তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ উনার সংক্ষিপ্ত ছহীহ্ তাফসীর বা ব্যাখ্যা মুবারক
‘পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ’ উনার প্রথমেই মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খুছূছিয়ত মুবারক বর্ণনা করেন তথা উনার ইল্ম মুবারক সম্পর্কে সমস্ত ক্বায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি মুত্তালা’ আলাল গইব অর্থাৎ ইলমে গইব উনার অধিকারী। যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার কিতাব ‘মুসলিম শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে যে, ‘আমাকে সৃষ্টির শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইল্ম মুবারক হাদিয়া করা হয়েছে। ’ আর দ্বিতীয়তঃ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাযির-নাযির মুবারক হওয়া সম্পর্কেও জানিয়ে দিলেন যে, তিনি রহমত মুবারক ও নূর মুবারক হিসেবে তথা ছিফতীভাবে সমস্ত ক্বায়িনাতের মধ্যে হাযির-নাযির। সুবহানাল্লাহ! যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন, ‘আমি আপনাকে সমস্ত আলমের জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি। ’
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আমার নূর মুবারক সৃষ্টি করেন, সেই নূর মুবারক থেকে সমস্ত ক্বায়িনাত সৃষ্টি করেন। কাজেই, রহমত মুবারক ও নূর মুবারক হিসেবে ছিফতীভাবে তিনি হাযির-নাযির।
‘পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ’ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি কাফির ও মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেন অর্থাৎ কাফির ও মুনাফিকদের কুফরী ও নেফাকি লক্ষণগুলি বর্ণনা করেছেন।
অর্থাৎ প্রথম তিন পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি কাফিরদের সম্পর্কে বলেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তো জানেন ও দেখেন, কাফিরদের কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আপনার উম্মতদেরকে সতর্ক করার জন্য সে বিষয়গুলো জানানোর প্রয়োজন রয়েছে। কাফিরদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা পরকালকে অস্বীকার করে। দ্বিতীয়তঃ তারা ধন-সম্পদের মোহে তথা কুফরীর কারণে গরীব, মিসকীন, ইয়াতীম, অনাথ, ফকীর-ফুকারাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা করে। তৃতীয়তঃ তারা শক্ত বখীল বা কৃপণ। যার কারণে গরীব-মিসকীনদেরকে খাদ্য খাওয়ায় না, দান-খয়রাত করে না এবং অন্যদেরকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করে না। আর যদি কখনোও কাফিরেরা ইয়াতীম, মিসকীন, গরীব-গুরাবাদের সাথে সৎ ব্যবহার করে, খাদ্য খাওয়ায় এবং খাওয়ানোর জন্য ও সৎ ব্যবহার করার জন্য বলে তাহলে সেটা তাদের বাহ্যিক বা লোক দেখানো আমলের অন্তর্ভুক্ত।
পরবর্তী পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেন, নেফাকীর কারণে তাদের নামায এবং সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী তাদেরকে জাহান্নামে পৌঁছাবে। কারণ তারা তাদের নামায-কালাম, ইবাদত-বন্দেগীতে কখনোই পূর্ণ মনোযোগী হয় না।
তারা সমস্ত ইবাদত-বন্দেগীর মধ্যেই সুস্তি-কাহিলী ও গাফলতি করে। কেননা তারা কোন ইবাদত-বন্দেগীই মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের জন্য করে না। যা পরবর্তী পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারা সমস্ত ইবাদত-বন্দেগী করে মানুষকে দেখানোর জন্য। অর্থাৎ রিয়াকার হিসেবে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, الرياء شرك خفى ‘রিয়া হচ্ছে গুপ্ত শিরক। ’ (মিশকাত শরীফ) পরবর্তী পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কাফির ও মুনাফিকরা মানুষকে নেক কাজে বাধা দেয়। অর্থাৎ তারা পরস্পর পরস্পরকে সহানুভূতিশীলতা ও সহমর্মিতা থেকে ফিরিয়ে রাখে। যার কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য-সহযোগিতা করতে বাধা দেয় এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ফরয হুকুম যাকাত আদায়ের ব্যাপারেও নিষেধ করে। ‘পবিত্র সূরা মাঊন শরীফ’ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ সম্পর্কে বান্দাদেরকে সতর্ক করেছেন। যাতে তারা কোন অবস্থাতেই হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ আদায়ে কোনো প্রকার ত্রুটি না করে। আর কোন আমলই যেন গইরুল্লাহর জন্য না করে। অর্থাৎ সমস্ত আমলই যেন মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের উভয়ের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের উদ্দেশ্যে করে। তাহলেই তারা কামিয়াব হবে। অন্যথায় জাহান্নামী হওয়া ব্যতীত কোন উপায় থাকবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৬)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (৩)
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র খুতবা উনার হুকুম-আহকাম
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওহাবীদের চক্রান্ত উন্মোচন (৬)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানদেরকে ঈমান থেকে সরিয়ে দিতে কাফিরগুলো সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: সউদী রাজ পরিবারের পূর্বপুরুষ ইহুদী যে কারণে (২)
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র খুতবা উনার হুকুম-আহকাম
২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)