ছহিবু সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ
মহাপবিত্র কুরআন শরীফ এবং মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে- পবিত্র হজ্জ এবং পবিত্র উমরাহ উনাদের ফাযায়িল-ফযীলত, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে
, ২৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৭ আউওয়াল, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ জুন, ২০২৩ খ্রি:, ০১ আষাঢ়, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যেটা অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হচ্ছে-
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ وَّجَبَ عَلَيْهِ الْـحَجُّ وَلَـمْ يَـحُجَّ فَلَا اَدْرِىْ علَيْهِ يَـمُوْتُ عَلٰى غَيْرِ مِلَّةِ الْإِسْلَامِ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যার প্রতি হজ্জ ফরয হলো, ওয়াজিব হলো
وَلَـمْ يَـحُجَّ
সে হজ্জ পালন করলো না
فَلَا اَدْرِىْ علَيْهِ يَـمُوْتُ عَلٰى غَيْرِ مِلَّةِ الْإِسْلَامِ
আমি জানি না অর্থাৎ সে ইসলামের বাইরে, বেদ্বীন-বদদ্বীন হয়ে সে মারা যাবে। নাউযুুবিল্লাহ! পবিত্র হজ্জ ফরয হওয়ার পরও যে পালন করলো না অর্থাৎ তার সার্বিক সুবিধা থাকলো সেখানে তার বেপর্দা হতে হচ্ছে না, হারাম ছবি তুলতে হচ্ছে না, অন্যান্য শরীয়ত বিরোধী কোন কাজ তাকে করতে হচ্ছে না, সব ব্যবস্থা যখন থাকলো এরপরও কেউ যদি হজ্জ ফরয হওয়ার পর পবিত্র হজ্জ করলো না তাহলে সে মুসলমান হিসেবে ইন্তেকাল করবে না। বরং সে বেদ্বীন-বদদ্বীন হিসাবে মারা যাবে। নাউযুবিল্লাহ! এবং সেটা আরো শক্ত করে বলা হয়েছে-
مَنْ اَيْسَرَ وَلَـمْ يَـحُجُّ فَمَاتَ عَلٰى ذٰلِكَ فَـهُوَ فِـى النَّارِ ذَاتَ الْوَشْطِ وَالظَّلَمِ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যার জন্য হজ্জ করা সহজ হয়ে গেল, ওয়াজিব ফরয হয়ে গেল।
وَلَـمْ يَـحُجَّ
সে হজ্জ পালন করলো না।
فَمَاتَ عَلٰى ذٰلِكَ
এ অবস্থায় তার ইন্তেকাল হলো, সে মারা গেল
فَـهُوَ فِـى النَّارِ
সে জাহান্নামে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
ذَاتَ الْوَشْطِ وَالظَّلَمِ
যেখানে কঠিন ভয় এবং যেখানে কঠিন অন্ধকার রয়েছে, আযাব-গযব রয়েছে। অর্থাৎ সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। নাউযুবিল্লাহ! কাজেই শক্ত করে বিষয়টা তাক্বীদ করা হয়েছে। হজ্জ ফরয হলেই করতে হবে। কিন্তু ফরযের যে শর্ত শারায়েত সেটা পূরা হতে হবে। তা না হলে হজ্জতো ফরয হবে না এটাও ফিকির করতে হবে। যেমন বলা হচ্ছে বিশেষ করে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্য হজ্জ ফরয। প্রত্যেকের জন্য হজ্জ আলাদাভাবে আদায় করতে হবে।
عَنَ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِى اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
لَا يَـخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ
কখনও যেন কোন বেগানা পুরুষ কোন বেগানা মহিলার
সাথে নিরিবিলি একাকি না হয়। এরপরে
وَلَا تُسَافِرَنَّ اِمْرَأَةً إِلَّا وَمَعَهَا مَـحْرَمٌ فَـقَامَ رَجُلٌ فَـقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
কোন মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত ছফর না করে। কোন মহিলা যেন মাহরাম ছাড়া ছফর না করে। যখন এ মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ ইরশাদ মুবারক করেন যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
اَكْتُـبْتُ فِـيْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا
ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমিতো উমুক উমুক জিহাদে আমার নাম দিয়েছি। জিহাদ করার জন্য যাবো আমি বলেছি। লিখিয়েছি আমি সেটা।
وَخَرَجَتْ اِمْرَأَتِـيْ حَاجَّةً
এবং সেই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, উনার যিনি আহলিয়া তিনি হজ্জের জন্য বের হচ্ছেন। অর্থাৎ তিনি হজ্জ পালন করতে যাবেন।
فَـقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذْهَبْ فَحُجَّ مَعَ اِمْرَأَتِكَ
