পবিত্র হজ্জ ও পবিত্র উমরা সম্পর্কে-
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৯)
, ২৩ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
সমষ্টিগতভাবে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُوْنَ لِيَنْفِرُوْا كَافَّةً
সমষ্টিগতভাবে কোন কাজ মু’মিন উনাদের জন্য ফরযে আইন না। সেটা হচ্ছে ফরযে কিফায়া। সে হিসাবে চাঁদের ইলম অর্জন করা ফরযে কিফায়া। এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা পবিত্র হজ্জ করবে অথবা অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগী করবে, রোযা রাখবে, পবিত্র কুরবানী করবে তাদের জন্য ইলম অর্জন করতে হবে চাঁদের বিষয়। মনে রাখতে হবে। পবিত্র হজ্জ জীবনে একবার আদায় করা ফরয করা হয়েছে। আমাদের হানাফী মাযহাবে উমরাহ হচ্ছে সুন্নত। মালেকী ও শাফেয়ী মাযহাবে উনারা বলেছেন, উমরাহ করাটা হচ্ছে ফরয। জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا اَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَيْكُمُ الْـحَجَّ فَقَامَ الأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالَ اَفِيْ كُلَّ عَامٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَسَكَتَ حَتّٰى قَالَـهَا ثَلَاثًا قَالَ لَوْ قُلْتُهَا نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَلَوْ وَجَبَتْ لَـمْ تَعْمَلُوْا بِهَا، اَوْ لَـمْ تَسْتَطِيْعُوْا اَنْ تَعْمَلُوْا بِـهَا، اَلْـحَجُّ مَرَّةً، فَمَنْ زَادَ فَتَطَوُّعٌ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের প্রতি পবিত্র খুৎবা মুবারক প্রদান করে ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا اَيُّهَا النَّاسُ
হে মানুষেরা! তোমরা জেনে রাখ,
إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَيْكُمُ الْـحَجَّ
মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের জন্য হজ্জ ফরয করেছেন।
فَقَامَ الْأَقْرَعُ بْنُ حَابِسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالَ
একজন বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আক্বরা’ ইবনে হাবিস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন-
أَفِـيْ كُلِّ عَامٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟
ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! প্রতি বৎসরে কি হজ্জ করা ফরয? তিনি একে একে তিনবার বললেন।
فَسَكَتَ حَتّٰى قَالَـهَا ثَلَاثًا
তিনি তিনবার বললেন। প্রতিবারে চুপ থাকলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি। যখন তিনি থামলেন তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন-
قَالَ لَوْ قُلْتُهَا نَعَمْ لَوَجَبَتْ وَلَوْ وَجَبَتْ لَـمْ تَعْمَلُوْا بِـهَا وَلَـمْ تَسْتَطِيْعُوْا وَالْـحَجُّ مَرَّةٌ، فَمَنْ زَادَ فَتَطَوُّعٌ.
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আমি যদি হ্যাঁ বলতাম তাহলে প্রতি বৎসর হজ্জ ফরয হয়ে যেত। সেটা উম্মতের জন্য কখনও পালন করা সম্ভব হতো না। তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতো। পবিত্র হজ্জ হচ্ছে জীবনে একবার। ইচ্ছা করলে যে কেউ নফলও করতে পারে।
হজ্জ জীবনে একবার করা ফরয। অতিরিক্তও করতে পারে। এখন জানার বিষয় পবিত্র হজ্জ ফরয হয়েছে কবে? ৯ম হিজরীতে পবিত্র হজ্জ ফরয হয়েছে। তবে ৮ম হিজরীতেও হযরত আত্বীফ ইবনে আসিফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ যখন বিজয় করলেন, আসার সময় উনাকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দায়িত্বে দিয়ে এসেছিলেন, অনুমতি মুবারক দিয়েছিলেন। ৯ম হিজরীতে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে আমীরুল হজ্জ করে পাঠিয়েছিলেন। এবং পরবর্তীতে কিছু নতুন হুকুম সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে দিয়েও পাঠিয়েছিলেন। এবং ১০ম হিজরীতে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই পবিত্র হজ্জ মুবারক করেন। সেটা সম্মানিত বিদায় হজ্জ নামে মাশহূর। সুবহানাল্লাহ! এখন তিনি পবিত্র হজ্জ মুবারক করেছেন একবার। পবিত্র উমরাহ মুবারক করেছেন চারবার। যেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِعْتَمَرَ اَرْبَعَ عُمَرٍ كُلُّهُنَّ فِيْ ذِي الْقَعْدَةِ إِلَّا الَّتِـيْ مَعَ حَجَّتِهٖ عُمْرَةً مِّنَ الْـحُدَيْبِيَةِ أَوْ زَمَنِ الْـحُدَيْبِيَةِ فِيْ ذِي الْقَعْدَةِ وَعُمْرَةً مِّنَ الْعَامِ الْمُقْبِلِ فِيْ ذِي الْقَعْدَةِ وَعُمْرَةً مِّنْ جِعْرَانَةَ حَيْثُ قَسَمَ غَنَائِمَ حُنَيْنٍ فِيْ ذِي الْقَعْدَةِ وَعُمْرَةً مَّعَ حَجَّتِهٖ.
হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উমরাহ করেছেন চারবার। প্রথম করেছেন হুদাইবিয়া সন্ধি সেই বৎসর। এরপর করেছেন উমরাতুল কা¡যা ৭ম হিজরীতে। তৃতীয়বার করেছেন পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করা হলো সেই বৎসর। এই তিনবারই করেছেন যিলক্বদ শরীফ মাসে। এবং চতুর্থবার যেটা করেছেন সেটা হচ্ছে বিদায় হজ্জ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাসে। মোট চারবার তিনি উমরাহ মুবারক করেছেন। একবার পবিত্র হজ্জ করেছেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত মুসলমান উনাদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৩৬)
০৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশবাসীর জন্য যা আবশ্যিকভাবে করণীয়
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৪৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৬১)
০৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং সমর্থন করেছে, তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক (৫)
০৩ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)