জানেন কি? মুসলমানদের হাতেই তৈরী হয়েছিলো আজকের সুইজারল্যান্ড
, ১৩ মার্চ, ২০২৩ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আপনাদের মতামত
সুইজারল্যান্ড ১৬৪৮ সালে রোমানদের থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। দেশটির পশ্চিমে ফ্রান্স, উত্তরে জার্মানি, পূর্বে অস্ট্রিয়া ও দক্ষিণে ইতালি অবস্থিত। দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ৮৩ লাখ। সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বার্ন। দেশটির জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশই জার্মানির অধিবাসী। এরা জার্মান ভাষায় কথা বলে। ২০% লোকের ভাষা ফ্রান্স, আর ৪% মানুষের ভাষা ইতালি। সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় ভাষা ফ্রান্স, জার্মান, ইতালিয়ান ও রোমান।
ইউরোপে, বিশেষ করে স্পেনে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ঘটে ঈসায়ী ৭১১ সালে। সেনাপতি তারিক বিন জিয়াদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও মুসার বিন নুসাইর রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাদের নেতৃত্বে মুসলমানরা স্পেন বিজয় করেন। স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করলে সুইজারল্যান্ডে মুসলিম শাসন কায়েম হয়। মুসলমানরা প্রায় ৭০০ বছর স্পেন শাসন করে। ঈসায়ী ৮৮৯ সালে ২০ জন আরব বণিক বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে স্পেন ত্যাগ করেন। তাঁদের জাহাজটি ঝড়ের কবলে পড়লে তাঁরা কোনোমতে উপকূলে ভিড়েন এবং তাঁরা আলপসের ঘন বনাঞ্চলে আশ্রয় নেন। এরপর তাঁরা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন এবং একটি ক্ষুদ্র এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। বর্তমানে এই এলাকাটিই সুইজারল্যান্ড রাষ্ট্র বলে পরিচিত।
আরব বণিকদের আগমনের ফলে মুসলমানরা এই এলাকায় সম্মানিত ইসলামী সমাজ কায়েম করার সুযোগ পায়। তারা তখন আলপস পর্বতমালার বিভিন্ন স্থানে টাওয়ার নির্মাণ করেছিল। এই পর্বতমালার একটি বড় অংশ আরবদের অধিকারে থেকে যায়।
১৪ শতকের মাঝামাঝি সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক মুসলমান সুইজারল্যান্ডে গিয়ে বসবাস করতে থাকে। বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অনেক মুসলমান দেশটিতে পাড়ি জমায়। এরপর মুসলমানদের জীবনাচার এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে স্থানীয় অনেক মানুষ দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সুইডিশ কবি ফ্রিসহফ সোওয়ান। তিনি ‘ডে অ্যান্ড নাইট’ বইয়ের লেখক। দ্বীন ইসলাম গ্রহণের আগে ফ্রিসহফ সোওয়ান আলজেরিয়ায় চলে যান এবং সেখানে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময় সোওয়ান সুইজারল্যান্ডে প্রত্যাবর্তন করেন এবং দ্বীন ইসলাম প্রচারের কাজে মনোনিবেশ করেন। সুইজারল্যান্ডে দ্বীন ইসলাম প্রচারের কাজ এগিয়ে গেলে অনেক সুইস অধিবাসী দ্বীন ইসলাম গ্রহণে এগিয়ে আসেন। ফলে দিন দিন মুসলমানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। তা ছাড়া দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকেও মুসলমানরা প্রবাসী হিসেবে সুইজারল্যান্ডে এসে বসতি স্থাপন করে।
১৯৫১ (১৩৭১ হিজরি) সালের এক হিসাব অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল মাত্র দুই হাজার। ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে ব্যাপকসংখ্যক মুসলমানের উপস্থিতি লক্ষ করা যায় জেনেভায়। এটি আলপস ও জুরা পর্বতমালাবেষ্টিত একটি আধুনিক শহর। এর জনসংখ্যা এক লাখ ৯৪ হাজার। ১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে সুইজারল্যান্ডে ব্যাপক হারে মুসলিম নাগরিক বৃদ্ধি পায়। ফলে ১৯৮০ সালে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা যেখানে ছিল ৫৬ হাজার (জনসংখ্যার ০.৯ শতাংশ), তা ১৯৯০ সালে বেড়ে হয় প্রায় ছয় গুণ। বর্তমানে দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা চার লাখ। এর মধ্যে ৮৮.৩ শতাংশ প্রবাসী মুসলিম। প্রবাসীদের ৫৬.৪ শতাংশ সাবেক যুগোস্লাভিয়ার নাগরিক (বিশেষ করে বলকান ও কসোভার নাগরিক), ৬ শতাংশ তুরস্ক ও ৩.৪ শতাংশ আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আগত। মুসলমানদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার স্থানীয় অধিবাসী। তবে প্রকৃতপক্ষে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি।
সুইজারল্যান্ডে ইসলামের প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলেছে। সুইজারল্যান্ডের বিশেষজ্ঞরা মনে করছে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ট হয়ে দাড়াবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
১০ ব্যক্তি শয়তানের বন্ধু
২১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যুব সমাজকে খেলাধুলার প্রতি ঝুঁকিয়ে দেয়া একটি ভয়াবহ চক্রান্ত
২০ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, তাহলেই রাজধানী হবে সমস্যামুক্ত
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুলুমতন্ত্র থেকে খালিছ ইস্তিগফার-তওবা করুন
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উপজাতিদের যেভাবে উস্কানি দিচ্ছে এনজিওগুলো
১৮ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হিন্দুদের পূর্বপুরুষরাও একসময় মুসলমান ছিলো
১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাবার খাবেন কোথায়?
১৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের রক্তাক্ত ইতিহাস, যার ধারাবাহিকতা এখনও চলমান
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
জায়নবাদী ইহুদী পরিকল্পনার গোপন দস্তাবেজ
১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিধর্মীরা কখনোই চায়নি, এখনও চায় না মুসলমানদের উন্নতি
১৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ স্টাইলের শাসকগোষ্ঠী দিয়ে উন্নয়ন নয়, লুটপাটই হবে
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুসলমানরা তাদের সন্তানদের কি শেখাচ্ছে, কি শেখানো উচিত? (২)
১১ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)