ছহিবু সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ
মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র হজ্জ এবং পবিত্র উমরাহ উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০৭ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এটা হচ্ছে একটা ফযীলত এখানে বলা হয়েছে। আরেক পবিত্র হাদীছ শরীফে বলা হয়, যে পবিত্র হাদীছ শরীফ হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। এটা একটা লম্বা বড় হাদীছ শরীফ।
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ يَوْمُ عَرَفَةَ إِنَّ اللهَ يَـنْزِلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْـيَا فَـيُـبَاهِيْ بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ فَـيَـقُوْلُ: انْظُرُوْا إِلٰى عِبَادِيْ أَتَـوْنِي شُعْثًا غُبْـرًا ضَاجِّيْنَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيْقٍ أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ فَـيَـقُوْلُ الْمَلَائِكَةُ: يَا رَبِّ فُلَانٌ كَانَ يُـرَهَّقُ وَفُلَانٌ وَفُلَانَةُ قَالَ: يَـقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: فَمَا مِنْ يَـوْمٍ أَكْثَـرَ عَتِيْـقًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَـوْمِ عَرَفَةَ سُبْحَانَ اللهِ
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন কি বলেন?
إِذَا كَانَ يَـوْمُ عَرَفَةَ
যখন আরাফার দিন হয়, তখন কি হয়?
إِنَّ اللهَ يَـنْزِلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْـيَا
আরাফার দিন স্বয়ং যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীর আকাশে এসে থাকেন। অর্থাৎ তিনি উনার রহমতে খাছ নাযিল করেন। সুবহানাল্লাহ! যেটা আমরা সাধারণত জানি, পবিত্র শবে বরাত, শবে ক্বদর দোয়া কবুলের যে রাত্রগুলি এই রাত্রগুলিতে মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীর আকাশে এসে থাকেন। অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ঠিক তদ্রুপ বলা হচ্ছে আরাফার দিন। উকূফে আরাফাটা হচ্ছে ৯ তারিখ সূর্য ঢলার পর থেকে ১০ তারিখ ছুবহে ছাদিক পর্যন্ত সময়। এর মধ্যে হাজী সাহেব যারা হজ্জ করবে তাদের অবশ্যই আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকতে হবে। এই সময়টার জন্য যেটা বলা হচ্ছে পবিত্র হাদীছ শরীফে-
إِنَّ اللهَ يَـنْزِلُ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْـيَا
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি পৃথিবীর আকাশে এসে থাকেন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন কি করেন
فَـيُـبَاهِي بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছে ফখর করতে থাকেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি কি ফখর করতে থাকেন?
فَـيَـقُوْلُ انْظُرُوْا إِلَى عِبَادِيْ
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, হে ফেরেশতারা! তোমরা লক্ষ্য করো। আমার বান্দাদের প্রতি তোমরা লক্ষ্য করোতো তারা হজ্জের ময়দানে কিভাবে এসেছে।
أَتَـوْنِي شُعْثًا غُبْـرًا ضَاجِّيْنَ
তারা ইহরাম বাধার কারণে, হজ্জে আসার কারণে তাদের চুলগুলি এলোমেলো, ধূলায় ধুসরিত হয়ে গেছে এবং তারা কান্না-কাটি রোনাজারি করতে করতে আসতেছে, অবস্থান করতেছে।
مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيْقٍ
সেই দূর-দূরান্ত থেকে, দেশ-বিদেশ থেকে। বড় বড় প্রশস্ত এবং সরু রাস্তা দিয়ে। যারা হাজী সাহেব হজ্জ করার জন্য এসে থাকেন দূর-দূরান্ত থেকে, রোনাজারি করতে করতে, আহাজারি করতে করতে এখানে পৌঁছেছে আরাফার ময়দানে। ইহরাম বাঁধার কারণে, হজ্জের কারণে তাদের চেহারা ধূলায় ধূসরিত হয়ে গেছে, চূলগুলি এলোমেলো হয়ে গেছে। মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব তিনি হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনাদের কাছে বান্দা-বান্দি উম্মতদের নিয়ে ফখর করেন।
এরপর মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই বলেন-
أُشْهِدُكُمْ
হে ফেরেশ্তারা! তোমরা সকলেই সাক্ষী থাকো। মহান আল্লাহ পাক তিনি ঘোষণা দিচ্ছেন, হে ফেরেশ্তারা! তোমরা সকলেই সাক্ষী থাকো,
أَنِّيْ قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ
আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে ক্ষমা করে দিলাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, তোমরা সাক্ষী থাকো, আমি অবশ্যই ক্ষমা করে দিলাম এদের সবাইকে।
فَـيَـقُوْلُ الْمَلَائِكَةُ
তখন হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম বলেন,
يَا رَبِّ فُلَانٌ كَانَ يُـرَهَّقُ وَفُلَانٌ وَفُلَانَةُ
আয় মহান আল্লাহ পাক! আরাফার ময়দানে অমুক অমুক বান্দা তারাতো অনেক বড় বড় গুনাহখাতা করেছিলো। বারে ইলাহী! আপনার বান্দা-বান্দিদের মধ্যে আরাফার ময়দানে অনেকে উপস্থিত হয়েছে যারা অনেক বড় বড় গুনাহখাতা করেছে। অমুক অমুক বান্দা। ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা সেই বান্দাদেরকে লক্ষ্য করে বলেন যে, অমুক অমুক বান্দা যারা উপস্থিত হয়েছে এরাতো অনেক বড় বড় গুনাহখাতা করেছে বারে ইলাহী! এদেরকে কি ক্ষমা করে দেয়া হবে?
قَالَ: يَـقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: قَدْ غَفَرْتُ لَهُمْ
সেটা শুনার পরও যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, অবশ্যই আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! অবশ্যই আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ!
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ কথা বলে স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَمَا مِنْ يَـوْمٍ أَكْثَـرَ عَتِيْـقًا مِنَ النَّارِ مِنْ يَّـوْمِ عَرَفَةَ
আরাফার দিন যত সংখ্যক বান্দা-বান্দিকে ক্ষমা করা হয় অন্য কোন দিন এতো সংখ্যক এবং এতো বড় বড় গুনাহ ক্ষমা কখনও করা হয় না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই যারা হজ্জ করতে যাবে হজ্জে মাবরূর যদি সত্যিই নছীব হয়েই থাকে তাহলে তাদের জিন্দেগীর সমস্ত গুনাহখাতাগুলো ক্ষমা করে মা’ছূম নিস্পাপ করে দেন। সুবহানাল্লাহ! এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশ্তা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বললেন,
فَـيُـبَاهِيْ بِهِمُ الْمَلَائِكَةَ
হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিকট ফখর করলেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র মসজিদ নির্মাণের ফাযায়িল-ফযীলত
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)