তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম পবিত্র কুরআন শরীফ উনার ছহীহ্ তরজমা
(পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ)
, ২৮শে জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ উনার সংক্ষিপ্ত ছহীহ্ তাফসীর বা ব্যাখ্যা মুবারক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ’ উনার মধ্যে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খুছূছিয়ত মুবারক বর্ণনা করেছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও বর্ণিত রয়েছে যা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেছেন।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
من يرد الله به خيرا يفقه فى الدين وانـما انا قاسم والله يعطى.
“মহান আল্লাহ পাক তিনি যার ভালাই চান তাকে দ্বীনের বিশুদ্ধ বা ছহীহ্ বুঝ বা সমঝ দান করেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন বণ্টনকারী আর মহান আল্লাহ পাক তিনি হলেন দাতা। ” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
‘পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ’ উনার প্রথম আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে বিষয়টিই উল্লেখ করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি আপনাকে কাওছার হাদিয়া করেছি। ”
‘কাওছার’ শব্দের লক্ষ-কোটি অর্থ রয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে- ‘হাউযে কাওছার’। যার পানি পান করলে বেহেশতে প্রবেশ করা পর্যন্ত পানির পিপাসা লাগবে না।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে, ‘খইরে কাছীর’। যার অর্থ হচ্ছে- সমস্ত ভালাই বা সর্বোত্তম নিয়ামত। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টির মধ্যে সবচাইতে উত্তম যে সম্পদ, বস্তু, বিষয় ইত্যাদি রয়েছে তা-ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যবহার মুবারক-এ দেয়া হয়েছে। অপরদিকে যা কিছু মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যবহারে এসেছে তা-ই সর্বোত্তম হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! যেমন কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, সমস্ত ইমাম ও মুজতাহিদ উনারা ইজমা করেছেন যে, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক উনার সাথে যে মাটি মুবারক স্পর্শ করে আছে সে মাটি মুবারক এবং যা কিছু স্পর্শ মুবারক-এ এসেছে, সে সমস্ত বিষয় দ্রব্য সামগ্রী, পদার্থ উনাদের মর্যাদা বা সম্মান মুবারক সম্মানিত আরশে মুয়াল্লা উনার চাইতেও লক্ষ-কোটি গুণ বেশী। সুবহানাল্লাহ!
তৃতীয়টি হচ্ছে- ‘জামীউন নিয়ামত’ যার অর্থ হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত কিছু দিয়েছেন। যা সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত মাখলূকাতের প্রয়োজন বা চাহিদা। যার একমাত্র বণ্টনকারী স্বয়ং হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। উনার মাধ্যম ব্যতীত মাখলূকাত কোন প্রকার কোন নিয়ামত লাভ করতে পারবে না।
পরবর্তী পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “এর শুকরিয়া স্বরূপ নামায পড়–ন এবং কুরবানী করুন। অর্থাৎ বদনী ও মালী ইবাদতের দ্বারা তথা সমস্ত কিছু দিয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করুন। ” প্রকৃতপক্ষে আদেশটি উম্মতকে করা হয়েছে। কারণ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সব সময় শোকর মুবারক উনার উপরই রয়েছেন। কেননা উনার খাছ মাক্বাম মুবারকই হচ্ছে শোকর মুবারক উনার মাক্বাম।
অতএব, উম্মত যে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়েছে সেজন্য তারা মাল ও জান সর্বস্ব দিয়ে অর্থাৎ যাহিরী-বাতিনী, জিসমানী-রূহানী সবদিক দিয়ে সববিষয়ে সর্বাত্মকভাবে যেন শুকরিয়া আদায় করে। এবং খিদমত ও সম্মান করে। তাহলেই তারা নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিয়ামত মুবারক উনার হিস্সা লাভ করতে পারবে। আর যদি যথাযথ সম্মান, তা’যীম-তাকরীম, খিদমত ও শুকরিয়া আদায় না করে তাহলে তার বিপরীত অবস্থা হবে।
পরবর্তী আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি সে বিষয়টিই বলেন। অর্থাৎ নিশ্চয়ই আপনার যারা শত্রু অথবা যারা বিদ্বেষ পোষণ করে অথবা আপনার সাথে দ্বিমত পোষণ করে অথবা আদেশ-নির্দেশ মুবারক পালন না করে খিলাফ আদেশ-নির্দেশ করে অথবা আপনার তা’যীম-তাকরীম মুবারক, সম্মান মুবারক না করে, খিদমত মুবারক না করে, শুকরিয়া মুবারক আদায় না করে বিপরীত আক্বীদা পোষণ করে এবং আমল করে তারা সর্বাবস্থায় ইহকাল ও পরকালে লাঞ্ছিত হবে, অপমানিত হবে, অবহেলিত হবে, ধিকৃত হবে এবং নির্বংশ হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (৫)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মুহব্বত ঈমান, আর উনাদের সমালোচনা করা লা’নতগ্রস্ত হওয়ার কারণ
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)