তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ৪রা রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৮ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২০ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ উনার
বরকতময় শানে নুযূল বা অবতীর্ণের কারণ
‘পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ’ উনার বরকতময় শানে নুযূল সম্পর্কে বলা হয়, আরব দেশের এক সম্পদশালী ব্যক্তি যখন মৃত্যুশয্যায় শায়িত ছিল তখন আবূ জাহিল সেখানে উপস্থিত হয়ে মৃতপ্রায় ব্যক্তিকে বললো, তোমার অর্থ-সম্পদ ও সন্তানকে আমার নিকট সোপর্দ করো, তাহলে আমি তোমার অর্থ-সম্পদ ও সন্তানকে যথাযথভাবে দেখাশুনা করবো। যাতে অন্য কেউ উক্ত অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করতে না পারে এবং তোমার সন্তানের উপর যুলূম ও অত্যাচার না করে। তখন মৃতপ্রায় ব্যক্তি আবূ জেহেলকে সব বুঝিয়ে দিল। অতপর উক্ত ব্যক্তি মারা যাওয়ার পর আবূ জাহিল তার অর্থ-সম্পদ হস্তগত করে উক্ত পিতৃহীন সন্তানকে বিতাড়িত করিয়ে দেয়। আবূ জাহিল এরূপ অনেক পিতৃহীন সন্তানদের সাথে অসৎ ব্যবহার করেছে। পরবর্তী সময় উক্ত পিতৃহীন সন্তান ক্ষুধার্ত ও টুটা-ফাটা বস্ত্র পরিহিত অবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট উপস্থিত হয়ে আবূ জেহেলের যুলূমের কথা বর্ণনা করেন। তখন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আবূ জেহেলকে তার যুলূমের বিষয়ে বলে ক্বিয়ামতের ভীতি প্রদর্শন করেন। কিন্তু ধর্মদ্রোহী কাফির আবূ জাহিল ক্বিয়ামত সম্পর্কে মিথ্যারোপ করে। যার ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এ পবিত্র সূরা মুবারক নাযিল করেন।
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, আস্ বিন ওয়ায়িল সাহ্মী অথবা ওয়ালিদ বিন মুগীরা প্রত্যেক সপ্তাহে সম্মান হাছিলের উদ্দেশ্যে দু’টি উট যবাই করে কুরাঈশদের মধ্যে যারা সম্ভ্রান্ত তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতো। সেই মজলিসে একটি ইয়াতীম উপস্থিত হয়ে কিছু খাদ্য চেয়েছিল। এটা দেখে উক্ত কাফির ইয়াতীমকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে গলা ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে বের করে দেয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে এ পবিত্র সূরা মুবারক নাযিল হয়। কারো কারো মতে, পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে প্রথম তিনখানা আয়াত শরীফ নাযিল হয় উল্লিখিত কাফিরদের সম্পর্কে।
আর পরবর্তী চারখানা পবিত্র আয়াত শরীফ পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে উবাই বিন সুলূলের সম্পর্কে নাযিল হয়। কারণ সে প্রকাশ্যে ঈমানদার দাবী করলেও সে মুনাফিকদের সর্দার ছিল। সে এবং তার অনুসারীরা নামায পড়তো কিন্তু নামাযে সুস্তি-কাহিলী করতো। তাদের উদ্দেশ্য ছিল লোক প্রদর্শন। নিরিবিলি হলে এরা নামায-কালাম আদায় করতো না। আর পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে নিষেধ করতো এবং যাকাত দিতে বাধা প্রদান করতো। এ পরিপ্রেক্ষিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ নাযিল করেন।
অতএব, মুসলমানদেরকে এই পবিত্র সূরা মুবারক থেকে ইবরত ও নছীহত হাছিল করতে হবে তাহলো প্রথমত পরকালের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। ইয়াতীমদের প্রতি সৎ ব্যবহার করতে হবে এবং সাধ্য-সামর্থ অনুযায়ী গরীব-মিসকীনদের খাদ্য খাওয়াতে হবে আর অপরের মাল-সম্পদ আত্মসাৎ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এক কথায় হক্কুল ইবাদ যথাযথ আদায় করতে হবে। আর দ্বিতীয়ত নামায খুশু-খুযূ ও হুযূরীর সহিত আদায় করতে হবে। কোন অবস্থাতেই ইবাদত-বন্দেগীতে গাফলতি করা যাবেনা। আর রিয়া থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এবং যাকাত ফরয হলে আদায় করতে হবে। এবং যাদের ফরয হয়েছে তাদেরকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতে হবে। অর্থাৎ হক্কুল্লাহ পরিপূর্ণভাবে আদায় করতে হবে।
অতত্রব, হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ হাক্বীক্বীভাবে আদায় করতে হলে রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হবে। আর রূহানী কুওওয়াত মুবারক হাছিল করতে হলে হক্কানী-রব্বানী শায়খ উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বল্বী যিকির ও ছোহবত ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ মুবারক হাছিল করতে হবে। (তাফসীরে ইবনে জারীর তাবারী শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ, তাফসীরে বাগবী শরীফ, তাফসীরে মুনীর শরীফ, তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ, তাফসীরে কবীর শরীফ, তাফসীরে রূহুল বয়ান শরীফ, তাফসীরে রূহুল মায়ানী শরীফ, তাফসীরে মাযহারী শরীফ, তাফসীরে আমীনিয়া শরীফ, তাফসীরে আযীযী শরীফ, ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন শরীফ, তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, বায়হাকী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ফতহুল বারী শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত তৃতীয় কোনো লিঙ্গের অস্থিত্ব নেই
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৩)
০৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (১)
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রচলিত হারাম রছম করুন বর্জন, পবিত্র দ্বীন পালনেই কামিয়াবী অর্জন
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিস মিন আহলে বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতিপয় মহাসম্মানিত মু’জিযা শরীফ
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত সৌন্দর্য মুবারক ও শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট আরব মহিলাদের নিসবতে ‘আযীম শরীফের প্রস্তাব এবং উনার বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত ওয়াহাব আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত মু’জিযাহ্ শরীফ দর্শন
০২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)