তিনি বললেন, হে ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাহলে আপনাকে আর জিহাদে যেতে হবে না। আপনি আপনার আহলিয়া উনার সাথে হজ্জে যান। যেহেতু মাহরাম ব্যতীত হজ্জ করা জায়েয হবে না। সেই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি জিহাদে না যেয়ে তিনি উনার যিনি আহলিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সাথে হজ্জ করতে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! এখন বিষয়টা কিন্তু ফিকির করতে হবে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যে বললেন,
وَلِلّٰهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَـيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيْلًا
এখানে আমভাবে বলা হয়েছে। যে বান্দা-বান্দি, উম্মতের জন্য হজ্জ ফরয করা হয়েছে মহান আল্লাহ পাক উনার রেজামন্দী-সন্তুষ্টির লক্ষ্যে। যাদের সামর্থ রয়েছে পথ এবং পাথেয় এর ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে কিন্তু পর্দার কথা বলা হয়নি, মাহরামের কথা এখানে বলা হয়নি। আবার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বলা হচ্ছে-
فَمَنْ فَـرَضَ فِيْهِنَّ الْـحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوْقَ وَلَا جِدَالَ فِي الْـحَجِّ
যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তারা যেন হজ্জে যেয়ে অশ্লীল-অশালীন, বেপর্দা-বেহায়ামূলক কোন কাজ না করে, নাফরমানীমূলক কোন কাজ না করে এবং ঝগড়া-ঝাটি, মারা-মারি, কাটা-কাটি যেন না করে। এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিষেধ করে দিলেন। এখানে কিন্তু সরাসরি পর্দার কথা বলা হয়নি। মাহরামের কথাও বলা হয়নি এখানে। অথবা অন্যান্য যে বিষয়গুলি হারাম সেগুলি স্পষ্ট বলা হয় নাই। কিন্তু বিষয়টা বলে দেয়া হয়েছে। বেপর্দা-বেহায়া, অশ্লীল-অশালীন কাজ যেন না করে তারমধ্যে এটা অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল এবং নাফরমানী মূলক যেন কোন কাজ না করে। নাফরমানীমূলক যত কাজ রয়েছে সেটা ছবি তোলা হোক আর তার সংশ্লিষ্ট যত কিছু হোক সবটাই এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল। এবং সেখানে কোন ঝগড়া-ঝাটি, মারামারি, কাটা-কাটি করা যাবে না। শালীনতার সহিত ভদ্রতার সাহিত ঈমানের সহিত তাক্বওয়ার সহিত সেখানে হজ্জ করতে হবে। সেটাই বলা হয়েছে,
وَمَا تَـفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ يَّـعْلَمْهُ اللهُ
তোমরা যা আমল করো মহান আল্লাহ পাক তিনি সেটা জানেন। তোমরা চুপিয়ে রাখতে পারবে না।
وَتَـزَوَّدُوْا فَإِنَّ خَيْـرَ الزَّادِ التَّـقْوٰى
তোমরা পাথেয় অর্জন করো। উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া। পরহেযগারী হচ্ছে উত্তম পাথেয়। এখন যে টাকা-পয়সা নিতে হবে, বাহন থাকতে হবে। হ্যাঁ এগুলিতো অবশ্যই। তবে উত্তম পাথেয় হচ্ছে তাক্বওয়া, পরহেযগারী। অর্থাৎ সমস্ত বেহায়া-বেপর্দায়ী, নাফরমানীমূলক যত কাজ, শরীয়ত বিরোধী যত কাজ, মহাপবিত্র কুরআন শরীফ মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার খিলাফ যত কাজ রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ-নির্দেশের বাইরে যত কাজ রয়েছে সেগুলো একটাও করা যাবে না। তোমরা তাক্বওয়া অবলম্বন করো।
وَاتَّـقُوْنِ يَاۤ أُولِي الْأَلْبَابِ
মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, হে জ্ঞানী ব্যক্তিরা! তোমরা যিনি খ¦লিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো তোমাদের জন্য কামিয়াবী রয়েছে।
(অসমাপ্ত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১)
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র মসজিদ নির্মাণের ফাযায়িল-ফযীলত
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১)
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
একখানা পবিত্র হাদীছ শরীফ ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)