জর্দানে গোশতের শরবতে সাহরী-ইফতার
, ১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পাঁচ মিশালী

রাজকীয় জর্দানে রোযার মাসের আমেজটাই ভিন্ন। জর্দানের অধিবাসীরা একটু ভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের চর্চা করে। জর্দানের জগদ্বিখ্যাত ইফতারের একটি হলো, গোশতের শরবত। দেশি গম ও গোশত দিয়ে তৈরি করা হয় এই শরবত। রমাদ্বান শরীফে হরেক রকম কফিও তৈরি হয় আম্মানে। অতিথিদের বিভিন্ন রঙের কয়েক প্রকার কফি পরিবেশন করা জর্দানি সংস্কৃতির অংশ। রোযার মাসে মসজিদে ইফতারের সাধারণ আয়োজনেও থাকে গরম কফি।
সৌভাগ্যের প্রতীক চাঁদ দেখা:
শুধু খাদ্য-খাবারের ঐতিহ্য নয়, ইবাদত-বন্দেগি, দোয়া-যিকির এবং দান-আতিথেয়তায়ও আছে জর্দানবাসীর ঐতিহ্য। আনন্দ-উল্লাসে রোযার মাসকে গ্রহণ করে তারা। রমাদ্বান শরীফের চাঁদ দেখতে পুরুষরা পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করে এবং নারীরা বাড়ির ছাদে। রমাদ্বান শরীফের চাঁদ প্রথম দেখতে পারাকে তারা সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করে। এমনকি যে ব্যক্তি প্রথমে চাঁদ দেখতে পায়, তার নাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। রোযার মাসে আম্মানবাসী প্রচুর দান করে। বিশেষত তারা খেজুরসহ অন্যান্য ইফতারসামগ্রী দরিদ্রের মাঝে বিতরণ করে।
বিশেষ আয়োজনে রোযার মাসকে বরণ:
শা’বান মাসের শেষ দিক থেকেই আমলের প্রস্তুতি নেয় সবাই। তাহাজ্জুদের সময় মসজিদ খুলে দেওয়া হয়। জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। জর্দানের শতভাগ পুরুষ তারাবীহ জামাতে অংশগ্রহণ করে। জর্দানে একই মহল্লায় ভিন্ন ভিন্ন মাযহাবের একাধিক মসজিদ আছে। প্রত্যেক মসজিদের ইমাম নিজ মাযহাব অনুযায়ী তারাবীহ নামায আদায় করেন। প্রত্যেকেই অন্যের মতাদর্শকে সহনশীলতার সঙ্গে গ্রহণ করে। প্রতিটি মসজিদে ফজর ও আসরের পর কুরআন শরীফের দর্স হয়। এ ছাড়া মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় হিফজুল কুরআন, হিফজুল হাদীছ, হামদ-নাত ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা।
খেজুর ও কফি দিয়ে ইফতার:
প্রতিটি মসজিদেই ইফতারের আয়োজন করা আম্মানের সংস্কৃতির অন্যতম দিক। প্রতিটি বাড়িতে মসজিদের জন্য দানবাক্স থাকে। একজন ব্যবস্থাপক সে অর্থ সংগ্রহ করেন। মসজিদে উন্মুক্ত ইফতারের আয়োজন করেন। জর্দানবাসী খেজুর ও কফি দিয়ে ইফতার করে। রাতের খাবারে তারা আম্মানি রুটি, গোশত এবং মাছ গ্রহণ করে। তারাবীহর পর তারা পুনরায় খেজুর ও কফি খায়। এ সময় মসজিদেও মুসল্লিদের জন্য খেজুর ও কফির ব্যবস্থা করা হয়।
আযানের সঙ্গে সমস্বরে ঘোষণা:
রোযার মাসে জর্দানিদের জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক থাকে। সকালবেলা উঠে কাজে যায়। বিকেলবেলা ফেরে। আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়টা তারা ইবাদত-বন্দেগী ও দোয়ার জন্য অবসর রাখে। ইফতারের সময়টা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করে শিশুরা। মাগরিবের আযান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমস্বরে স্থানীয় কিছু ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকে।
যেমন-‘উজুনুন! উজুনুন! ওয়া লুবুন! ওয়া লুবুন!’ অর্থাৎ “আযান হয়েছে হে উপত্যকাবাসী! তোমরা দুধ গ্রহণ করো। ইফতার করো।” এরপর জর্দানবাসী ইফতার শুরু করে। আছরের পর থেকে শুরু হয় প্রতিবেশীদের মাঝে ইফতার বিতরণ। সবাই নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিবেশীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করে। অনেকেই ঘরে তৈরি ইফতার মসজিদে পাঠিয়ে দেন সবার জন্য।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের চোখে জর্ডানের রোযাদারদের ইফতার
১৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১ টাকার ইফতারির দোকান!
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঐতিহাসিক সুরম্য সুরা মসজিদ
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইফতারে মজাদার হালিমের ঝটপট তৈরী প্রণালী
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শনি গ্রহের নতুন ১২৮টি চাঁদ আবিষ্কার!
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আমেরিকার ২১ বিলিয়ন ডলারের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ কানাডার
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইফতারে রাখুন পুষ্টিকর বাঙ্গির শরবত
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
টানা ৯৬ বছর ধরে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী পবিত্র কুরআন শরীফ তেলাওয়াত চলছে টাঙ্গাইলের যে মসজিদে!
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে রং বদলাতে পারে যে শিয়াল
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রতিদিন ইফতারে তরমুজ খাওয়ার যত উপকার
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কাচারি ঘরের ইতিকথা
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বল্পতম রোযার দেশ: যেসব দেশে রোযা রাখার সময়কাল কম
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)