথবা পানির নিকটে কোনো অসৎ লোক কিংবা দুশ্চিরিত্রা মহিলা থাকে, সেখানে গেলে সম্ভ্রমহানী বা অসৎ কাজের আশঙ্কা হয়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৭. কারো নিকট পানি আছে, কিন্তু তা দ্বারা ওযূ করলে নিজে বা তার পালিত পশু অথবা দলভুক্ত কোনো সঙ্গী পিপাসার্ত হতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে তাইয়াম্মুম করা জায়িয হবে।
৮. পানি সঙ্গে আছে কিন্তু তা দ্বারা ওযূ করলে আহারের রুটি বা ভাত ইত্যাদি তৈরি করা যায় না, আর ক্ষুধায় কাতর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এমতাবস্থায় তাইয়াম্মুম জায়িয আছে।
যদি কোনো মুসাফির কুপ বা কুয়ার নিকট উপস্থিত হয়ে পানি তোলার বালতি, রশি কিংবা পানি উঠানোর জন্য যা প্রায়োজন তা না পায়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
৯. কোনো মুসাফিরের ওযূ ভঙ্গ হলো, তার কাপড়ও নাপাক, তার কাছে এ পরিমাণ পানি আছে যে, তা দ্বারা ওযূ অথবা কাপড় ধৌত করা যায়, এমতাবস্থায় ওই পানি দ্বারা সে কাপড় ধৌত করবে এবং তাইয়াম্মুম করে নামায পড়বে।
১০. যদি ওযূ করতে গেলে জানাযা অথবা ঈদের নামাযের জামাত ফউত (শেষ) হবার আশঙ্কা হয়, তবে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খাবার রান্নায় চুলা ও ডেকচি ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাছ সুন্নতী কাঠের লবণদানী
১৮ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হামদ্ শরীফ, পবিত্র না’ত শরীফ ও পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ লেখা, পাঠ করা ও শোনা খাছ সুন্নত মুবারক। গান-বাজনা করা, শোনা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত (৩)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেল
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র হামদ্ শরীফ, পবিত্র না’ত শরীফ ও পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ লেখা, পাঠ করা ও শোনা খাছ সুন্নত মুবারক। গান-বাজনা করা, শোনা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত (২)
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘নাবীয’
১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র হামদ্ শরীফ, পবিত্র না’ত শরীফ ও পবিত্র ক্বাছীদাহ শরীফ লেখা, পাঠ করা ও শোনা খাছ সুন্নত মুবারক গান-বাজনা করা, শোনা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘মাশরুম’
১৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী খাবার সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার অন্যতম সুমহান তাজদীদ মুবারক “সুন্নতী সামা শরীফ”
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন- “সুন্নতী চামড়ার মোজা
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন- “সুন্নতী চামড়ার মোজা
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)