স্থাপত্য
ঢাকায় ৩০০ বছর আগের মুঘল আমলের ঐতিহাসিক মসজিদ
, ২৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১২ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন

ব্যস্ত ঘিঞ্চি পুরনো ঢাকার চিরায়িত পথে বর্ণিল জীবন আর ঢাকার পরিচয় বহনকারী লালবাগ কেল্লার মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে গুরত্বপূর্ণ ইতিহাস-লালবাগ শাহী মসজিদ। আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের দলের সাথে যেন প্রতিদিন প্রতি মুহুর্ত সৌন্দর্য বিচ্ছুরণ করে লালবাগ শাহী মসজিদের সুউচ্চ মিনার। আজ থেকে প্রায় ৫২ বছর পূর্বে তৎকালীন পাকিস্থান আমলে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্যে সংযোজিত হয় মিনারটি।
ঢাকার পুরনো মসজিদগুলোর মধ্যে লালবাগ শাহী মসজিদ সবচেয়ে বড়। এটি ফররুখ মসজিদ নামেও পরিচিত। এই ঐতিহাসিক মসজিদটি মুঘল আমলের অন্যতম এক নিদর্শন। পুরান ঢাকার লালবাগ কেল্লার দক্ষিণ-পূর্ব কোণে অবস্থিত এটি।
সুবাদার আজিমুশ্বানের প্রতিনিধি হিসেবে তৎকালীন মুঘল বাদশাহ আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রপৌত্র ফররুখ ১৭০৩ খৃ: মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের ডিজিটাল বোর্ডে নির্মাণ সাল প্রদর্শন করা রয়েছে।
খাজা আব্দুল গণি এর উদ্যোগে ১৮৭০ খৃ: প্রথম লালবাগ শাহী মসজিদেও বড় ধরনের পুনঃ নির্মাণের কাজ সম্পাদন করেন। পরে আরও কয়েক দফায় সংস্কার কাজ হয়। যার ফলে লালবাগ কেল্লার ভেতরের দিকের প্রবেশপথ ছাড়া আর কিছু দেখে অনুমান করার উপায় নেই যে এটি এতো পুরনো মসজিদ। নির্মাণ কাজে ব্যবহার করেন ইট ও পাথর যা বর্তমানেও অক্ষুন্ন অবস্থায় রয়েছে।
মসজিদের প্রায় প্রতিটি অংশই সংস্কার করা হয়েছে। বাংলাপিডিয়া বা ঢাকার ইতিহাসভিত্তিক বইগুলোতেও এ মসজিদ সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তেমন কোন তথ্য নেই। আশির দশকে মসজিদটিকে সম্পূর্ণ মেরামত করা হয়। তখন মসজিদের পূর্বদিকে সমতল চুন-সুরকির ঢালাই ছাদসহ বড় সম্প্রসারণের কাজ করা হয়। বেশ উঁচু প্লাটফর্মের ওপরে নির্মিত ঐতিহাসিক এই মসজিদটি।
মসজিদের আয়তন :
মূল মসজিদটি ৪৭.৮৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪.৩৩ মিটার প্রস্থেও মূল মসজিদ ১০.০৭ মিটার পুরত্বের দেয়ালে মোড়ানো। আমাদের এই উপমহাদেশে যতো মুঘল স্থাপনা আছে তার মধ্যে লালবাগ শাহী মসজিদ সম্ভবত একমাত্র স্থাপনা যাতে কাঠের ভিম ব্যাবহার করে সমতল ছাদ বিশিষ্ট করে নির্মানকরা হয়।
মসজিদের বর্তমান অবস্থা :
বর্তমান মসজিদটি ইসলামিক ঐতিহ্য এবং আধুনিক স্থাপত্যের একটি বিরল নান্দনিক উদাহরন। পুরো মসজিদ জুড়ে যে দিকেই দৃষ্টি ফেরানো হোকনা কেন মরিশ মাল্টিফোয়েল পিলারের সু-সজ্জিত অবস্থান যে কোন মুসল্লি বা ভ্রমনকারীকে অন্যরকম ভালো লাগার উপলব্ধি দিবে। মসজিদের ভিতরে ঢুকতেই চোখে বিশাল একটি অজুখানা, গোছানো ছোট্ট পুকুর সদৃশ এ অজুখানায় যেন শাহী মসজিদের প্রাণ। হাজারো মুসলমানের পবিত্র হওয়ার চেষ্টা ও শান্তি অনুভবে মুখর। মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে পবিত্র সূরা আর রহমান শরীফ খচিত নকশা।
মসজিদটির ভিতরটি যেমন বড় ও সুন্দর তেমনি এর নকশায় স্থাপত্যের মুন্সিয়ানা ও স্পষ্ট। শাহী মসজিদের মেহরাবের অলংকরণের জন্য “মুকারনাসফিল্ডণিশ” পদ্ধতি ব্যাবহার করা হয়েছে। নানা কারু কাজ; জ্যামিতিক আকার আকৃতির সমন্বয় এর মেহরাবকে আরো বেশি দৃষ্টি নন্দন করেছে। মেঝেতে বসানো পুরনো টাইলস এর সাথে নতুন টাইলস বিন্যস্ত করে অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে এর সৌন্দর্য।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রাচীন মসজিদের অজানা ইতিহাস
০৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায় আশুলিয়ার জেবুন নেসা মসজিদ
২১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (৩)
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (২)
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ঐতিহাসিক বানিয়াবাসী মসজিদ (১)
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১১)
২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ (৩)
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১০)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)