স্থাপত্য-নিদর্শন
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৫)
, ২৮ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) স্থাপত্য নিদর্শন
আমিরুল-মুজাহিদীন বা মুসলিম সেনাবাহিনী প্রধান সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ফুসতাত অঞ্চলের যে স্থানে উনার সেনা ছাউনী স্থাপন করেছিলেন ও মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন, সেটি ছিল আশপাশের তুলনায় একটু উঁচু ভূমি। মিশর জয়ের পর উনাকেই মিশরের গভর্ণর হিসেবে মনোনীত করা হয়। তখন হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এই মসজিদের পাশেই স্বীয় আবাসস্থল নির্মাণ করেন। মূলতঃ এই মসজিদই ছিল উনার প্রধান কার্যালয়। এ মসজিদেরই এক পাশে শায়িত আছেন উনার সুযোগ্য সন্তান হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
আমিরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার প্রজ্ঞাপূর্ণ নির্দেশনায় সেনাপতি হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মিশর জয় করেন ঐ সময় মিশরের রাজধানী ছিল বন্দর নগরী আলেকজান্দ্রিয়া, কিন্তু দূরদর্শী সেনাপতি ও সমর বিশারদ হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সমুদ্র তীরবর্তী হওয়ায় নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আলেকজান্দ্রিয়াকে রাজধানী হিসেবে উপযুক্ত মনে করলেন না। বরং নীলনদের তীরবর্তী কায়রোকে তিনি রাজধানী হিসেবে অনেক বেশী নিরাপদ মনে করলেন এবং মদীনাতুল-ফুসতাতে মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে মিশরের নতুন রাজধানী কায়রোর গোড়াপত্তন করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে নববী শরীফ নির্মাণের মাধ্যমে পবিত্র মদীনা শরীফকে ইসলামী দুনিয়ার চিরস্থায়ী রাজধানীর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার অনুকরণে মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে কায়রোকে মিশরের নতুন রাজধানী ঘোষণা করেন। যা আজও মিশরের রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
১৩০৩ খৃ: মিশরের আমীর বুরহান উদ্দিন ইবরাহীম আল মহলী তার ব্যক্তিগত অর্থে এই ঐতিহাসিক মসজিদ পুনঃনির্মাণ করেন। কেননা ঐ সময় কায়রোতে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৭৯৬ খৃ: মামলুক সুলতান মুরাদ জরাজীর্ণ মসজিদ ভেঙ্গে তদস্থলে নতুন মসজিদ নির্মাণ করেন।
২০ শতকের মাঝামাঝি সুলতান মুহম্মদ আলী তার শাসনামলে মসজিদে আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পুনঃনির্মাণ করেন এরপর সর্বশেষ ১৯৮০ খৃ: ও এই মসজিদের আংশিক সংস্কার করা হয়। বর্তমানে মসজিদ আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর দক্ষিণের অবকাঠামোটিই সবচেয়ে প্রাচীন নির্মাণ হিসেবে অক্ষুন্ন আছে। (সমাপ্ত)
-মুহম্মদ নাঈম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৭)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হাজীগঞ্জ দুর্গ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৬)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুনামগঞ্জে কালের সাক্ষী শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী পাগলা বড় মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৫০০ বছরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাঘা শাহী মসজিদ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৫)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০৩)
২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০২)
২৪ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
কায়রোর ঐতিহাসিক আল আযহার জামে মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব ০১)
১৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৪০০ বছরের আলোচিত প্রাচীন স্থাপত্য তেবাড়িয়া জামে মসজিদ
১২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)